গতকাল (১১ সেপ্টেম্বর) পাকিস্তান-ভারত ম্যাচে বারবার বাগড়া দিয়ে যাচ্ছিল বৃষ্টি। তখন পাকিস্তানের সাবেক ফাস্ট বোলার শোয়েব আখতার টুইটে লেখেন, ‘বারসোরে মেঘা মেঘা’। তবে রিজার্ভ ডে’তে গড়ানো সুপার ফোরের এই ম্যাচে পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিয়েছে ভারত।
‘এক ম্যাচ দিয়েই পাকিস্তানকে বাতিল করা যাবে না। যেমন এক ম্যাচ দিয়ে ভারতকেও বাতিল করার সুযোগ নেই। ভারতকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। এই জয় তাদের খুব ভালোভাবেই প্রাপ্য ছিল। তারা দুর্দান্ত খেলেছে। তারা ব্যাটিং-বোলিং দুটিতেই খুব অসাধারণ করেছে। ভারতীয় বোলিং লাইন এই বার্তা দিয়েছে যে তারা পুরোপুরি আগ্রাসী মানসিকতা নিয়ে খেলবে এবং উইকেট নেবে। আর আমরা দ্রুত আউট করব। তারা সেটা করেও দেখিয়েছে। একজন পেসার হিসেবে এটা আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। বুমরা খুবই ভালো স্পেল করছে। সিরাজও খুব ভালো করেছে’
- শোয়েব আখতার, সাবেক ফাস্ট বোলার, পাকিস্তান
ভারতের বিপক্ষে রেকর্ড গড়া ২২৮ রানে হেরেছে বাবর আজমের দল। এই হারকে নিয়ে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ‘অপমানজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন শোয়েব।
তিনি বলেন, ‘বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করছিলাম। ভাবছিলাম, বৃষ্টি হয়ে যাক। জীবনটা বাঁচুক। তবে এভাবে হয় না। পাকিস্তান বেশ অপমানজনকভাবে হেরেছে। পাকিস্তান ১২৮ রানে অলআউট হয়েছে। এটা খুবই আশঙ্কাজনক ব্যাপার। এত ভালো ব্যাটিং উইকেটে পাকিস্তান টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত কেন নিল? আর এত ভালো দল ভারতকে ম্যাচে ফেরার সুযোগ কেন দিলো? এ সিদ্ধান্ত আমার কাছে একটু অদ্ভুতই ঠেকেছে। এর ফলও আপনারা এখন দেখতে পাচ্ছেন।’
তবে পাকিস্তানকে ‘খারাপ দল’ বলতে অস্বীকার করেন শোয়েব। তিনি বলেন, ‘এক ম্যাচ দিয়েই পাকিস্তানকে বাতিল করা যাবে না। যেমন এক ম্যাচ দিয়ে ভারতকেও বাতিল করার সুযোগ নেই। ভারতকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। এই জয় তাদের খুব ভালোভাবেই প্রাপ্য ছিল। তারা দুর্দান্ত খেলেছে। তারা ব্যাটিং ও বোলিং দুটিতেই খুব অসাধারণ করেছে। ভারতীয় বোলিং লাইন এই বার্তা দিয়েছে যে, তারা পুরোপুরি আগ্রাসী মানসিকতা নিয়ে খেলবে এবং উইকেট নেবে। আমরা দ্রুত আউট করবো। তারা সেটা করেও দেখিয়েছে। একজন পেসার হিসেবে এটা আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। বুমরা খুবই ভালো স্পেল করছে। সিরাজও খুব ভালো করেছে।’
ওয়ানডে ফরমেটে নিয়মিত না খেলায় এমন হার বলে মনে করেন শোয়েব, ‘হারিস রউফের চোট আমাকে বেশ ভাবনায় ফেলেছে। দ্বিতীয় স্পেল সে করতে পারেনি। তবে এই ছেলেগুলোর দোষও নেই। সাফাই গাইছি না। যদি হিসাব করেন, তারা একসঙ্গে কতগুলো ওয়ানডে খেলেছে? পুরো বছরে ১৩, ১৪ বা ১৫ ওয়ানডে হয়তো তারা খেলেছে। পেছনে ফিরে গেলে ওয়াসিম-ওয়াকার ভাই তো এক মৌসুমেই ৫০০-৬০০ ওভার করতেন। ১০ ওভার করার জন্য সেই প্রাণশক্তিও এখন আর নেই। দ্বিতীয় স্পেল করার জোর থাকতে হয়। আমার মনে হয়, সেই জায়গায় ঘাটতি আছে। আর তারা প্রচুর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলে। আমি সব সময় বলি, ৪ ওভারের বোলার নয়, ১০ ওভারের বোলার হতে হবে। ১০ ওভারের ক্রিকেটের সৌন্দর্যটা এখন হারিয়ে যাচ্ছে। অবশ্য এই খেলা হয়ও কম। ছেলেদের ওপর রাগ করেও লাভ নেই।’
ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানকে দেখতে চান শোয়েব, ‘এখন দুই দলকে ফাইনালে যেতে হবে। ফাইনালে দুই দলের মানসিকতা ও স্নায়ুর পরীক্ষা হবে। তবে ভারতকে আবারও অভিনন্দন জানাচ্ছি। পাকিস্তানকে দারুণ শিক্ষা দিলো তারা। এখন তাদের শক্তিশালীভাবে ফিরে আসতে হবে। আমি মনে করি, তারা সেটা পারবে। আমার মনে হয়, সিদ্ধান্ত নেওয়ার জায়গায় উন্নতি দেখাতে হবে। ফাস্ট বোলিংয়ে পরিবর্তন হোক বা টস জিতে ব্যাটিং করবে, নাকি ফিল্ডিং- এসব বিষয়ে আরও বিচক্ষণ হতে হবে। দলীয়ভাবেই এই বিচক্ষণতা দেখাতে হবে।’
অন্যদিকে ভারতের ব্যাটসম্যানদের প্রশংসায় ভাসিয়েছেন শোয়েব। তিনি বলেন, ‘ভারতকে অভিবাদন। কোহলি দারুণ প্রত্যাবর্তন করেছে। সে অসাধারণ একজন ক্রিকেটার! এটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। লোকেশ রাহুলও সেঞ্চুরি করেছে। ছেলেদের শেখা উচিত যে বিরাট কোহলি যখন রান করে, তখন সে লম্বা ইনিংস খেলে। ওভার আরও বাকি থাকলে সে আরও লম্বা ইনিংস খেলত। ১৫০ পার করে ফেলত। ভারতের এই সামর্থ্য আছে, যে কোনো জায়গায় এসে রান করতে পারে। সাবাশ কুলদীপ। কুলদীপকে তো কখনো বাদ দেওয়াই উচিত নয়। আমি এখনও বুঝতে পারিনি, চাহাল ও কুলদীপকে কেন বাইরে রাখে। আজ কুলদীপ বুঝিয়ে দিয়েছে, কেন সে ভালো।’