শুক্রবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

রাজধানীতে অপহৃত শিশুর লাশ মিললো চট্টগ্রামে, পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ

আপডেট : ২৫ আগস্ট ২০২৩, ২১:৪৭

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে নুরুন নবী নামে অপহৃত এক স্কুলছাত্রের লাশ চট্টগ্রামে উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (২৫ আগস্ট) সকালে চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানার হিলভিউ আবাসিক এলাকার ১০ নম্বর সড়ক থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

এর আগে সোমবার (২১ আগস্ট) বিকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর ধলপুরে বাড়ির সামনে থেকে নুরুন নবী অপহৃত হয়। এ ঘটনার পর অপহৃত স্কুলছাত্রের বাবা গোলাম রসুলের মোবাইলে  ফোন করে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পরে এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে গোলাম রসুল যাত্রাবাড়ী থানায় একটি জিডি করেন। এরপর অপহরণকারীদের দেওয়া একটি বিকাশ নম্বরে মুক্তিপণের ৫০ হাজার টাকার মধ্যে ৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়।

নিহতের বাবা গোলাম রসুলের অভিযোগ, পুলিশ তার সন্তানকে উদ্ধারের ব্যাপারে কোনো সহযোগিতা করেনি। মুক্তিপণ নিয়ে অপহরণকারীদের সঙ্গে তার মোবাইল ফোনে কথোপকথন হয়েছিল। হোয়াটসঅ্যাপে ম্যাসেজ আদান-প্রদান হয়েছিল। সেসব তথ্য পুলিশকে জানালেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি বিকাশে ৫ হাজার টাকা দেওয়ার তথ্যও পুলিশকে জানিয়েছিলেন। পুলিশ বিকাশের ওই নম্বর কোনো যাচাই-বাছাই করেনি।

এদিকে পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আক্তারুজ্জামান বলেন, শুক্রবার সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানার হিলভিউ আবাসিক এলাকার ১০ নম্বর সড়ক থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। সড়কের পাশে একটি বন্ধ গ্যারেজের সামনে লাশটি পড়ে ছিল। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে লাশটি উদ্ধার করা হয়। লাশের কয়েক গজ দূরে রক্তমাখা ছুরি পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে, অপহরণকারীদের সঙ্গে মুক্তিপণের টাকা নিয়ে কিশোরের পরিবারের বনিবনা না হওয়ায় তাকে হত্যা করা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় নিহতের ভাই চট্টগ্রাম এসে লাশ শনাক্ত করলে তার কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

যাত্রাবাড়ীর ৪৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বলেন, নুরুন নবীর বাবা গোলাম রসুল পেশায় বাবুর্চি। সোমবার বিকাল থেকে তার সন্তানকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার দুপুরের পর চারটি পৃথক নম্বর থেকে তার মোবাইল ফোনে কল আসে। এরপর অজ্ঞাত ব্যক্তি হোয়াটসআপে ম্যাসেজ আদান প্রদান করে। হোয়াটসঅ্যাপে তার ছেলের ছবিও পাঠানো হয়। সেখানে বলা হয়, সীমান্ত এলাকায় তার ছেলেসহ ৫ জনকে তারা আটকে রেখেছে। ওদেরকে সীমান্ত পার করে ভারতে পাঠানো হবে। তার ছেলেকে পেতে হলে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। এ ঘটনার পর মঙ্গলবার রাতে গোলাম রসুল যাত্রাবাড়ী থানায় একটি জিডি করেন।

যাত্রাবাড়ী থানার ওসি মফিজুল ইসলাম বলেন, অপহৃত নুরুন নবীর লাশ চট্টগ্রামে উদ্ধার হয়েছে। তবে নিখোঁজের পর জিডি হওয়ার পর পুলিশ গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি তদন্ত করছিল। কিন্তু এরআগেই শিশুটিকে অপহরণকারীরা হত্যা করেছে। ধারণা করছি, অপহরণকারীরা ওই শিশুর বাড়ির আশেপাশের কেউ হবে। বিষয়টি তদন্ত করছি। 

ইত্তেফাক/এবি