কঙ্গোতে বিক্ষোভে নিহতের ঘটনায় স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে জাতিসংঘ। মধ্য আফ্রিকার দেশ কঙ্গোতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনবিরোধী বিক্ষোভে অন্তত ৪৮ জন নিহত হয়। গত বুধবার দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শহর গোমায় সহিংস বিক্ষোভ ও এর জেরে সেনাবাহিনীর শক্তিপ্রয়োগে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে।
জাতিসংঘের অধিকার কার্যালয়ের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি শুক্রবার জেনেভায় সাংবাদিকদের বলেন, এখানে একটি নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা দরকার। তিনি বলেন, জাতিসংঘ ডিআরসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছে যাতে তারা যে তদন্ত শুরু করেছে তা স্বাধীন, কার্যকরী হয় এবং ভবিষ্যতের বিক্ষোভ যাতে আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের মানদণ্ডের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হয় তা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এর আগে এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করে কঙ্গোর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন মনুস্কো। এক বিবৃতিতে তারা এই সহিংসতার ঘটনায় উদ্বিগ্ন বলে জানায়।
এছাড়া এ ঘটনায় তাত্ক্ষণিক ও স্বাধীন তদন্ত পরিচালনা করার পাশাপাশি আটককৃতদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করার আহ্বান জানিয়েছে মনুস্কো। কঙ্গোতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন মনুস্কো নামে পরিচিত। জাতিসংঘের এ মিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সহিংসতা বন্ধ ও বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। মূলত বছরের পর বছর ধরে চলে আসা আন্তঃগোষ্ঠী সহিংসতার জেরেই বুধবার গোমা শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভের সময় একজন পুলিশ সদস্যের ওপর হামলার ফুটেজ সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরে কঙ্গোর সেনারা ক্র্যাকডাউন শুরু করে ও জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনসহ অন্যান্য বিদেশি সংস্থার বিরুদ্ধে আয়োজিত বিক্ষোভ জোরপূর্বক ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এর আগে কঙ্গো কর্তৃপক্ষ জানায়, এক পুলিশ সদস্যকে পাথর ছুড়ে হত্যা করা হয়েছে ও সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে ছয় বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। তবে বৃহস্পতিবারের এক বিবৃতিতে দেশটির সরকার বলে, বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮ জনে।
এছাড়া আরো ১৫৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে ও এ ঘটনায় সামরিক তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কঙ্গোর সেনারা একটি লরিতে বহু মরদেহ স্তূপাকার করে রাখছে ও গাড়িতে করে সেগুলো নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অবশ্য ফুটেজটি যাচাই করা সম্ভব হয়নি। এর আগে ২০২২ সালের জুলাই মাসে মনুস্কো মিশনবিরোধী বিক্ষোভের ফলে কঙ্গোর গোমা ও বুটেম্বো শহরে ১৫ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হন। তাদের মধ্যে তিন জন শান্তিরক্ষীও ছিলেন।