চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে তাবাসসুমকে ঈদের পর গামছা পরিয়ে বিদায় করার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রাব্বুল হোসেনের বিরুদ্ধে।
সোমবার (২০ জুন) বিকালে উপজেলা যুবলীগের শান্তি সমাবেশে এই হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
জানা যায়, সোমবার বিকাল ৫টার দিকে ভোলাহাট মেডিকেল মোড়ে উপজেলা যুবলীগের শান্তি সমাবেশে উপজেলা চেয়ারম্যান বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেন, আগামী ঈদের পরে ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে তাবাসসুমকে গামছা পরিয়ে বিদায় করা হবে। ২ মিনিট ৪৩ সেকেন্ডের প্রকাশিত ভিডিওটিতে পুরো সময়জুড়ে ইউএনওকে নিয়ে বিষোদাগার করেন তিনি।
উপজেলা চেয়ারম্যান তার বক্তব্যে বলেন, আমাকে বরখাস্ত করার জন্য ষড়যন্ত্র চলছে। আমার কর্মচারী, চালকের ওভারটাইম বেতন দেওয়া হচ্ছে না। এখানে দাঁতভাঙা জবাব কেউ দেখেনি, সবাই চুপচাপ আছে। ইনশাআল্লাহ ঈদের পরে সেই রূপ দেখতে পাবে। আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যানকে সরানোর পাঁয়তারা করছো। ঈদের পরে তোমার চৌদ্দগুষ্টির দাঁত ভেঙে দেওয়া হবে।
এ সময় তিনি আওয়ামী লীগের নেতাদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা এই ইউএনওকে কন্ট্রোল করুন, নয়তো বিদায় করুন। ঈদের পরে জামায়াত-বিএনপির আন্দোলন তীব্রতর হলে এই ইউএনও ভোলাহাটের মাটিতে থাকলে আমাদের আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের অর্ধেক নেতা-কর্মীকে কারাগারে থাকতে হবে।
উপজেলা চেয়ারম্যান আরও বলেন, সামনে ২৫ তারিখের মধ্যে কোনো স্টেপ না নেওয়া হলে যতগুলো প্রকল্পের কাজ চলছে, আমিও কোনো চেয়ারম্যান-মেম্বারের প্রকল্পে স্বাক্ষর করব না।
ভোলাহাট উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রাব্বুল হোসেন বলেন, উম্মে তাবাসসুম ইউএনও হিসেবে যোগদানের পর থেকেই স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়মসহ উৎকোচ আদায়ের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন। বিভিন্ন জাতীয় দিবস পালনে কমিটি থাকলেও তিনি তার তোয়াক্কা না করেই নিজের অফিসারদের দিয়ে বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি করে নিম্নমানের পুরস্কার দিয়ে যাচ্ছেন।
এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন প্রকল্প তার অফিসারদের দিয়ে করিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করার ফলে প্রকৃত উপকারভোগীরা তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। যেকোনো বিষয়ে ইউএনও`র স্বেচ্ছাচারিতার কারণে ক্ষোভে এসব কথা বলেছি।
উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রেজাউল করিম বাবু বলেন, চেয়ারম্যান ইউএনওকে হুমকি দেবে বিষয়টি কারও জানা ছিল না। তবে প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়া ঠিক হয়নি। এ নিয়ে আমরা বিব্রত।
ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে তাবাসসুমের বক্তব্য জানতে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আহমেদ মাহবুব-উল-ইসলাম বলেন, চেয়ারম্যানের বক্তব্য দেওয়ার ভিডিওটি আমাদের নজরে এসেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগরে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. জিয়াউর রহমান বলেন, বক্তব্যটি তিনি শুনেননি। একজন উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ইউএনওকে হুমকি দেওয়া দল সমর্থন করে না। দ্রুত দলীয় ফোরামে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।