শুক্রবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
দৈনিক ইত্তেফাক

পাটের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় লোকসানে পাইকগাছার চাষীরা

আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৫:১৬

চলতি মৌসুমে পাইকগাছায় পাটের আঁশ ভালো হলেও হঠাৎ পাটের দাম কমে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায়  পড়েছেন চাষিরা। পাট চাষে উৎপাদন খরচ বাড়লেও বাজার দর নিন্মমুখী হওয়ায় ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না কৃষক।

দাম কমে যাওয়ায় হতাশাজনক পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন কৃষকরা। ফলে উৎপাদন খরচ তুলতে না পেরে পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হওয়ার পথে কৃষকরা। এমন পরিস্থিতিতে আগামী মৌসুম থেকে অনেকে পাট চাষ ছেড়ে দেওয়ার কথাও ভাবছেন।

এ প্রসঙ্গে উপজেলার কপিল মুনির পাট চাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পাট চাষের সময়  এবার নানা বিড়াম্বনার শিকার হয়েছিলাম, ভালো জো পাইনি। তারপর বড় সমস্যা পাট জাগ দেওয়ার জায়গা পাওয়া যায় না খানাখন্দের অভাবে, বেশির ভাগ জায়গা ভরাট হয়েছে সব খানেতেই। পাটের আবাদের প্রতি কৃষকদের আগ্রহ কিছুটা কমে এসেছে। কারণ পাট পচানোর সমস্যা। এখন পুকুর-জলাশয় মাছ চাষের আওতায় এসেছে। ফলে মাছ চাষ করা পুকুর-জলাশয়ে পাট পচানো সম্ভব হচ্ছে না। বীজ বপণের সময় খরা হওয়ায় ঠিকমতো চারা গজায়নি। এতে ব্যাহত হয়েছে পাটের ফলন।’

পাটচাষী মশিয়ার রহমান গাজী বলেন, ‘প্রতি বিঘা জমিতে হালচাষ ও বীজ বপণ থেকে শুরু করে সার-কীটনাশকের খরচ, পানি সেচ শ্রমিক খরচ, জাগ দেয়া, আঁশ ছড়াানোসহ ঘরে তোলা পর্যন্ত  খরচ পড়েছে ১৫-১৬ হাজার টাকা। অথচ মৌসুমের শুরুতে বাজারে পাট ২৫০০-২৬০০ টাকা বিক্রি হলেও, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ১৯০০-২০০০ টাকা মণ। অথচ গত বছরে এই পাট ৩০০০-৩৫০০ টাকা বিক্রি হয়।’

পাটের দাম কম হলেও পাটকাঠির প্রচুর চাহিদা ও দাম বেশি হওয়ায় পাট চাষীরা খরচ বাঁচানোর চেষ্টা করছে। ছোট ছোট আটি হিসাবে ৩৫-৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। জ্বালানি হিসাবে গৃহবধুদের কাছে পাটকাঠির চাহিদা খুব বেশি। পাটকাঠি দিয়ে সহজে উনুন জ্বালানো যায় ও সহজে রান্না করা যায়, এইজন্য গৃহবধুদের কাছে পাটকাঠির চাহিদা বেশি,তাছাড়া বেড়াও দেওয়াযায়। উপজেলার গদাইপুর গ্রামের পাটচাষী কেসমত সরদার জানান, শ্রমিকের দাম বেশি হওয়ায় পাটের আবাদে খরচ মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারপরও পাটকাঠির দামের উপর নির্ভর করে পাট চাষ করছি।

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৩৯০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এ এইচ এম জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আবহাওয়া অনূকুলে থাকায় পাটের আবাদ ভাল হয়েছে। সরকার পাটচাষিদেরও প্রণোদনা দিচ্ছে যাতে নতুন জাতের পাটের চাষাবাদ বাড়ে। রবি-১ পাটের নতুন জাত, এরজন্য প্রণোদনা রয়েছে। পাটের দাম আপাতত কিছুটা কম হলেও খুব দ্রুত সময়ে দাম বেড়ে যাবে বলে আশা  করেন তিনি। দাম বাড়লে কৃষক লাভবান হবে এবং ভবিষ্যতে উপ জেলায় পাট চাষির সংখ্যা বাড়বে।’

ইত্তেফাক/এইচএ