অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠার জন্য সংস্কার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে শ্রীলঙ্কার প্রশংসা করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি মিশন। তবে সংকট এখনো পুরোপুরি কেটে যায়নি। সম্প্রতি শ্রীলঙ্কা সফর শেষে এক বিবৃতিতে আইএমএফ মিশনটি বলেছে, অর্থনীতির ব্যাপক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শ্রীলঙ্কার মানুষ সামর্থ্যের পরিচয় দিয়েছে। কঠিন ও বহুল প্রত্যাশিত সংস্কারগুলো বাস্তবায়নে প্রশংসনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে শ্রীলঙ্কা। এতে দেশটির অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতার প্রাথমিক আভাসও মিলছে।
শ্রীলঙ্কাকে ২৯০ কোটি ডলারের ঋণ দেওয়া সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় পর্যালোচনা করেছে আইএমএফ মিশন। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়, কাঠামোগত সংস্কারে শ্রীলঙ্কা ধারাবাহিক উন্নতি করছে। ব্যাংক খাতের সমস্যা চিহ্নিত করে তার সমাধানে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ সম্পর্কিত বিষয়ে পার্লামেন্টে নতুন আইন পাশ হয়েছে। এসব আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন হলে দেশটিতে সুশাসন বাড়াবে।
তবে স্থিতিশীলতার প্রাথমিক এই আভাস সত্ত্বেও দেশটিতে পূর্ণাঙ্গ অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নয় বলে মনে করছে আইএমএফের মিশন। তারা বলেছে, শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি এখনো শ্লথ। এমনকি চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) মোট দেশজ উত্পাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ দশমিক ১ শতাংশ কমে গেছে।
আইএমএফ মিশন জানায়, সাম্প্রতিক কয়েক মাসে দেশটির বৈদেশিক রিজার্ভ বাড়ানোর গতিও কমে গেছে। আরো কিছু অর্থনৈতিক সূচক মিশ্র প্রবণতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। অর্থনীতির সমস্যা পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে সামষ্টিক অর্থনীতি ও আর্থিক স্থিতিশীলতা, টেকসই ঋণ ব্যবস্থাপনা, দরিদ্রদের সুরক্ষায় মনোযোগ দেওয়ার পাশাপাশি সংস্কার কর্মসূচি পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়নের পরামর্শ দিয়েছে মিশন।
আইএমএফের বিবৃতিতে বলা হয়, শ্রীলঙ্কায় মূল্যস্ফীতির হার অনেক কমে এসেছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে দেশটিতে মূল্যস্ফীতির হার পৌঁছায় ৭০ শতাংশে। এ বছরের আগস্টে মূল্যস্ফীতি কমে হয়েছে ৪ শতাংশ। চলতি বছরের মার্চ থেকে জুন মাসের মধ্যে শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দেড় বিলিয়ন মার্কিন ডলার বেড়েছে। নিত্যপণ্যের ঘাটতিও কমে এসেছে।