মানিকগঞ্জের অধিকাংশ সড়ক সংস্কার হলেও পৌর এলাকার আন্দারমানিক-জয়নগর সড়কের দায়িত্ব নিচ্ছে না কোনো দপ্তর। ফলে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে এলাকাবাসী। গুরুত্বপূর্ণ ঐ সড়কে নিয়মিত দুর্ঘটনাসহ নানা ভোগান্তিতে পড়ছে যানবাহন চালকরা। তবুও চোখে পড়ছে না কোনো জনপ্রতিনিধির—এমন অভিযোগ স্থানীয়দের। পৌর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা আর এলজিইডি ও সওজ অধিদপ্তরের ঠেলাঠেলিতে সাত বছর ধরে সড়কের বেহাল অবস্থা।
জানা যায়, পৌরসভার অধীনে না থাকা সত্ত্বেও মানুষের ভোগান্তি বিবেচনা করে এই গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সংস্কারের জন্য ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ৩৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় পৌর কর্তৃপক্ষ। সঠিকভাবে কাজ না হওয়ায় সড়কে আবারও খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। মানিকগঞ্জের পৌর এলাকার বেউথা-আন্ধারমানিক সড়কটির বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে একদিকে যেমন চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে অন্যদিকে সৃষ্টি হচ্ছে প্রচুর ধুলোবালি। যা অনেকটা মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা।
স্থানীয়রা জানান, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা, হরিরামপুর, ঘিওর, শিবালয়, দৌলতপুরসহ প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষের চলাচল এই সড়ক দিয়ে। আন্ধারমানিক এলাকার বাসিন্দা আমিরুল ইসলাম আক্কাস জানান, এই গুরুত্বপূর্ণ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের যাতায়াত। জেলার স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে এই এলাকায়। ছাত্রছাত্রীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়তই স্কুলে যাতায়াত করে। এই রাস্তায় প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটছেই। সামান্য বৃষ্টিতে সড়কে হাঁটু পানি খানাখন্দ ভরে যায়। পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের জনগণ খুব ভোগান্তিতে আছে এ সড়কের কারণে। আন্ধারমানিক গ্রামের বাসিন্দা ছামাদ বলেন, সড়কে বড় বড় গর্ত হয়েছে। এই সড়ক দিয়ে চলাচলে বিশেষ করে বৃদ্ধ, শিশু, রোগী ও গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। কালীগঙ্গা নদীর তীর থেকে বড় বড় ট্রাকে করে বালু-মাটি পরিবহনের কারণে সড়কের খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। এই শুকনো মৌসুমে সড়কে প্রচুর ধুলাবালি থাকে আর বর্ষা মৌসুম এলেই হাঁটু পর্যন্ত পানি জমে যায়। এতে গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের বেউথা থেকে আন্ধারমানিক পর্যন্ত দুই কিলোমিটার এলাকা বেহাল অবস্থা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বেউথা তিন রাস্তার মোড় থেকে আন্ধারমানিক তিন রাস্তার মোড় পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন স্থানে ইট বিছানো হলেও তা উঠে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে।
মানিকগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী বেল্লাল হোসেন বলেন, আন্দারমানিক- জয়নগর সড়ক এলজিইডি দেখভাল করে। ইতিমধ্যে ঐ সড়ক সংস্কারের জন্য টেন্ডার হয়েছে এবং ঠিকাদার নিয়োগ করেছে এলজিইডি।
মানিকগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, ঐ সড়ক তাদের আওতাধীন নয়।
তাই এ বিষয়ে তিনি কিছু বলতে নারাজ। মানিকগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফয়জুল হক বলেন, ঐ সড়ক সংস্কারের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে টেন্ডার করা হয়েছে। ঠিকাদার নিয়োগের চেষ্টা চলছে। জনস্বার্থে খুব শিগগিরই ঐ সড়কের কাজ শুরু হবে।