রাজধানীর উত্তরায় ছুরিকাঘাতে যুবক নিহতের ঘটনায় মূল আসামিকে দক্ষিণখানের একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে উত্তরা পশ্চিম থানার পুলিশ। এর আগে বুধবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের বিএনএস সেন্টারের সামনে এই ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে।
নিহতের নাম মো. দেলোয়ার (৩০)। তিনি ময়মনসিংহের পাগলা উপজেলার বড়ই গ্রামের মো. আলাউদ্দিনের ছেলে।
গ্রেপ্তাররা হলেন কিশোরগঞ্জের সাকুয়া গ্রামের জনাব আলীর ছেলে রফিক (৩৮) ও রাজধানীর ভাসানটেক এলাকার আব্দুল হাসেমের ছেলে নাসির (২০)।
উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোর্শেদ আলম বলেন, নিহত দেলোয়ার তার মা-বাবা ও ভাইসহ বাসার মালামাল নিয়ে ঢাকার ডেমরা থেকে একটি পিকআপ করে ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। পিকআপের ড্রাইভারের পাশে বাবা-মা এবং পেছনে ভুক্তভোগী ও তার ভাই বসা ছিল। রাত তিনটার পর উত্তরার বিএনএস সেন্টারের পাশে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উড়ালসেতুর পাশে পৌঁছায়। সেখানে জ্যামের মধ্যে পিকআপটি দাঁড়ালে এক ছিনতাইকারী তার পকেটে থাকা মোবাইল ও টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।
এ সময় ভুক্তভোগী ও তার ভাই ছিনতাইকারীদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। একপর্যায়ে তাদেরকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পুলিশ তাদেরকে উদ্ধার করে
হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দেলোয়ারকে মৃত ঘোষণা করে।
মোর্শেদ আলম বলেন, 'ছিনতাইয়ের ঘটনায় কিছু আলামত উদ্ধার করা হয়। সেই আলামতের ভিত্তিতে আমরা ঘটনার তদন্ত শুরু করি এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মূল আসামিকে দক্ষিণখানের একটি বস্তির বাসা থেকে গ্রেপ্তার করি। তার দেওয়া তথ্যমতে ঘটনায় জড়িত অপর আসামিকে মিরপুরের পুরাতন কচুক্ষেতের সাগরিকা বস্তি থেকে রাতে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিসি মোর্শেদ বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া রকিফুল ইসলামই মূলত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটায়। এ সময় তার সহযোগী হিসাবে ছিল মো. নাসির। তারা দুই জনই দীর্ঘদিনের বন্ধু। উভয়ে দীর্ঘদিন ধরে মাদকসেবন ও ব্যবসা করে। তাদের নামে একাধিক মামলা রয়েছে।
তিনি বলেন, হত্যার সময় তিন ছিনতাইকারী অংশ নিয়েছিল। মোবাইল ছিনতাই করেছিল রফিক। ভুক্তভোগী রফিককে জড়িয়ে ধরলে সেই ছুরিকাঘাত করে। রফিকের সহযোগী হিসেবে আরও দুই ছিনতাইকারী ছিল। তিনজন মিলে এ ঘটনা ঘটায়।
বিমানবন্দর থেকে আব্দুল্লাহপুর মহাসড়কে প্রতিনিয়ত ছিনতাইয়ের কারণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ডিসি মোর্শেদ বলেন, বিমানবন্দর থেকে আব্দুল্লাহপুর সড়কে এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলছে। রাস্তার বিভিন্ন উন্নয়নের কাজ চলছে। যেহেতু গাড়ির গতি এখানে অনেক কম থাকে, যার কারণে প্রতিনিয়তই অনেক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে রমজান মাসে অনেক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ওই সময় আমাদের ছিনতাই প্রতিরোধে বিশেষ টিম থাকে। এছাড়াও প্রতি মাসে ১০০ থেকে ২০০ ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার করা হয়।