পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকভিত্তিক অনলাইন পরিবার 'পাবলিকিয়ান পরিবার' আয়োজিত 'সুন্দর হাতের লেখা প্রতিযোগিতা ২০২৩' অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৮ আগস্ট থেকে ৩১ আগস্টের সময়সীমার মধ্যে এই প্রতিযোগিতায় দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছেন।
আয়োজকরা বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) তিনজন শিক্ষার্থীকে যৌথভাবে বিজয়ী ঘোষণা করেন। বিজয়ীরা হলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পকলার ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সাদ আহমেদ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগের শিক্ষার্থী সায়মা বিনতে খলিল ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আশরাফুল ইসলাম।
ইত্তেফাককে আয়োজকরা বলেন, বিজয়ী নির্ধারণ করা সহজ বিষয় ছিল না। একটা লেখার চেয়ে আরেকটা সুন্দর। সবার লেখা এমন ছিল যেন, 'বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচাগ্র মেদিনী'। সবচেয়ে সুন্দর ব্যাপার হচ্ছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী পায়ে লিখে এতে অংশ নিয়েছে।
ছোটবেলায় বাবার কাছ থেকে হাতের লেখায় হাতেখড়ি হয় ঢাবি শিক্ষার্থী সাদের । সাদের বর্ণমালা হুবহু লেখার প্রতি আছে বিশেষ আগ্রহ। প্রায়ই লেখালেখি করতে করতে এখন তার লেখা দেখতে প্রায় ছাপা লেখার মতো হয়ে গেছে। লেখার পাশাপাশি কলমের প্রতিও আগ্রহ রয়েছে তার। ব্রিটিশ ক্যালিগ্রাফার নীল ব্রুমের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হয়ে লেখায় আরো সৌন্দর্য আনার চেষ্টা করেছে সে। সাদ বাংলাদেশ হ্যান্ডরাইটিং অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য এবং সে বাংলা, ইংরেজিসহ ৬০ টির বেশি ভাষায় লেখালেখি করেছে।
আরবি লেখার প্রতি অন্যরকম টান ছোটবেলায় নুরানি মাদরাসা পড়ুয়া কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সালমার। আরবি লিখতে সালমার বেশ ভালো লাগতো। করোনার সময়টাতে ক্যালিগ্রাফি করার ইচ্ছে থেকে সময় দিতে দিতে তার আরবি লেখার হাত পাকা হয়। পুরো কুরআন শরীফ নিজ হাতে লিখতে চান সালমা। ইতিমধ্যে সালমা লিখেছেন ৭-৮ পৃষ্ঠাও।
ছোটবেলা থেকে হাতের লেখার প্রতি খুব একটা যত্ন না নিলেও পড়াকালীন সময়ে প্রচুর লেখালেখির কারণে নিজের অজান্তেই হাতের লেখা সুন্দর থেকে সুন্দরতর হওয়া শুরু করে আশরাফুলের । এইচএসসি শেষে জবির ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হওয়ার পর থেকে আশরাফুল ঝুঁকে পড়েন ইংরেজি ক্যালিগ্রাফির দিকে। বর্তমানে আরবি ও ইংরেজি ক্যালিগ্রাফি নিয়ে কাজ করছেন আশরাফুল এর পাশাপাশি বাংলা ক্যালিগ্রাফি নিয়েও কাজ করার চেষ্টা করছেন তিনি। আশরাফুল মনে করেন, তার ক্যালিগ্রাফি জগতের প্রধান ও একমাত্র শক্তি তার ক্লাসমেট এবং বন্ধুরা।
কম্পিউটার নির্ভর এই যুগে এসেও হাতের লেখা সুন্দর করার প্রতি আগ্রহ কমেনি তরুণদের। অনলাইনে আয়োজিত হাতের লেখার এই প্রতিযোগিতায় হাজারো শিক্ষার্থীর স্বতঃস্ফূর্ত.১ অংশগ্রহণ দারুণভাবে উপভোগ করেছেন লাখো শিক্ষার্থী। ভবিষ্যতেও যাতে এমন আয়োজনের ধারা অব্যাহত থাকে, এমন প্রত্যাশা সাধারণ শিক্ষার্থীদের।