রোববার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

প্রভাষক নিয়োগে দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে

আপডেট : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:১০

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের নিদারাবাদ ইউনিয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নতুন প্রভাষক নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান মো. আজমলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী একজন প্রার্থী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগ করা হয়েছে, স্কুলটিতে নতুনভাবে কলেজ শাখা অনুমোদন হওয়ার পর একটি শীর্ষ জাতীয় দৈনিকের গত ২৫ জুলাই বিভিন্ন পদে প্রভাষক ও কর্মচারী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন প্রতিষ্ঠান প্রধান। আগামী শনিবার সকালে চাকরিপ্রার্থীদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তবে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি অর্থনীতি (প্রভাষক) বিষয় পদে তানভীর হাছান আকাশ, মঈন উদ্দিন, রায়হান উদ্দিনসহ তিনজন প্রার্থী আবেদন করেন। কিন্তু অর্থনীতি বিভাগ ছাড়া অন্যান্য বিষয়ে পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশিত অন্যান্য পদে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য প্রার্থীদের কাছে প্রবেশপত্র ইস্যু করলেও অর্থনীতি পদে যারা আবেদন করেছেন তাদেরকে কোনো ধরনের বার্তা কিংবা প্রবেশপত্র ইস্যু করা হয়নি।

এ ঘটনায় অর্থনীতিতে আবেদনকারীদের কেন পরীক্ষা নেয়া হবে না- বিষয়টি প্রতিষ্ঠানটির প্রধানের কাছে জানতে চান ভুক্তভোগীরা।

ভুক্তভোগীদের আশ্বস্ত করার জন্য ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বলেন, ‘বিধি অনুযায়ী এক পদে তিনজন প্রার্থীর আবেদন থাকতে হয়। অর্থনীতি পদে শুধু একটি আবেদন পড়েছে। তাই নিয়োগের কোরাম না হওয়ায় এর পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হচ্ছে না।’

পক্ষান্তরে একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এতে অর্থনীতি পদে তিনটি আবেদন জমা হয়েছে। পাশাপাশি নিয়োগ প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের জন্য সবকিছু ঠিক আছে। এখানে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ‘তথ্য গোপন’ ও ‘মিথ্যাচার’ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এই সংবাদদাতার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে আবেদনকারী তানভীর হাছান আকাশ বলেন, ‘কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তার পছন্দের লোক, স্বজনপ্রীতি ও অন্যান্য সুবিধা নিতে আমাদেরকে বাদ রেখে পরীক্ষার আয়োজন করেছেন। তিনি আমাদের সঙ্গে ‘প্রতারণা, মিথ্যাচার ও তথ্য গোপন’ করেছেন। নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে তার কারসাজি (দুর্নীতি) ও অনিয়ম এখন সবার চোখে ধরা পড়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা দাবি জানানো হচ্ছে।

এদিকে, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান মো. আজমলকে মোবাইলে ফোনে ইত্তেফকের এই সংবাদদাতা বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করেন। তখন তিনি বলেন, ‘আমরা  নতুন কলেজ শাখায় কয়েকটি পোস্টে (পদে) লোক নেওয়ার জন্য সার্কুলার দিয়ে ছিলাম ও আপাতত ১০টি পোস্টে (পদে) লোক নেওয়া হবে। এসব পোস্টে (পদে) আবেদনের ভিত্তিতে প্রার্থীদের প্রবেশপত্র দেওয়া হয়েছে।

তবে তাকে কতটি পোস্টে (পদে) লোকবল নেওয়া হবে এমন প্রশ্ন করা হলে সুকৌশলে এড়িয়ে যান তিনি।

নিদারাবাদ ইউনিয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সভাপতি আশেক মাওলা কাইজার বলেন, ‌‘এবার আমাদের নতুন কলেজ শাখা চালু হয়েছে। ছাত্রছাত্রীর ভর্তির ওপর বিবেচনা করে আমাদের লোকবল নিতে হবে। ইচ্ছা করলেই আমরা বেশি লোক নিতে পারবো না। তবে অভিযোগ উত্থাপনকারী আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেননি। যোগাযোগ করলে বুঝতাম ঘটনার আদ্যোপান্ত।’

বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘কোনো ধরনের অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়া (সমীচীন) হবে না। তদন্ত করে দোষী সাব্যস্ত হলে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ইত্তেফাক/এইচএ