বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিলুপ্তির পথে মাটির ঘর

আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৪:৪৬

কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে সিরাজগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈরি ঘর। রায়গঞ্জ, তাড়াশ, সলঙ্গা উপজেলার গ্রামগুলোতে গত কয়েক বছর আগেও নজরে পড়ত মাটির ঘর। প্রচণ্ড গরম ও শীতে বসবাসের উপযোগী ছিল এই মাটির ঘর। এক সময় এই এলাকার ধনী-গরিব সবাই সেই ঘরে বসবাস করতেন। তবে কালের বিবর্তনে ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিলুপ্ত হতে বসেছে মাটি দিয়ে তৈরি ঘর।

জানা যায়, তাড়াশের আট ইউনিয়নে ২৪৮টি গ্রামের মধ্যে দেশীগ্রাম ইউনিয়নের আড়াঙ্গাইল গ্রামে পাশাপাশি দুটি পরিবারে শত বছরের পুরাতন তিনটি মাটির দেয়ালের খড়ের চালের বসতঘর এখনও রয়েছে। এই মাটির ঘরে আজাহার আলী (৬৫) ও হানিফ মোল্লা (৬৭) তাদের পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন।

আজাহার আলী ও হানিফ মোল্লা জানান, আরামদায়ক মাটির ঘরে দরিদ্র মানুষের পাশাপাশি বিত্তবানরাও একসময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করতেন। বৃষ্টি বা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ না হলে এসব ঘর অনেক বছর পর্যন্ত টিকে থাকে বলেও জানান তারা।

তারা আরও বলেন, বর্তমানে মানুষের আধুনিক জীবনযাপনের ইচ্ছা ও আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সবাই মাটির ঘর ভেঙে টিন আর ইটের পাকা-আধাপাকা বাড়ি তৈরি করেছেন। বিলুপ্ত হতে চলেছে অতীতের মাটির ঘর।

রায়গঞ্জ উপজেলার সোনাখাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) মৌহার গ্রামের শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রায় ৬০ বছর আগে এই ঘর নির্মাণ করেছিলাম। তখনকার সময়ে আমার খরচ হয়েছিল প্রায় ৬ হাজার টাকা।

তিনি আরও বলেন, আমাদের এই এলাকায় মাটির ঘর অনেক রয়েছে। এখন এ ধরনের ঘর তৈরি করতে প্রায় ৪০-৫০ হাজার টাকার বেশি খরচ হয়।

একই এলাকার আবু হেনা মো. মোস্তফা কামাল রিপন জানান, রায়গঞ্জ ও তাড়াশ উপজেলায় আজও অনেক মাটির ঘর রয়েছে। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যরা বাপ-দাদার তৈরি করা মাটির ঘর প্রতি বছর কিছুটা মাটি দিয়ে সংস্কার করে বসবাস করছেন।

রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৃপ্তি কনা মণ্ডল বলেন, রায়গঞ্জের বিভিন্ন গ্রাম এলাকায় এখনও মাটির ঘর দেখা যায়। অনেকেই সংস্কার করে বাপ-দাদার রেখে যাওয়া ঘরে আজও বসবাস করছেন।

তিনি আরও বলেন, মানুষের অর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে জীবন মানের ও উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। আর তাই হারিয়ে যেতে বসেছে বাঙালিদের চিরচেনা ঐতিহ্যবাহী মাটির এই ঘরের ঐতিহ্য।

ইত্তেফাক/এইচএ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন