সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই অঙ্গরাজ্যের একটি জলাভূমিকে দেখে মনে হবে রূপকথার রাজ্যে হাজির হয়ে গেছেন। মাওয়ির কিয়ালিয়া ন্যাশনাল ওয়াইল্ড লাইফ রেফিউজ হলো মাওয়ি দ্বীপের লোনাপানির জলাভূমিগুলোর একটি। আর এখানকার পানিই অক্টোবরের ৩০ তারিখ থেকে এখন পর্যন্ত উজ্জ্বল গোলাপি রঙ ধারণ করছে। কর্মকর্তারা বলছেন, চরম খরার মধ্যে লবণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়াই এর কারণ। আর এসব তথ্য পাওয়া যায় মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে।
রেফিউজের ব্যবস্থাপক ব্রেট উলফ বলেন, ‘কয়েকজন জলাধারের পাড় ধরে হাঁটতে গিয়ে বিষয়টি দেখে আমাকে ফোন করে জানান, এখানে অদ্ভুত কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে।’ এরপর জলের নমুনা পাঠানো হয় ইউনিভার্সিটি অব হাওয়াইয়ে।
ধারণা করা হচ্ছে, জলাভূমি পানির এই নতুন উজ্জ্বল গোলাপি রঙের পেছনে আছে হ্যালো ব্যাকটেরিয়া। ইউএস ফিশ অ্যান্ড ওয়াইল্ড লাইফ সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, হ্যালো ব্যাকটেরিয়া হলো এককোষী জীব, যা গ্রেট সল্ট লেক বা ডেড সির মতো খুব লবণাক্ত পানির এলাকায় দেখা মেলে বেশি। এ ধরনের চরম পরিবেশে বাস করার ক্ষমতার কারণে ব্যাকটেরিয়াটিকে তথাকথিত এক্সট্রিমোফাইল হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
গত আগস্টে লাহাইনা এলাকায় ভয়াবহ দাবানলের পর থেকে পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে। উয়ি কাউন্টির প্রায় ৯০ শতাংশ এলাকাই দ্বীপ যা গুরুতর খরার মধ্যে রয়েছে। এই খরাও পানির রঙ পরিবর্তনের কারণ হতে পারে। আবার ওয়াইকাপু স্ট্রিমের পানি কেলিয়া জলাধারে গিয়ে পড়ে। তখন জলাধারের পানির উচ্চতা বাড়ে। কিন্তু উলফ বলেন, অতীতে এমনটা হতে দেখা যায়নি। এমনকি স্বেচ্ছাসেবীরাও, যারা নানাভাবে এই বন্য প্রাণী আশ্রয়কেন্দ্রের সঙ্গে প্রায় ৭০ বছর ধরে আছেন, তাঁরাও কখনো এমনটা দেখেননি। আগেও জলাধারটি দীর্ঘ সময় ধরে খরার মধ্য দিয়ে গেছে এবং লবণাক্ততার পরিমাণও বেশি ছিল। ফলে উলফ নিশ্চিত নন, কী কারণে পানির রঙ বদলে গেল।
উলফ বলেন, রঙ বদলে যাওয়া পানিতে এখানকার পাখিদের ক্ষতি হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না।