বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

অপরিকল্পিক গাইডওয়াল: মানহীন কাজে দুদিনেই ধসে গেছে নতুন সড়ক

আপডেট : ৩০ আগস্ট ২০২৩, ২০:৫৪

অপরিকল্পিক গাইডওয়াল নির্মাণ ও মানহীন কাজে নতুন সড়ক ধসে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছ। পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার গহিনখালী লঞ্চঘাট সংলগ্ন সড়ক রক্ষায় নির্মিত গাইডওয়ালের মাঝ অংশ ধসে গেছে। হেলে পড়েছে বাকি অংশও। যেকোন সময় ভেঙে পড়ার শঙ্কা রয়েছে যতটুকু টিকে আছে তাও। এখন সড়কটি দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন ও পথচারীরা।  

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে উপজেলা বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় রাঙ্গাবালী ইউনিয়নের গহিনখালী রাস্তার বামপাশে ৭৫ মিটার গাইড ওয়াল নির্মাণের দরপত্র আহবান করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী। পরে কাজটি পায় উপজেলার মৌডুবির তাওহীদুর রহমানের মালিকানাধীন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ‘বাংলাটেক ইঞ্জিনিয়ার্স’। যার প্রাক্কলিত মূল্য ৭ লক্ষ ৮৬ হাজার ২০৫ টাকা। আর চুক্তিমূল্য ৭ লাখ ৪৬ হাজার ৮৯৪ টাকা।  

ছবি: ইত্তেফাক

পথচারী ও স্থানীয়দের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অপরিকল্পিত প্রকল্প ডিজাইন, তদারকিতে উদাসীনতা ও মানহীন কাজ হওয়ায় নির্মাণের পরপরই গাইডওয়াল ধসের এ ঘটনা ঘটে। সড়ক রক্ষায় নির্মিত গাইডওয়ালটির মাঝখান দিয়ে ভেঙে খালে পড়েছে। দু’পাশের বাকি অংশ পিলারসহ হেলে গেছে। যেকোন মুহূর্তে সেটুকুও খালে পড়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। যারফলে সড়কের ঝুঁকি থেকেই গেল। ধীরে ধীরে সড়কও ভেঙে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। কাগজ-কলমে কাজটি চলতি বছরের ১৫ মে শুরু হয় এবং শেষ হয় ১৫ জুন। তড়িঘড়ি করে কাজ শেষে পুরো বিল তুলে নেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। 

অভিযোগ রয়েছে, এলজিইডির কোন তদারকি ছাড়াই কাজটি করা হয়। তাই যেমন খুশি তেমন কাজ করেই উপজেলা প্রকৌশলীর মাধ্যমে বিলটি তুলে নেন ঠিকাদার। এছাড়া আরসিসি গাইডওয়াল না করে অপরিকল্পিতভাবে ইটের গাথুনির গাইডওয়াল করাকেই দুষছেন স্থানীয়রা। 

ছবি: ইত্তেফাক

গহিনখালী সড়কে চলাচলকারী পরিবহন চালকরা জানান, এই কাজটি যখন শুরু হয় তখনি আমরা মজবুত করে গাইডওয়াল তৈরি করতে বলছি। কিন্তু তারা তাদের মত করে কাজ করেছে। কিছুদিন যেতে না যেতেই এই অবস্থা হয়ে গেছে। 

ওই সড়কের মটরসাইকেল চালক মো. সাইদুল বলেন, এই গাইডওয়ালের কাজটা শেষ হওয়ার দুইদিন পরই ভাইঙ্গা গেছে। রাস্তাটি পাড় হওয়ার সময় আমরা আতঙ্কে থাকি। যাত্রী নামিয়ে রাস্তা পাড় হতে হয়। কাজটা ভালভাবে করলে আর এই সমস্যা হইতো না। সরকারী টাকাও পানিতে যেত না।      

কাজটির ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বাংলাটেক ইঞ্জিনিয়ার্সের স্বত্ত্বাধিকারী তাওহীদুর রহমান বলেন, ডিজাইন এবং প্রাক্কলন অনুযায়ী কাজ বাস্তবায়ন করেছি। কাজ বাস্তবায়নের সময় অফিসের তদারকী কর্মকর্তা উপস্থিত ছিল। কাজ শেষে জামানত কর্তন করে কাজের বিল উঠানো হয়েছে। আমরা যখন কাজ শেষ করছি, তখনো সব ঠিক ছিল। আবহাওয়া খারাপ বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে যদি ক্ষতি হয়, সেটার দায় কি ঠিকাদার নিবে?
 
এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মো. হাবিবুর রহমান জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। গাইডওয়াল করার সময় কিছু অংশে গাছ ফালাইছে। ওদিকে ড্রেজার দিয়ে বালু উঠানোয় রাস্তাও ভাঙছে। খালের পাড়ে গাইডওয়াল আমি দিতেই চাইনি প্রথম। এখন যারা কাজ করেছে, তাদেরকে ঠিক করে দিতে বলেছি। 

ইত্তেফাক/পিও