ঝিনাইদহের শৈলকূপায় বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কম থাকায় দাম চড়া। চাষির ঘরে ও ব্যবসায়ীদের গুদামে এখনো প্রায় ২ হাজার মেট্রিক টন (৫০ হাজার মণ) পেঁয়াজ আছে। চাষিরা বেশি দামের আশায় ধরে রেখেছে। অল্প অল্প করে বাজার ছাড়ছে। ব্যবসায়ীরাও বেশি লাভের আশায় ধরে রেখেছে। কথা বলে জানা যায়, আরও দাম বাড়বে বলে তাদের আশা। মুড়িকাটি পেঁয়াজ ওঠার আগ পর্যন্ত তারা এ পেঁয়াজ ধীরে ধীরে বিক্রি করবে।
ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, গত মৌসুমে ঝিনাইদহ জেলায় ৯ হাজার ৭৫৪ হেক্টরে পেঁয়াজের চাষ হয়ে ছিল। উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৮২ হাজার মেট্রিক টন। এর মধ্যে শৈলকূপা উপজেলাতেই চাষ হয় ৮ হাজার ১৫০ হেক্টরে। উৎপাদন হয়েছিল ১ লাখ ৬৫ হাজার মেট্রিক টন। নতুন পেঁয়াজ ওঠার পর দাম পড়ে যায়, দেশি জাতের পেঁয়াজ প্রতি মণ ৮০০ টাকা থেকে ৯০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হয়। আর সুখসাগর জাতের পেঁয়াজের প্রতি মণের দাম ছিল ৫০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা মণ। এরপর দাম ওঠা নামা করতে থাকে। মে জুন মাসে দামে চড়ে প্রতি মণ বিক্রি হয় ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা। এরপর আরেক দফা দাম চড়ে হয় ২ হাজার টাকা থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা মণ। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরুর পর দাম কমে প্রতি মণ ২ হাজার টাকায় নেমে আসে। ভারত পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর ৪০ ভাগ শুল্ক বাড়ালে দাম ফের চড়ে প্রতি মণ ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত উঠে। মঙ্গলবার দাম কমে ২ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হয়।
পেঁয়াজচাষি সাতগাছি গ্রামের আনোয়ার হোসেন বলেন, ১৪ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেন। বিঘাপ্রতি ৮৫ মণ করে গড় ফলন হয়। তাতে ১ হাজার ২০০ মণ পেঁয়াজ হয়েছিল। ৪০০ মণ বিক্রি করেন। ৮০০ মণ মজুত ছিল। শুকিয়ে কমে এখনো ৬০০ মণ পেঁয়াজ আছে। প্রতি মণের দাম ৩ হাজার টাকার ওপরে উঠলে বিক্রি করে দেবেন। চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অবস্থাসম্পন্ন চাষির ঘরে পেঁয়াজ মজুত আছে।
তারা বলেন, ভেজাল বীজের কারণে গত মৌসুমে অনেক চাষি উৎপাদনে মার খায়। এ কারণে পেঁয়াজে উৎপাদন কম হয়েছিল।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ঝিনাইদহের উপ-পরিচালক মো. আজগর আলী বলেন, এ জেলায় চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। তিনি বলেন, চাষি ও ব্যবসায়ী মিলিয়ে তাদের কাছে ২ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আছে। এ পেঁয়াজ তারা আস্তে আস্তে ছাড়ছে।