সোমবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

সুন্দরবনের দ্বার খুলছে কাল

আপডেট : ৩১ আগস্ট ২০২৩, ০২:০০

দীর্ঘ তিন মাস বন্ধের পরে আগামীকাল শুক্রবার থেকে খুলে যাবে সুন্দরবনের দ্বার। ১ সেপ্টেম্বর থেকে পুরোদমে শুরু হবে সুন্দরবনে মাছ ধরা ও পর্যটকদের আনাগোনা। এ লক্ষ্যে জেলে ও বনজীবীরা নৌকা ট্রলার নিয়ে সুন্দরবনে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে বসে আছেন। অন্যদিকে, নিষেধাজ্ঞায় বেকার জেলেদের খাদ্য সহায়তার জন্য মন্ত্রণালয়ে জেলেদের তালিকা পাঠানো হলেও এখনো কোনো বরাদ্দ আসেনি।

বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সুন্দরবনে মৎস্য ও বন্যপ্রাণীর প্রজনন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনের নদী খালে মাছ ধরা ও পর্যটকদের যাতায়াত নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বন বিভাগ। বনে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় বেকার হয়ে পড়েন হাজার হাজার জেলে ও পর্যটনের সঙ্গে জড়িত বনজীবীরা। শরণখোলার পানিরঘাট এলাকার জেলে রুস্তম আলী, বগী গ্রামের জেলে জাহাঙ্গীর, রাজাপুর গ্রামের বেলাল হোসেনসহ অনেক জেলে জানান, গত তিন মাস মাছ ধরতে না পেরে অর্থ কষ্টে পরিবার পরিজন নিয়ে অর্ধাহারে তাদের দিন কেটেছে। সংসার চালাতে এনজিও এবং মহাজনের কাছ থেকে চড়া সুদে টাকা সংগ্রহ করায় তাদের ঋণের বোঝা বেড়েছে। আগামীকাল শুক্রবার থেকে সুন্দরবনে যাওয়ার লক্ষ্যে নৌকা ও ট্রলারে জাল ও খাদ্যসামগ্রী বোঝাইসহ সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে এখন সময়ের অপেক্ষা করছেন বলে জেলেরা জানান। এ ছাড়া সুন্দরবনে মাছ ধরা নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা ভবিষ্যতে এক মাস কমিয়ে দুই মাস করার জন্য বন বিভাগের প্রতি দাবি জানিয়েছেন ঐ জেলেরা।

ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবনে (টোয়াস) সেক্রেটারি নাজমুল আযম ডেভিড ইত্তেফাককে বলেন, সুন্দরবনে পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলেও সুন্দরবনের করমজলে পর্যটকের আসা যাওয়া ঠিকই ছিল। নিষেধাজ্ঞায় সুন্দরবনের তেমন কোনো লাভ হয়নি বলে তিনি মনে করেন। তিন মাস পর্যটন বন্ধ থাকায় তাদের প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। ধার দেনা ও ব্যাংকের ঋণ করে বেকার হয়ে পড়া দেড় সহস্রাধিক গরিব পর্যটন-শ্রমিক পরিবারের ভরণপোষণের ব্যবস্থা করতে হয়েছে জানিয়ে টোয়াস সেক্রেটারি আরও বলেন, ১ সেপ্টেম্বর থেকে সুন্দরবনের দ্বার খুলে দেওয়া হলেও তাতে পর্যটন ব্যবসায়ীদের তেমন লাভ হবে না। কারণ এখন পর্যটনের অফসিজন। নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত সুন্দরবনে পর্যটনের মৌসুম।

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) শেখ মাহবুব হাসান বলেন, দীর্ঘ তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে সুন্দরবনে জেলেদের মাছ ধরা ও পর্যটকের যাতায়াতের জন্য ১ সেপ্টেম্বর থেকে পাস (অনুমতিপত্র) দেওয়া শুরু হবে। 

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ বাগেরহাটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, দীর্ঘ তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে আগামীকাল ১ সেপ্টেম্বর থেকে জেলে ও বনজীবীরা সুন্দরবনে যেতে পারবেন। তিন মাসের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞার সময় বেকার জেলেদের খাদ্য সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগ থেকে ৫ হাজার ৬০০ জেলের একটি তালিকা করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলেও এখনো কোনো বরাদ্দ পাওয়া যায়নি বলে ডিএফও জানিয়েছেন।

ইত্তেফাক/এমএএম

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন