নারায়ণগঞ্জ শহরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকার এস. এম মাহেল রোডে অবস্থিত হাবিব শপিং কমপ্লেক্স। ৫৭ শতাংশ জমিতে নির্মিত এই ভবনটি পাঁচতলা পর্যন্ত বাড়ানোর অনুমতি ছিল। তবে এরপর নানাভাবে ভবনের মালিক সাততলা পর্যন্ত বাড়িয়ে এখন তার ওপর আরো একতলা বাড়ানোর পাঁয়তারা করছেন। ফলে আগে থেকেই ঝুঁকিতে থাকা এই ভবনে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করে আসা দোকানিরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তাদের মতে, এটি এমনিতেই ঝুঁকিপূর্ণ। মালিকের টাকার লোভে ধারণ ক্ষমতার চেয়েও অতিরিক্ত ভার বহন করছে ভবনটি। আবার নতুন স্থাপনা করলে যে কোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে এই হাবিব কমপ্লেক্স।
অভিযোগ করে হাবিব শপিং কমপ্লেক্সের ব্যবসায়ীরা জানান, ভবন মালিক আব্দুল আউয়াল টাকার লোভে একাধিক বিপজ্জনক সিদ্ধান্ত নিয়ে সুবিশাল এই বাণিজ্যিক ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছেন। এর মধ্যে ভবনের নিচ তলার পিলার, সিঁড়ি, বারান্দা ও লিফটের জায়গা ভেঙে এবং পার্কিং এলাকায় দোকান তৈরির মতো হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
মোহাম্মদ আব্দুর রহিম নামে হাবিব শপিং কমপ্লেক্সের এক হোঁসিয়ারি ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরা তো ভয়ের মধ্যে থাকি, যে কোনো সময় ভাইঙ্গা যায়। বাইরে দিয়া রংচং দিয়া রাখছে দেইখা বোঝা যায় না। কিন্তু পুরা মার্কেটেরই অবস্থা খারাপ। আগে অনেকগুলো সিঁড়ি আছিল, সেই সিঁড়ি কাইট্টা দোকান বানাইছে। বারান্দা বন্ধ কইরা দোকান বানাইছে। আন্ডার গ্রাউন্ডের পিলার কাইট্টা বিল্ডিং দুর্বল কইরা দিসে।’ আনিস নামে এক দোকানের কর্মচারী বলেন, ‘এই বিল্ডিংটা শুনছি পাঁচতলা পর্যন্ত করনের কথা আছিল। কিন্তু করছে আটতলা। এখন আবার আরো এক তলা বাড়াইতে চায় মালিক। যে কোনো সময় ভাইঙ্গা পড়ব। আমরা সবাই মরমু। মালিক চিন্তা করে তিনি থাকেন ঢাকায়। তাই কিছু হইলে তিনি তো আর মরব না। মরব দোকানদার আর কাস্টমার! তার টাকার লোভ অনেক বেশি। টাকার জন্য সিঁড়ি, লিফট থেকে শুরু কইরা সব কাইট্টা ফেলছে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক টেলিকম ব্যবসায়ী বলেন, ‘মালিক আব্দুল আউয়াল যখনই কোনো উলটাপালটা কাজ করেন, তখনই তিনি স্থানীয় গুন্ডাপান্ডা আর নেতাদের নিয়া আসেন। যাতে আমরা কিছু না করতে পারি। এভাবে তিনি পিলার কেটেছেন, বারান্দা বন্ধ কইরা দোকান করছেন, পার্কিং বন্ধ কইরা দোকান করছেন। তিনি পুরা বিল্ডিং ঝুঁকিপূর্ণ বানাইয়া ফেলছেন। এখন এটা যখস তখন ভাইঙ্গা পড়তে পারে।’
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে হাবিব শপিং কমপ্লেক্সের মালিক আব্দুল আউয়াল বলেন, ‘নিচ তলার পিলার কেটেছে কিনা জানি না। নিচ তলার মালিক আমি নই, আরেক জন। আর সিঁড়ি কেটে ফেলাসহ বাকি যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে, এগুলো আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আর নতুন করে ছাদে নির্মাণকাজ শুরু করার খবরটিও মিথ্যা । এমন কিছু হবে না।’