ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ময়লা-আবর্জনা পরিবহনের জন্য ভারী যান রয়েছে ৬৭টি। এর মধ্যে প্রায় ৫০টি অচল হয়ে পড়ে আছে। বাকি ১৭টি দিয়ে কাজ চলছে বলে জানা গেছে। এতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফিরছে না। অনেক ক্ষেত্রে ভারী যানের প্রভাব পড়ছে বাসাবাড়ির ময়লা-আবর্জনা সরাতেও। তবে ডিএসসিসি বলছে, প্রতি ওয়ার্ডে বর্জ্য পরিবহনের জন্য খোলা ট্রাক রয়েছে। যার কারণে বর্জ্য পরিবহনে সমস্যা হচ্ছে না।
জানা যায়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় দৈনিক ২ হাজার ৭০০ থেকে ৩ হাজার টন পর্যন্ত বর্জ্য উত্পাদন হয়। এর বাইরেও ১০-১২ টন মেডিক্যালের বর্জ্য রয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। বাসাবাড়ি বা অফিস-আদালত থেকে সংগ্রহ করা ১০টি ভ্যানের বর্জ্য একসঙ্গে স্থানান্তর করা যায় একটি কমপেক্টরে। এসব কমপেক্টরে আলাদা খাঁচার মতো জায়গা থাকে, যেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলার পর চাপ দিয়ে পানি আলাদা করা হয়। এমন কমপেক্টর আছে ২২টি। এর ১৬টি বর্তমানে অচল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বাকি ছয়টি দিয়ে কোনোরকমে কাজ চালানো হচ্ছে।
ডিএসসিসি সূত্রে জানা যায়, ময়লা-আবর্জনা সরানোর কাজে ব্যবহূত ভারী যানবাহনের সংখ্যা ৬৭টি। তবে বাস্তবে ব্যবহার করা যাচ্ছে মাত্র ১৭টি। মোট ১০টি এক্সকাভেটরের মধ্যে অচল ছয়টি, চারটি বুলডোজারের মধ্যে চারটিই অচল, তিনটি হুইল লোডারের মধ্যে একটি অচল, সাতটি হুইল ডোজারের
মধ্যে ছয়টি অচল, দুটি ব্যাক হো লোডারের দুটিই অচল, চারটি কমপেক্ট এক্সকাভেটরের তিনটি অচল, একটি গ্রাবার এক্সকাভেটর সচল অবস্থায় আছে, ডাম্প ট্রাক ১৪টির মধ্যে ১২টি অচল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ময়লা-আবর্জনা পরিবহনে নিয়োজিত গাড়িগুলো অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। এগুলো মেরামত না করার ফলে এখন বর্জ্য অপসারণের কাজ করাই মুশকিল হয়ে পড়েছে। ল্যান্ডফিলে এক্সকাভেটর এবং বুলডোজার স্বল্পতায় দীর্ঘদিন ধরে বর্জ্য জমে ডাম্পিং স্থান সংকীর্ণ হয়ে মাত্র চার থেকে পাঁচটি বর্জ্যবাহী গাড়ি একত্রে আনলোড করা যায়। রাতে একই সঙ্গে আসা ৭০-৮০টি গাড়ি লাইনে অপেক্ষায় থাকতে হয়। পর্যাপ্ত ডাম্প এবং কমপেক্টরের অভাবে ওয়ার্ডে বর্জ্য জমে যাচ্ছে।
কয়েক জন কাউন্সিলরও এ বিষয়ে একই কথা বলেছেন, তাদের দাবি দীর্ঘদিন ভারী যানবাহনগুলো অচল হয়ে পড়ে থাকলেও সেগুলো মেরামত করা বা সমস্যা সমাধান করার বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। এতে সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ওপর প্রভাব পড়ছে। এ বিষয়ে জানতে ডিএসসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা (যুগ্মসচিব) মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরীকে ফোন দিয়েও পাওয়া যায়নি।