শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১
The Daily Ittefaq

পাকিস্তানের খ্রিস্টান প্রতিনিধিদল ইইউ পার্লামেন্টে যে দাবি জানালেন

আপডেট : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৫:১৮

সম্প্রতি পাকিস্তানের ফয়সালাবাদ জেলার জরানওয়ালায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার শিকার হন খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকেরা। অন্যদিকে মিথ্যে ব্লাসফেমির দায়ে সারগোধায় খ্রিস্টানদের ভয়ভীতি দেখানো হয়।

এ ঘটনাগুলোর প্রতিবাদে ব্রাসেলসে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের বৈঠকে জোসেফ জ্যানসেন, সাগুফতা কাউসার এবং আসিফ মলের প্রতিনিধিদল আগামী ১৬ আগস্টের পূর্বে ইউরোপীয় পার্লামেন্টকে এ ঘটনাগুলোর প্রতিবাদস্বরূপ পাকিস্তান সরকারকে নোটিশ প্রদান এবং পাকিস্তানে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষদের ধর্মীয় নিপীড়ন থেকে রক্ষা করতে একটি রেজুলেশন জারির দাবি জানান।

বৈঠকে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য চার্লি ওয়েইমারস, ডেভিড লেগা, বার্ট-জান রুইসেন এবং আনজা হাগা যোগ দেন এবং পাকিস্তানে ধর্মীয় সহিংসতা মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণের ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন।

 জুবিলি ক্যাম্পেইনের এডভোকেসি অফিসার জোসেফ জ্যানসেন পাকিস্তানের ধর্মীয় পরিবেশ সম্পর্কে ইউরোপীয় পার্লামেন্টকে অবহিত করেন। তিনি জানান, মিথ্যে ব্লাসফেমির দায়ে জরানওয়ালার নিরীহ খ্রিস্টানদের ওপর হামলা চালায় উগ্র ধর্মান্ধরা। সহিংসতার ঘটনায় ২৬ টি চার্চ এবং ৮০ টিরও বেশি খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয় তারা। এ সহিংসতার মূলে ছিল পাকিস্তানের রাজনৈতিক দল তেহরিক-ই-লাব্বাইক (টিএলপি)।

পুলিশ কর্মকর্তারাও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষদের নিরাপত্তা প্রদানের পরিবর্তে মিথ্যা ব্লাসফেমির দায়ে দুই খ্রিস্টান নাগরিকদের গ্রেপ্তার করে। অবশেষে জোসেফ খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়ন চালানো মানুষদের বিচার ও শাস্তির জন্য সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান।

আসিফ মল বলেন, পাকিস্তানে খ্রিস্টানদের ওপর ধর্মীয় অবমাননার মতো সংবেদনশীল অভিযোগ আনার পর থেকে তাদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এ পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে দাঙ্গাকে উসকে দিতে কিছু রাজনৈতিক দল চার্চের বাইরে মহানবী সম্পর্কে গ্রাফিতি অঙ্কন করছে। এ ঘটনার জেরে ফয়সালাবাদের এক মুসলিম যুবক এক ধর্মযাজককে গুলি করে হত্যা করেছে। যদিও পুলিশ ইতিমধ্যে এ ঘটনাগুলোর সাথে জড়িত টিএলপি সদস্যদের গ্রেপ্তার করেছে, তবে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষদের ওপর মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। এমনকি তাদের প্রাণনাশের হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে।

ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্যরা পাকিস্তানের ব্লাসফেমি আইন সংশোধনের ব্যাপারে একমত হয়ে এ বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছেন। আনজা হাগা জানান, পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের অবস্থা খুবই খারাপ। এমতাবস্থায় পাকিস্তানে যেন সব ধর্মের মানুষই স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারে এবং মিথ্যা ব্লাসফেমি মামলার শিকার না হয় এজন্য ইউরোপীয় পার্লামেন্টকেই পাকিস্তান সরকারের উপর চাপ প্রয়োগ করতে হবে।

ইত্তেফাক/এসএটি