আইরিশ লেখক পল লিঞ্চ তার পঞ্চম উপন্যাস ‘প্রফেট সং’-এর জন্য ২০২৩ সালের বুকার পুরস্কার জিতেছেন। বিচারকদের প্রধান এসি এডুগিয়ান উপন্যাসটিকে মর্মস্পর্শী সত্য উপন্যাস বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘উপন্যাসটিতে আমাদের বর্তমান সময়ের সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতাগুলো দারুণভাবে ফুটে উঠেছে।’
শরণার্থীসংকট ঘিরে একনায়কতন্ত্র, গৃহযুদ্ধ আর মানুষের দুর্দশা নিয়ে লেখা উপন্যাস ‘প্রফেট সং’-এর জন্যই মর্যাদাপূর্ণ ‘বুকার’ পুরস্কার জিতেন পল লিঞ্চ। সংক্ষিপ্ত তালিকায় থাকা পাঁচ জন প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে এই পুরস্কার জিতেছেন ৪৬ বছর বয়সি লিঞ্চ। উপন্যাসটিতে একটি কল্পিত আয়ারল্যান্ডের কথা বলা হয়েছে। সেখানে তিনি এমন একটি পরিবারের গল্প বলেছেন, যেখানে পরিবারের সদস্যরা ভয়ংকর এক নতুন বিশ্বের সঙ্গে লড়াই করছে, আর সেখানে গণতান্ত্রিক নিয়মকানুন ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। উপন্যাসটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য এর কোনো অনুচ্ছেদে বিরতি নেই। এটি লিঞ্চের লেখা পঞ্চম উপন্যাস। উপন্যাসটি লিখতে শুরু করার সময় লিঞ্চের ছেলের জন্ম হয়, আর লেখা শেষ করতে করতে তার ছেলে সাইকেল চালাতে শিখে গেছে।
পুরস্কার গ্রহণের সময় লিঞ্চ বলেন, ‘অনেক বছর আগে আমি একবার ইউরোপের সিসিলিতে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলাম। তখনই প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, আমাকে লিখতে হবে। এটিই আমার জীবনের লক্ষ্য। আমি আনন্দিত যে, আমি আমার সিদ্ধান্তে অটল থাকতে পেরেছি এবং শেষ পর্যন্ত বুকারকে আয়ারল্যান্ডের বাড়িতে নিয়ে আসতে পেরেছি।’ পল লিঞ্চ স্পষ্টভাবে বলেন, এটি কোনো রাজনৈতিক উপন্যাস নয়। তবে উপন্যাসটিতে যা বলা হয়েছে, তা যুগে যুগে সব সময়ে ঘটেছে।
লিঞ্চের জন্ম ১৯৭৭ সালে লিমেরিকে। তিনি বেড়ে ওঠেন কাউন্টি ডোনেগালে। আর এখন বাস করেন ডাবলিনে। তার অন্যান্য উপন্যাসগুলো হলো বিয়ন্ড দ্য সি, গ্রেস, দ্য ব্ল্যাক স্নো এবং রেড স্কাই ইন মর্নিং। এর আগে ২০১৮ সালে আরেক আইরিশ লেখক আনা বার্নস বুকার পুরস্কার জিতেছিলেন।
উল্লেখ্য, ম্যান বুকার বিশ্বসাহিত্যের অন্যতম মর্যাদাসম্পন্ন পুরস্কার হিসেবে বিবেচিত। প্রতি বছর বিগত এক বছরে প্রকাশিত পূর্ণ দৈর্ঘ্যের উপন্যাসের জন্য এই পুরস্কার দেওয়া হয়। তবে এই পুরস্কারের কিছু শর্তাবলি রয়েছে, যেমন—লেখককে অবশ্যই কমনওয়েলথ, জিম্বাবুয়ে অথবা আয়ারল্যান্ডের নাগরিক হতে হবে এবং উপন্যাসটি ইংরেজি ভাষায় রচিত হতে হবে। পুরস্কার হিসেবে লিঞ্চ পাবেন ৫০ হাজার পাউন্ড। —বিবিসি ও দ্য গার্ডিয়ান