রোববার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঘুষের টাকা ফেরত পেতে দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ

আপডেট : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২০:১০

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে ঘুষের টাকা ফেরত পেতে দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ করেছেন আরিফ সিদ্দিকী নামে এক ব্যক্তি। রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) ওই ব্যক্তি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ করেন।

অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তা হলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল জলিল ও উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম।

আরিফ সিদ্দিকী উপজেলার চান্দুরা ইউনিয়নের সাতগাঁও গ্রামের মৃত এখলাছ সিদ্দিকীর ছেলে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দাউদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে নিরাপত্তা প্রহরী পদে চাকরি পাওয়ার জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের শরণাপন্ন হন। তখন তিনি বুল্লা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে নিরাপত্তা প্রহরী পদে চাকরি দেওয়ার আশ্বাসে আরিফের কাছ থেকে দুই ধাপে ৮০ হাজার টাকা ঘুষ নেন। পরে ২০২২ সালে বুল্লা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে নিরাপত্তা প্রহরী পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিলে আরিফ সিদ্দিকীসহ ৪ জন আবেদন করেন। ওই পদে আরিফ সিদ্দিকীকে নির্বাচন করলে নিয়োগের জন্য কাগজপত্র জমা দেয় আরিফ সিদ্দিকী। এ সময় তার জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল আছে এ কথা বলে উপজেলা নির্বাচন অফিসারের মাধ্যমে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল জলিল আরও ৪০ হাজার টাকা ঘুষ নেন।

পরবর্তীতে আরিফ তার সংশোধিত জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে করে টালবাহানা শুরু করে। এরইমধ্যে বুল্লা উচ্চ বিদ্যালয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়ার সময় শেষ হয়ে যায়। কাগজপত্র দিতে না পারায় সেই পদে আরিফ সিদ্দিকীর নিয়োগ বাতিল করা হয়।

নিয়োগ না হওয়ায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা উপজেলার সাতবর্গ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাসুক ভূঞা ও আড়িয়ল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক লিটন দেবের মাধ্যমে ভুক্তভোগী আরিফ সিদ্দিকীকে দুই ধাপে ৪৫ হাজার টাকা ফেরত দেন। বাকি ৭৫ হাজার টাকা দেওয়া নিয়ে এখন শুরু করে নানা টালবাহানা।

ভুক্তভোগী আরিফ সিদ্দীকী বলেন, চাকরি পাবার লোভে পরে আমি ধার-দেনা ও সুদের ওপর টাকা এনে দিয়েছি। প্রায় ১ বছর বিনা বেতনে স্কুলে দায়িত্ব পালন করেছি এবং স্কুল শেষে  স্যারদের বাসায় প্রতিদিন রান্না করে  দিতাম। চাকরি তো পাইনি বরং টাকা ফেরত না পেয়ে আমার ভিটেবাড়ি ছাড়ার অবস্থা হয়েছে। আমি এ ঘটনার জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট বিচার দাবি করি।

এ বিষয়ে সাতবর্গ স্কুলের সহকারী শিক্ষক মাসুক ভুঁইয়া ও আড়িয়ল স্কুলের সহকারী শিক্ষক লিটন দেব বলেন, এই বিষয়টা আমরা অনেক আগেই মীমাংসা করে দিয়েছি। সে যে কেন অভিযোগ করেছেন তা বুঝতে পারছি না।

অভিযুক্ত উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল জলিল বলেন, শুনেছি এ বিষয়ে ইউএনও স্যারের কাছে একটি অভিযোগ দিয়েছে। স্যার বিষয়টা দেখবেন। এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।

অপর অভিযুক্ত উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি কোনো মানুষের কাছ থেকে টাকা নেয়নি। এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা এবং আমি তাকে চিনি না।

বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদ বলেন, অভিযোগ পেয়েছি এবং বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে। দোষী প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইত্তেফাক/এবি