রাজশাহীর বাঘায় বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের একটানা ১৫ বছরে দুটি নতুন বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্র চালু করা হয়েছে। এই উপকেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে ১১০টি গ্রামে প্রায় ৯৬০ কিলোমিটার নতুনভাবে বিদ্যুতায়নের মাধ্যমে উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা সম্ভব হয়েছে।
এই বিদ্যুতায়নের আওতায় আলোর মুখ দেখেছে ৫৬ হাজার পরিবার। এ জন্য সরকারের ব্যয় হয়েছে প্রায় ৬০ কোটি টাকা। উপজেলায় বর্তমান গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৫ হাজার।
স্থানীয়রা মনে করছেন, বাঘা-চারঘাটের সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহারিয়ার আলমের দক্ষ নেতৃত্বের জন্য এসব উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। সম্প্রতি জাতীয় ও স্থানীয় সরকার দিবস উন্নয়ন মেলা উপলক্ষে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাঘা পল্লি বিদ্যুৎ অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার শী-সুবির কুমার দত্ত।
জানা গেছে, নাটোর পল্লি বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর আওতায় বাঘা সাব-জোনাল অফিসের মাধ্যমে উপজেলার মনিগ্রাম এলাকায় একটি এবং আড়ানীতে একটি বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্র চালু করা হয়েছে। এ জন্য সরকারের ব্যয় হয়েছে প্রায় ২০ কোটি টাকা। এ ছাড়াও পোল এবং তার বাবদ ব্যয় হয়েছে আরও প্রায় ৪০ (চল্লিশ) কোটি টাকা। এই উপকেন্দ্র দু’টি চালু হওয়ার পর ৪টি ফিল্টারের মাধ্যমে বাঘায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। এর ফলে একদিকে পূর্বের যে কোনো সময়ের চেয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বেড়েছে। অন্যদিকে কমেছে লোডশেডিং। একইভাবে পার্শ্ববর্তী চারঘাট উপজেলায় পুরাতন বৈদ্যুতিক উপকেন্দ্রকে আধুনিকরণ করার মাধ্যমে সেখানেও শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, বাঘায় বিগত সরকার আমলে নতুনভাবে হাতে গোনা কিছু বৈদ্যুতিক সংযোগ দেওয়া হলেও বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০২২ সালে রাজশাহী ৬ চারঘাট-বাঘায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন কাজ সম্পূর্ণ করা হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে দুর্গম এলাকা বাঘার চকরাজাপুর ইউনিয়নের পদ্মার চরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহের কারণে ঐ অঞ্চলের মানুষ বাঘা পল্লি বিদ্যুৎ অফিসারকে ধন্যবাদ জানানোসহ স্থানীয় সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
চরাঞ্চলের চেয়ারম্যান বাবলু দেওয়ান এ প্রতিবেদককে বলেন, শাহরিয়ার আলম আমাদের অভিভাবক। তিনি স্বপ্ন দেখেন এবং সেটি বাস্তবায়ন করেন। বতমানে তার কারণে আমরা চরাঞ্চলে পাকা রাস্তা পেয়েছি।
উপজেলার বাউসা এলাকার আব্দুল মালেক, চরাঞ্চলের মিজানুর রহমান, মনিগ্রামের সোহাগ হোসেন, ঝিনার নয়ন সরকার ও নিশ্চিন্তপুর গ্রামের হিমেল মিয়া জানান, আমরা কল্পনাও করতে পারিনি। এতো অল্প সময়ের মধ্যে বিদ্যুতের পরিসীমা এতোটা বৃদ্ধি পাবে। তাদের মতে, উপজেলার দুর্গম ও নিভৃত পল্লি এলাকায় নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ চালু হওয়ায় এখন বাতি (কূপি) কিংবা হারিকেন জ্বালিয়ে বাচ্চাদের আর পড়ালেখা করতে হয় না। এখন তারা টিউবলাইট কিংবা এনার্জি বাল্পের আলোয় পড়ালেখা করছে। সেই সঙ্গে বাড়িতে বসে টিভি দেখাসহ কম্পিউটার চালাতে পারছে। তারা মনে করছেন, বাঘা-চারঘাটের সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহারিয়ার আলমের নেতৃত্ব ও বলিষ্ঠ ভূমিকার কারণে এ সকল উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে।
বাঘার বিশিষ্ঠ সমাজ সেবক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার মনোয়ারুল ইসলাম মামুন বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর উপজেলার দুর্গম পদ্মার চরাঞ্চলে শুধু বিদ্যুতের আলোই পৌঁছেনি, একই সঙ্গে তারা পাকা রাস্তা পেয়েছে। অপরদিকে সমতল এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘরে-ঘরে বিদ্যুৎ এবং পাকা সড়ক ও উপজেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নতুন-নতুন অত্যাধুনিক ভবন পেয়ে এলাকার মানুষের জীবনযাত্রা একেবারে পাল্টে গেছে। আমার বিশ্বাস, এই সরকারের উন্নয়নের কথা চিন্তা করে আবারও চারঘাট-বাঘার মানুষ আওয়ামী লীগ সরকারকে ভোট দিয়ে নৌকাকে বিজয়ী করবেন।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, আমার লক্ষ ছিল আগামী ২০২০ সাল নাগাদ চারঘাট-বাঘার ঘরে-ঘরে শতভাগ বিদ্যুতায়ন করবো। আমি সেটা করেছি। তবে এ কৃতিত্ব আমার নয়, এ কাজের প্রশাংসার দাবিদার প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি আরও বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকা চারঘাট-বাঘায় গেলে এখন অনেক ভালো লাগে। বিশেষ করে দুই উপজেলার ৩টি পৌর সভার আদলে পৌর এলাকার সব রাস্তায় এখন আলো দেখতে পাওয়া যাই। এর বাইরেও ইউনিয়ন পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ মোড় এবং বাজারগুলোয় বসানো হয়েছে সৌর বিদ্যুৎ ল্যাম্প পোস্ট। এর ফলে মানুষের জীবন যাত্রা পাল্টে গেছে।
সার্বিক বিষয়ে বাঘা পল্লি বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার শ্রী -সুবীর কুমার দত্ত বলেন, বিগত সময়ে ঘন-ঘন লোডশেডিং হলেও বর্তমান সরকার আমলে এখানে দুটি উপকেন্দ্র চালু হওয়ার পর থেকে প্রতিটি গ্রামে শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহসহ বিদ্যুৎ সেক্টরে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এর ফলে মানুষের জীবন মানের আমূল পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তিনি এই উন্নয়নের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।