কুমিল্লার বরুড়ায় চুরির অপবাদে আবদুল হান্নান নামে এক যুবককে গাছের সঙ্গে উল্টো করে ঝুলিয়ে নির্যাতনের ঘটনায় থানায় মামলা হওয়ার পর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও ইউপি মেম্বার জহিরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার (২৭ আগস্ট) আসামিকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
শনিবার (২৬ আগস্ট) উপজেলার ভাউকসার ইউনিয়নের চোত্তাপুকুরিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতিত আবদুল হান্নান ১২ জনকে অভিযুক্ত করে শনিবার (২৬ আগস্ট) গভীর রাতে মামলা করেন। পুলিশ রাতেই ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছে বরুড়া থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত দুজনের মধ্যে একজন হলেন ভাউকসার ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও চোত্তাপুকুরিয়া গ্রামের জহিরুল ইসলাম। তিনি বরুড়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য। অপরজন তার সহযোগী একই গ্রামের মৃত রজ্জব আলীর ছেলে নুরুল ইসলাম। রোববার (২৭ আগস্ট) দুপুরে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, চুরির অপবাদ দিয়ে চোত্তাপুকুরিয়া গ্রামের আবদুল জব্বারের ছেলে আবদুল হান্নানকে শনিবার সকালে গাছের সঙ্গে বেঁধে উল্টো করে ঝুলিয়ে নির্যাতনের ৫৯ সেকেন্ডের একটি একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। এদিন রাতে নির্যাতিত হান্নান বাদী হয়ে ৭ জনের নাম উল্লেখ করে ও ৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে বরুড়া থানায় মামলা দায়ের করেন।
ভাউকসার ইউপির চেয়ারম্যান আহমেদ জামান মাসুদ বলেন, এভাবে একজন জনপ্রতিনিধি আইন হাতে তুলে নিতে পারেন না। হান্নান চুরি করলে তিনি তাকে পুলিশে দিতে পারতেন। জহিরুল ইসলাম স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা। তিনি এই ইউনিয়ন পরিষদের টানা দুই বারের সদস্য।
বরুড়া থানার ওসি ফিরোজ হোসেন জানান, শনিবার রাতভর অভিযান পরিচালনা করে দুই আসামি ইউপি সদস্য জহিরুল ইসলাম ও তার সহযোগী নুরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। রোববার দুপুরে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, একটি চুরির ঘটনার বিচারের নামে আবদুল হান্নান নামের এক যুবককে দুই পা বেঁধে মাথা নিচের দিকে রেখে গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। রশি দিয়ে দুই পা বাঁধা ঝুলন্ত ওই যুবকের মাথার অংশ দোকানের সামনের একটি ড্রেনের ওপর মাটির সঙ্গে রয়েছে। তাকে প্রকাশ্যে লাঠি দিয়ে প্রহার করছেন ইউপি মেম্বার ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জহিরুল ইসলাম। এ সময় বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করলেও তাকে রক্ষায় কেউ এগিয়ে আসেনি।