বুধবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

ভবিষ্যৎ উপযোগী শিক্ষা নিশ্চিত করবে হাই পারফরমেন্স লার্নিং

আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:২২

ক্রমবর্ধমান প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ও সামাজিক বিবর্তনের কারণে শিক্ষাক্ষেত্রও নতুন সব পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানের নিয়ত পরিবর্তনশীল অবস্থায় প্রথাগত শিক্ষা ও কাজের দক্ষতাগুলো নতুন পরিবেশের তুলনায় অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ছে। এক্ষেত্রে, সমাধান হিসেবে সামনে এসেছে হাই পারফরমেন্স লার্নিং -এর মতো উদ্ভাবনী শিক্ষণ প্রক্রিয়া।

হাই পারফরমেন্স লার্নিং -এর পদ্ধতিগত কাঠামো প্রথাগত ব্যবস্থার বাইরে গিয়ে ভবিষ্যতমুখী কৌশল ও প্রযুক্তির সমন্বয়ে শিক্ষার্থীদের অনন্য অর্জনের শিখরে আরোহণ করতে উদ্বুদ্ধ করে। ২শ’ বছরের পুরানো ইউকে বোর্ডিং স্কুল হেইলিবেরিতে আগামী বছর এর বাংলাদেশ ক্যাম্পাসের প্রথম ব্যাচ যাত্রা শুরু করবে। নতুনত্ব ও উদ্ভাবন সূচনার মাধ্যমে  শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষা বিষয়ে ধারণা এবং কীভাবে শিক্ষাদান পদ্ধতি ও মূল্যায়নের ক্ষেত্রে এইচপিএল ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে তা নিয়ে কাজ করছে। বৈশ্বিকভাবে শিক্ষা এখন আর মুখস্থ বিদ্যার ওপর নির্ভরশীল নয়। বর্তমানে, শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের কার্যকরী উপায়ে চিন্তা করার দক্ষতা, সৃজনশীলতা, সমস্যা সমাধান ও মানিয়ে নেয়ার দক্ষতা অর্জনকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছেন। শিক্ষাক্ষেত্রের এসব পরিবর্তনের সাথে হাই পারফরমেন্স লার্নিং সম্পূর্ণভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যা শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক উন্নয়নে গুরুত্বারোপ করে এবং সম্ভাবনার বিকাশে তাদের ভেতরের কৌতুহলকে জাগিয়ে তোলে। 

নিউরোসায়েন্স ও মনস্তাত্বিক ধারণা থেকে উদ্ভূত কাঠামো 
হাই পারফরমেন্স লার্নিং কাঠামো হচ্ছে প্রমাণ-নির্ভর ও অনুশীলনী-ভিত্তিক পদ্ধতি যা শিক্ষার্থীদের জ্ঞান-ভিত্তিক পারফরমেন্সের ওপর গুরুত্বারোপ করে। এ পদ্ধতিতে প্রতিটি স্কুলের নিজস্ব প্রয়োজনকে স্বীকৃতি দেয় এবং শিক্ষাখাতের পেশাদারদের নিজস্ব ধারণা বাস্তবায়নের সুযোগ করে দেয়। হাই পারফরমেন্স শিক্ষার্থীদের পর্যায়ে কেমন হওয়া উচিত এবং স্কুলগুলো কীভাবে তাদের লক্ষ্য বাস্তবায়ন করবে সে রূপরেখা তৈরি করে দেয় এ কর্মকাঠামো। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, শিক্ষার্থীদের জন্যও এ পদ্ধতি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ; সঠিকভাবে এ পদ্ধতি অনুসরণ করা হলে শিক্ষার্থীদের পারিবারিক ও আর্থিক অবস্থা নির্বিশেষে শিক্ষার্থীরা এর মাধ্যমে উপকৃত হবে এবং ভবিষ্যতের বৈশ্বিক নেতৃত্ব হিসেবে গড়ে ওঠবে।  

স্কুল পর্যায়ে বহুমাত্রিক ও অনুকরণীয় এ কাঠামো ব্যবহার করলে এ পদ্ধতি ধারাবাহিকভাবে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চ সক্ষমতা অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। প্রথাগত শিক্ষণ ব্যবস্থার বাইরে গিয়ে এ কাঠামো নিউরোসায়েন্স ও মনস্তত্বের ধারণা অনুসরণ করে শিক্ষার্থীদের বুদ্ধিবৃত্তিক পরিচর্যার ওপর গুরুত্বারোপ করে। 

হাই-পারফরমেন্স লার্নিং
এইচপিএল কার্যকরী এক শেখার প্রক্রিয়া। উদাহরণ দিয়ে বলা যেতে পারে, কাউকে যদি বলা হয় ক্যালকুলেটর ব্যবহার না করে মনে মনে হিসাব করে ৯৮ এর বর্গফল বের করতে – এটা করতে বেশ সময় লাগবে। কিন্তু সে যদি এইচপিএল প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানে, তাহলে তার আগে থেকেই ৯০ এর ঘরের সংখ্যাগুলোর বর্গফল সম্পর্কে ধারণা থাকবে – সে সহজেই শেষ অঙ্কটির বর্গফল বের করে ৯ ও ০ এর মাঝে হিসাব করতে পারবে। এইচপিএল টেকনিক ব্যবহার করে আমি সহজেই ৯৮ x ৯৮ এর সমাধান বের করে ফেলতে পারি। ৮ x ৮ হচ্ছে ৬৪। কিন্তু ৬৪ কে ৯ ও ০ এর মাঝে ফেলতে হবে। তাই, আমি ৯ এর পাশে যদি ৬ রাখি এবং ০ এর পাশে ৪ (নিয়মানুসারে); তবে, সহজেই ৯৮ এর বর্গফল – ৯৬০৪, বের করা যাবে। এখন যদি আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করি ৯৭ x ৯৭ কতো কিংবা ৯৯ x ৯৯? একই পদ্ধতি অনুসরণ করে আপনি ক্যালকুলেটর কিংবা কলম ব্যবহার না করে কতো দ্রুত ফল বের করে ফেলতে পারবেন। আর এজন্যই হেইলিবেরির শিক্ষার্থীরা আইবিডিপি/ কেমব্রিজ আইজি ফলাফলে বিশ্বের ১ থেকে ২ শতাংশের মধ্যে থাকে।

একইসাথে, এ ব্যবস্থায় অ্যাকাডেমিক সাফল্য, ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স ও সামাজিক দক্ষতার ওপর জোর দেয়া হয়। শিক্ষার্থীদের নিজস্বতা ও শেখার স্টাইলের ওপর গুরুত্ব দিয়ে এ প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন অনুযায়ী শিক্ষা অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করা হয়। শিক্ষার্থীদের ক্ষমতায়নে তাদের আগ্রহ জাগিয়ে তোলা হয়। ন্যাশনাল ট্রেইনিং ল্যাবরেটোরিজের জরিপে দেখা গেছে অংশগ্রহণমূলক আলোচনা ও অভিজ্ঞতা-ভিত্তিক হাই পারফরমেন্স লার্নিং প্রক্রিয়ার শিক্ষার্থীরা প্রথাগত লেকচার-ভিত্তিক শেখানোর প্রক্রিয়ার চেয়ে তথ্য বেশি মনে রাখতে পারে। লেকচার-ভিত্তিক শিক্ষণ প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীরা প্রায় ৫ শতাংশ বিষয় মনে রাখতে পারে; অন্যদিকে, অংশগ্রহণমূলক আলোচনা ও অনুশীলনী-ভিত্তিক শিক্ষণ প্রক্রিয়ার তারা ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত মনে রাখতে পারে। এক্ষেত্রে, হাই পারফরমেন্স লার্নিং ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের প্রকল্পভিত্তিক শেখা, ইন্টার্নশিপ ও সমাজের কল্যাণমূলক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার মাধ্যমে তাত্ত্বিক বিষয় ও বাস্তব ক্ষেত্রে জ্ঞানের প্রয়োগের মধ্যে ব্যবধান দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা হয় – শিক্ষার্থীদের কার্যকরী উপায়ে ভাবতে উৎসাহিত করা হয়; পাশাপাশি, সঠিক প্রশ্নটি করে উত্তর বের করে সে উত্তরের বিশ্লেষণের মাধ্যমে জটিল সমস্যা সমাধানের দক্ষতা গড়ে তোলা হয়। পাশাপাশি, এ ব্যবস্থায়, শিক্ষার্থীরা দলগত প্রকল্প ও বিতর্কে অংশগ্রহণ করে এবং আধুনিক কাজের পরিবেশের সহযোগিতামূলক প্রকৃতির সাথে নিজেদের পরিচিতি ঘটানোর সুযোগ লাভ করে। 

ভবিষ্যৎ উপযোগী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে, ২০২৫ সালের মধ্যে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ও কাজের ক্ষেত্রে পরিবর্তনের কারণে ৫০ শতাংশের বেশি কর্মীর নতুন সব দক্ষতা অর্জন করতে হবে। একবিংশ শতাব্দীর কর্মীদের নতুন ও ভবিষ্যৎ উপযোগী কৌশল গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে, ভূমিকা রাখবে হাই পারফরমেন্স লার্নিং; কেননা, এ শিক্ষণ প্রক্রিয়ায় শিক্ষা অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রাখার ক্ষেত্রে প্রযুক্তিকে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ভার্চ্যুয়াল রিয়েলিটি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ডেটা অ্যানালিটিকস এ শিক্ষণ প্রক্রিয়ায় সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত, যা শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ততামূলক কার্যক্রম বৃদ্ধি করবে। হাই পারফরমেন্স লার্নিং শেখার প্রতি ভালোবাসা তৈরি করে এবং শিক্ষার্থীদের এমনভাবে প্রস্তুত করে যেনো তাদের সবসময় শেখার আগ্রহ থাকে। এ শিক্ষণ প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে ধারণা প্রদান করা হয় এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে তাদের জ্ঞানের পরিসর বৃদ্ধি পায়।

ম্যাককিনসে গ্লোবাল ইনস্টিটিউটের একটি গবেষণা অনুযায়ী অদূর ভবিষ্যতে রুটিন কাজগুলোর অটোমেশনের ফলে কর্মীদের সৃজনশীলতা এবং জটিল সমস্যা সমাধান ও কার্যকরী উপায়ে চিন্তা করা দক্ষতা এমন সব হায়ার-ওর্ডার কগনিটিভ স্কিল অর্জন করতে হবে। হাই পারফরমেন্স লার্নিং পদ্ধতিতে এসব দক্ষতা অর্জনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়, যা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বের জন্য প্রস্তুত করে তোলে। এ শিক্ষণ প্রক্রিয়া অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় আরও বেশি তাৎপর্যপূর্ণ; কেননা, এ ব্যবস্থায় শিক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করতে ভূমিকা রাখা হয় এবং দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্বদের মধ্যে উদ্যোক্তা হওয়ার মানসিকতার বীজ বপন করা হয়। উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার ও উদ্ভাবনী শিক্ষা পদ্ধতি প্রয়োগ করে হাই পারফরমেন্স লার্নিং প্রত্যন্ত অঞ্চলেও সুবিধাবঞ্চিত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছে যেতে পারে। এর মাধ্যমে সকল শিশুর  জন্য মানসম্পন্ন শিক্ষাগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এ শিক্ষাব্যবস্থা ব্যক্তিকে ঝুঁকি গ্রহণে, ব্যর্থতা মেনে নিতে এবং ভুল করা ও ভুল থেকে শিক্ষা নেয়ার মাধ্যমে জীবনে এগিয়ে যাওয়ার মানসিকতা অর্জনে সক্ষম করে তোলে। আর এ মানসিকতাই মানুষকে সৃষ্টিশীল ও সহিষ্ণু হতে এবং সকল পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে, যা বাংলাদেশের মতো প্রবৃদ্ধিশীল অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

অনেক সময় সব স্কুলের জন্য হাই পারফরমেন্স লার্নিং ব্যবস্থার সমন্বয় করা চ্যালেঞ্জিং কাজ মনে হতে পারে। এজন্য, হেইলিবেরি ভালুকা (ময়মনসিংহ) এইচপিএল ইনস্টিটিউট তৈরিতে কাজ করছে, যেখানে দেশের সকল স্কুল একসাথে হয়ে এইচপিএল টুলগুলো ব্যবহার করতে পারে, কর্মশালায় অংশগ্রহণ করতে পারে এবং তাদের স্কুলে এ ব্যবস্থার বাস্তবায়নে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ট্রেইনিং ম্যাটেরিয়ালগুলো ব্যবহার করতে পারে। এ ধরনের অংশীদারিত্ব এইচপিএল’র ফলাফলের ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। এইচপিএল হচ্ছে সেলফ-আপডেটিং সিস্টেম, যা ওপেন সোর্স এবং বিভিন্ন স্কুল ও কমিউনিটির অংশগ্রহণের মাধ্যমে আরও কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে। 

স্কুল, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের ভূমিকা
হাই পারফরমেন্স লার্নিং সন্নিবেশ করতে স্কুলগুলোকে অবশ্যই তাদের পাঠ্যক্রম, পড়ানোর পদ্ধতি ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার সাথে মানিয়ে নিতে হবে। পেশাগত উন্নয়ন, সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্ব ও উদ্ভাবনী রিসোর্সের ওপর বিনিয়োগের মাধ্যমে স্কুলগুলো রূপান্তরমূলক শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করতে পারে। বাসায় শেখার প্রতি ভালোবাসা জাগিয়ে, কৌতূহলকে উৎসাহিত করে এবং বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষার সুযোগ প্রদান করে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের এ প্রক্রিয়াটির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সাহায্য করতে পারেন। আর শিক্ষার্থীদের অবশ্যই কৌতূহলী হতে হবে এবং নিজেদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলতে হবে; কেননা, এর মাধ্যমেই তারা তাদের শিক্ষাকে নিজেদের মননে ধারণ করতে পারবেন। 

স্কুল শিক্ষার্থীদের শেখানোর ক্ষেত্রে কী ধরনের কৌশল গ্রহণ করছে তা হাই পারফরমেন্স লার্নিং কাঠামোর আওতায় যাচাই করে দেখা সম্ভব। এ শিক্ষণ ব্যবস্থায় শিক্ষকরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। যদিও শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নে গ্রেড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, কিন্তু এক্ষেত্রে গ্রেডিংই একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। বিশ্বমানসম্পন্ন স্কুলগুলো পরীক্ষার ফলাফলের চেয়েও শিক্ষার্থীদের উন্নয়নে বেশি জোর দেয়, যেখানে শিক্ষার্থীরা ক্রিটিক্যাল থিংকিং -এর দক্ষতা অর্জন করবে এবং সামাজিকভাবে নিজেদের আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে যার মাধ্যমে তারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ও বিষয়ে শিক্ষার সুযোগ পাবে। আরও বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী যেনো হাই পারফরমেন্স লার্নিং এর অধীনে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে এজন্য স্কুলগুলোকে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে হবে। 
পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা  

আমরা বিশ্বমানের শিক্ষার সুযোগ তৈরিতে গুরুত্বারোপ করছি। তবে, তার আগে কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়া জরুরি। শুধুমাত্র পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অর্জন করাই শিক্ষার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কী না? সাফল্য অর্জন সাময়িক বিজয় কী না? বিভিন্ন গ্রুপের শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নির্দিষ্ট শিক্ষা কৌশল ও শিক্ষণ প্রক্রিয়া যথেষ্ট কী না? আর এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলেই আমরা পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করব।

আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে একটি ভাল স্কুল কী তৈরি করে তা মূল্যায়ন করাই গুরুত্বপূর্ণ নয় বরং গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে কোন বিষয়গুলোর সমন্বয়ে ভালো শিক্ষাব্যবস্থা তৈরি হচ্ছে। কগনিটিভ পারফরমেন্সের সক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক দক্ষতার পরিসর বৃদ্ধির বিষয়টি পরিচর্যা করার ক্ষেত্রে উদ্ভাবনী হাই পারফরমেন্স লার্নিং প্রক্রিয়া নতুন একটি শিক্ষা ব্যবস্থা তৈরিতে ভূমিকা রাখবে, যা সত্যিকার অর্থেই দেশের জন্য মেধাবী ও সম্ভাবনাময় নতুন প্রজন্মের বিকাশে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। আর সত্যিকার অর্থে শিক্ষিত এ প্রজন্মই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ আকৃতিদানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

লেখক: অ্যাকাডেমিক ডিরেক্টর, হেইলিবেরি ভালুকা

ইত্তেফাক/এএইচপি