কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে যৌতুকের দাবিতে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে উঠেছে স্বামী ও তার শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। গত মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) সকালে গৃহবধূকে মারধর ও শনিবার (১২ আগস্ট) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
অভিযুক্ত স্বামী আশেক আলী একই ইউনিয়নের পশ্চিম ধনিরাম গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে। নিহত গৃহবধূর নাম মৌসুমী খাতুন (২৫)। তিনি উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পূর্ব ধনিরাম গ্রামের মনছুর আলীর মেয়ে।
এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর চাচা নাসির আলী রোববার বিকালে বাদী হয়ে স্বামী শ্বশুর ও শ্বাশুড়িকে আসামি করে ফুলবাড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
জানা গেছে, পাঁচ বছর আগে একই ইউনিয়নের পশ্চিম ধনিরাম গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলে আশেক আলীর (২৮) সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে হয় মৌসুমী খাতুনের। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে মনছুর আলী বিয়ের সময় জামাইকে এক লক্ষ টাকা দেন। কিন্তু জামাই আশেক আলী তার বাবা মায়ের পরামর্শে বাবার বাড়ি থেকে আরও টাকা আনার জন্য মৌসুমীর ওপর চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। মৌসুমী এতে অস্বীকৃতি জানালে তার ওপর চলে অমানষিক নির্যাতন। গত ৮ আগষ্ট সকালে আশেক আলী মৌসুমীকে বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য চাপ দিলে মৌসুমী অস্বীকৃতি জানায়। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে আশেক আলী মৌসুমীকে বেদম মারধর করে।
খবর পেয়ে মৌসুমীর নানা জহুরুল ইসলাম, নানার ছোট ভাই জাহেদুল ইসলাম ও চাচা নাসির আলী গুরুত্বর আহত অবস্থায় মৌসুমীকে উদ্ধার করে ফুলবাড়ী হাসপাতালে ভর্তি করেন। ফুলবাড়ী হাসপাতালে চিকিৎসার পর ১১ আগস্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তাকে লালমনিরহাট জেলা সদরে নেওয়া হয়। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ১২ আগস্ট বিকাল সাড়ে ৪টায় আবারও তাকে ফুলবাড়ী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দিবাগত রাত ২টার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন মৌসুমী খাতুন।
ফুলবাড়ী থানার ওসি প্রাণকৃষ্ণ দেবনাথ জানান, এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর চাচা নাসির আলী বাদী হয়ে স্বামী আশেক আলীসহ তিন জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বিকালে কুড়িগ্রাম মর্গে পাঠানো হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।