মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৫ ফাল্গুন ১৪৩১
The Daily Ittefaq

প্রাথমিকে কারো স্কুল সকাল ১০টায়, কারো ভোরে!

শিক্ষার দুই মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে সমন্বয়হীনতার অভিযোগ

আপডেট : ২৩ জানুয়ারি ২০২৪, ০৭:০০

সারাদেশে চলমান শৈত্যপ্রবাহের কারণে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম সকাল ১০টায় শুরুর নির্দেশনা দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। গতকাল প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রণালয় থেকে এ নির্দেশনা জারি করা হয়। এতে আরও বলা হয়, দিনের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামলে আগের জারি করা নির্দেশনা যথারীতি বহাল থাকবে, অর্থাৎ ১০ ডিগ্রির নিচে থাকলে পাঠদান বন্ধ থাকবে।

বর্তমানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রণালয়ের এক শিফটের স্কুলগুলো সকাল ৯টায় শুরু হয়ে চলছে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত। আর দুই শিফটের স্কুলগুলো সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে চলছে বিকাল সোয়া ৪টা পর্যন্ত। শৈত্যপ্রবাহের কারণে সকালের শিফটের ক্লাস সকাল ১০টায় শুরু হবে। তাহলে দুই শিফটের স্কুলের দ্বিতীয় শিফট কখন শুরু হবে—এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এগুলো স্থানীয়ভাবে প্রধান শিক্ষক সমন্বয় করে নেবেন।

বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম এ বিষয়ে গতকাল ইত্তেফাককে বলেন, সরকারের এ নির্দেশনাটি খুব কম দিনের জন্য, আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। ফলে দুই শিফট চালাতে খুব একটা সমস্যা হবে না। কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর ক্লাসের সময় কমিয়ে এনে সমন্বয় করা হবে।

অন্যদিকে শিক্ষামন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক সংযুক্ত প্রাথমিক স্কুলগুলোর জন্য এমন কোনো নির্দেশনা নেই। ফলে দ্বিধায় পড়েছেন অভিভাবক, শিক্ষার্থী, এমনকি শিক্ষকরাও। তাদের বক্তব্য, একই বয়সের শিক্ষার্থী কারো স্কুল সকাল ১০টায়। আবার কারো স্কুল খুবই ভোরে। এ বিষয়টিকে তারা দুই মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়হীনতা হিসেবে দেখছেন।

শিক্ষামন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ রুটিন অনুযায়ী, এক শিফটের স্কুলগুলো সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলছে। আর দুই শিফটের স্কুলগুলো চলছে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ৫টা পর্যন্ত। প্রথম শিফট সাড়ে ১২টায় শেষ হয়ে দ্বিতীয় শিফট শুরু হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপকে বেলাল হোসাইন বলেন, ‘আমাদের এক শিফটের স্কুল যেহেতু ১০টায় শুরু হয়। এ কারণে এই স্কুলের জন্য কোনো সমস্যা নেই।’ দুই শিফটের স্কুলের বিষয়ে তিনি বলেন, সকালের শিফট সাড়ে ৭টায় চালু হয়ে শেষ হয় সাড়ে ১২টায়। যদি এই শিফট ১০টায় শুরু হয়, তাহলে স্কুলই চালানো সম্ভব হবে না। কারণ তাহলে এই স্কুলগুলোর দ্বিতীয় শিফট কখন চালু হবে। এতে সমস্যা তৈরি হবে। এ কারণে প্রাথমিকের মতো সব স্কুল ১০টায় করার সুযোগ নেই।

এর আগে ১৬ জানুয়ারি মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা নির্দেশনায় বলা হয়, চলমান শৈত্যপ্রবাহে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এজন্য যেসব জেলায় তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে (সংশ্লিষ্ট আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী) নেমে যাবে, সেসব জেলার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় উপ-পরিচালকরা সংশ্লিষ্ট জেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর একাডেমিক কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিতে পারবেন। এ আদেশের কার্যকারিতা ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বলবত থাকবে। একই দিন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) থেকে আদেশ জারি করে জানানো হয়, তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজও বন্ধ রাখা যাবে।

ইত্তেফাক/এমএএম