নিজেদের মাটির বিশ্বকাপে রেকর্ডের পাতা ওলটপালট করে দিয়েছেন বিরাট কোহলি। ভারতীয় তারকা ব্যাট হাতে নিজে করেন একের পর এক রেকর্ড। রেকর্ডবয় কোহলি রেকর্ড গড়লেন গতকাল ফাইনালেও। রান উত্সবে মেতে থাকা কোহলি কাল খেলেছেন ৬৩ বলে ৫৪ রানের ইনিংস। এ নিয়ে এবারের বিশ্বকাপে ১১ ম্যাচে সর্বোচ্চ ৭৬৫ রান হলো তার। বিশ্বকাপের এক আসরে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটি আগের ম্যাচেই গড়েছিলেন কোহলি। গতকাল নিজের রেকর্ডটা এমন একটা জায়গায় নিয়ে থামালেন, তার যে রেকর্ডটি পরবর্তীদের জন্য ভাঙার স্বপ্ন দেখাটাও কঠিন হবে।
যাই হোক, গতকাল ৫৪ রান করার পথে গড়েছেন প্রথম ভারতীয় হিসেবে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল ও ফাইনালে ৫০ ঊর্ধ্ব ইনিংস খেলার রেকর্ড। এর আগে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেমিফাইনালে খেলেছিলেন ১১৩ বলে ১১৭ রানের ইনিংস।
ভারতীয় এই রেকর্ড গড়া কোহলি নাম লিখিয়েছেন জাভেদ মিয়াঁদাদ, অরবিন্দ ডি সিলভা, স্টিভেন স্মিথ, ডেভিড বুন, মাইক বেয়ার্লি, গ্র্যান্ট এলিয়টদের পাশে। মানে ইতিহাসের মাত্র ৭ম ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল ও ফাইনালে ৫০ ঊর্ধ্ব ইনিংসের মালিক বনে গেলেন কোহলি। এই সাত জনের মধ্যে সেমিফাইনাল ও ফাইনাল মিলিয়ে হাফসেঞ্চুরি ও সেঞ্চুরি কীর্তি আছে মাত্র তিন জনের। এই তালিকারও একজন কোহলি। বাকি দুজন শ্রীলঙ্কার সাবেক কিংবদন্তি অরবিন্দ ডি সিলভা ও অস্ট্রেলিয়ার স্টিভেন স্মিথ। এদের মধ্যে ডি সিলভা সেঞ্চুরি করেছিলেন ফাইনালে। কোহলি ও স্মিথ সেঞ্চুরি করেছেন সেমিফাইনালে।
সেমিফাইনাল ও ফাইনালে ৫০ ঊর্ধ্ব ইনিংস খেলার প্রথম কীর্তি গড়েন ইংল্যান্ডের মাইক বেয়ার্লি, ১৯৭৯ বিশ্বকাপে। তবে ফাইনালে তার দল হেরে যায় ইংল্যান্ডের কাছে। দ্বিতীয় বার এই কীর্তি গড়েন ডেভিড বুন। ১৯৮৭ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়াকে প্রথম বারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন করার পথে তিনি সেমিফাইনাল ও ফাইনাল, দুই ম্যাচেই হাফসেঞ্চুরি করেছিলেন।
১৯৯২ বিশ্বকাপে একই কীর্তি গড়েন পাকিস্তানের ‘বড়ে মিয়া’ খ্যাত জাভেদ মিয়াঁদাদ। ১৯৯৬ বিশ্বকাপে সবাইকে ছাপিয়ে অরবিন্দ ডি সিলভা ভারতের বিপক্ষে সেমিফাইনালে হাফসেঞ্চুরি (৪৭ বলে ৬৬) ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ফাইনালে করেন সেঞ্চুরি। দলের বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে খেলেন ১২৪ বলে অপরাজিত ১০৭ রানের অসাধারণ এক ইনিংস। ১৯৯৯, ২০০৩, ২০০৭ ও ২০১১-টানা এই ৪টি বিশ্বকাপে কেউ এমন কৃতিত্ব দেখাতে পারেননি। ২০১৫ বিশ্বকাপে গিয়ে আবার এই কীর্তি গড়েন দুজনে। স্টিভেন স্মিথ ও গ্র্যান্ট এলিয়ট।
এর মধ্যে স্মিথ ভারতের বিপক্ষে সেমিফাইনালে সেঞ্চুরি (৯৩ বলে ১০৫) এবং দলকে পঞ্চম বারের মতো চ্যাম্পিয়ন করার পথে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ফাইনালে করেন হাফসেঞ্চুরি (৫৬)। গ্র্যান্ড এলিয়ট দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেমিফাইনালে খেলেন অপরাজিত ৮৪ ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ফাইনালে খেলেন ৮৩ রানের ইনিংস। ২০১৯ বিশ্বকাপে এমন কীর্তি করতে পারেনি কেউ। তবে ২০২৩ বিশ্বকাপে এসে কোহলি গড়লেন স্মিথের মতো সেঞ্চুরি ও হাফসেঞ্চুরির কীর্তি।