আড়াইহাজারে গবাদিপশুর মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে লাম্পি স্কিন রোগ। গত ১৫ দিনে উপজেলার দুই পৌর সভার ও ১০ ইউনিয়নের মধ্যে পাঁচ শতাধিক গবাদি পশু এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.সজল কুমার দাস এই ঘটনা নিশ্চিত করে বলেন, এ রোগে আক্রান্ত হলে পশুর চামড়া অনেকটাই অকার্যকর হয়ে যায়। প্রাথমিক পর্যায়ে আক্রান্ত প্রাণীর জ্বর ১০৫ ডিগ্রি ফরেনহাইট পর্যন্ত হয় এবং ব্যথা ও খাবারে অরুচি দেখা দেয়। বিভিন্ন অংশ ফুলে যায় । মুখ থেকে লালা ঝরে এবং গরু খুঁড়িয়ে হাঁটে। শরীরের বিভিন্ন স্থান ফুলে যায় এবং পায়ে পানি জমে। অনেক সময় গর্ভপাত ঘটতে পারে । এ সময় প্রাণী দুর্বল ও নিস্তেজ হয়ে যায়। প্রতি দিনই আক্রান্ত চার-পাঁচটি গরু হাসপাতালে আসছে। প্রায় প্রতিটি গ্রামেই এই রোগে আক্রান্ত গবাদি পশু আছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে চিকিত্সা নিতে আসা গরুর মালিক সফর আলী জানান, তার একটি বাছুর গত ১৫ দিন ধরে অসুস্থ । রবিবার হাসপাতালে নিলে চিকিত্সক জানান, গরুটি লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত। পরে তিনি চিকিত্সা দেন।
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আরো বলেন, এই রোগটি সাধারণত মশা, মাছি, আঠালির মাধ্যমে এক প্রাণী থেকে আরেক প্রাণীর মধ্যে ছড়ায়। আক্রান্ত প্রাণীর লালা, দুধ, চোখ বা নাকের পানির মাধ্যমে ছড়ায়। আক্রান্ত প্রাণীর পরিচর্যাকারী, প্রাণী চিকিত্সক বা ভ্যাকসিন প্রদানকারীর মাধ্যমেও এই রোগ সুস্থ প্রাণীতে ছড়াতে পারে। পশু স্থানান্তরের মাধ্যমে এরূপ ছড়ায়। আক্রান্ত প্রাণীর ব্যবহূত সিরিঞ্জের মাধ্যমে এই রোগ ছাড়ায়। এই রোগ হলে সব সময় খামার ও গোয়ালঘর পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। খামারে জীব নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, কীটপতঙ্গ, মশা, মাছি ও মাইট নিয়ন্ত্রণ করা। আক্রান্ত প্রাণীটি দ্রুততম অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া ও মশারির ভেতরে রেখে চিকিত্সা করা দরকার ।
রোগের চিকিত্সা করতে হলে যেহেতু ভাইরাস দ্বারা এই রোগটি সৃষ্টি কাজে কোনো অ্যান্টিবায়োটিক এই রোগে কাজ করে না। এর ওপর অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করলে প্রাণীটি দুর্বল হয়ে যায়। তবে ভেটেরিনারি হাসপাতালে চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করা যায়।