দীর্ঘ প্রায় ৫ ঘণ্টা অবরোধের পর অবশেষে রেললাইন থেকে সরে গেলেন চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে আন্দোলনরত রেলওয়ের অস্থায়ী শ্রমিকরা। রেল ভবনে দাবির বিষয়ে কর্মকর্তাদের আলোচনার আশ্বাসে তারা অবরোধ তুলে নেন।
রোববার (১৬ জুলাই) দুপুর আড়াইটার দিকে কারওয়ান বাজার সংলগ্ন এফডিসি রেল ক্রসিং থেকে অবরোধ তুলে রেল ভবনের উদ্দেশ্যে পায়ে হেঁটে রওনা দেন আন্দোলনকারীরা।
বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের জিএম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমাদের সিদ্ধান্ত ছিল জুন মাসের পরে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে শ্রমিক নিয়োগ করব। সেই আউটসোর্সিং কোম্পানির জন্য শর্ত দিয়েছি আমরা অভিজ্ঞ লোক চাই। আপনারা যারা এখানে আন্দোলন করছেন তাদেরকে আমরা অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট দেব এবং আউটসোর্সিং কোম্পানিকে বলব যেন আপনাদেরকে তারা নিয়োগ দেয়। আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে রেলওয়েতে নিয়োগ দেব। আমরা আশা করব আপনারা ট্রেন আটকে মানুষকে হয়রানি করছেন সেখান থেকে সরে আসবেন। আমরা আইনের ভেতর থেকে আপনাদের সর্বোত্তম সহযোগিতা করব।
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল জোনের এডিসি হাফিজ আল ফারুক বলেন, আপনাদের (আন্দোলনকারী) সঙ্গে কথা বলতে বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের জিএম এখানে এসেছেন। উনি বলেছেন রেলের আউটসোর্সিং নিয়োগের সময় অভিজ্ঞদের প্রাধান্য দেওয়া হবে। পাশাপাশি আগে যারা অস্থায়ীভাবে চাকরি করতো তাদেরও অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। এটি নিয়মতান্ত্রিকভাবে তাদের অফিসে বসে করতে হবে। এটা রেললাইনে বসে করার জিনিস না।
এডিসি বলেন, আজকে আপনারা যে সকাল থেকে রেললাইনটা বন্ধ করে রেখেছেন, এখানে একজন মুমুর্ষ রোগী থাকতে পারে, একজন চাকরিজীবী থাকতে পারে। মানুষের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। আমরা একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আপনাদের বসতে দিব। এরপর আমাদের যেকোনোভাবেই হোক আপনাদের সরাতে হবে। তাই এখানে আন্দোলন না করে, আপনারা আলোচনা করুন।
এর আগে, সকাল ১০টার দিকে বিএফডিসি রেলগেট এলাকায় রেললাইনের ওপর অবস্থান নেন রেলওয়ের অস্থায়ী শ্রমিকরা। এ সময় তিতাস কমিউটার ট্রেন আটকে দেন তারা। দীর্ঘ ৪ ঘণ্টায়ও আন্দোরনকারীরা না সরলে ট্রেনটি কমলাপুর স্টেশনে ফেরত যেতে বাধ্য হয়।
মূলত বাংলাদেশে রেলেওয়ের নিয়োগ পাওয়া অস্থায়ী শ্রমিকদের (টিএলআর) চাকরি ফেরত দেওয়া, স্থায়ীকরণ, আউটসোর্সিং প্রথা বাতিল এবং নিয়োগবিধি ২০২০ সংশোধন করে আগের মতো চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের যোগ্যতা ৮ম শ্রেণি পাস বহাল রাখার দাবিতে ট্রেন আটকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন অস্থায়ী শ্রমিকরা।