৪২৯টি ভুয়া গার্মেন্টস কারখানার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইকে এক সপ্তাহ সময় দিয়েছে হাইকোর্ট। এছাড়া ঐ কারখানাগুলোকে বিজিএমইএর ভোটার হিসেবে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অভিযুক্ত ভুয়া কারখানাগুলোর ট্যাক্স আইডেনটিফিকেশন নম্বর (টিআইএন) ঠিক আছে কি না তা যাচাইয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে সহায়তা করার জন্য বলেছে হাইকোর্ট।
গতকাল সোমবার গার্মেন্টস মালিক ফয়সাল সামাদের দায়ের করা এক রিট আবেদনে বিচারপতি নাইমা হায়দার এবং বিচারপতি কাজী জিনাত হকের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মুস্তাফিজুর রহমান খান।
উল্লেখ্য, ৪২৯টি ভুয়া তৈরি পোশাক কারখানার অস্তিত্ব নিয়ে সম্প্রতি দৈনিক ইত্তেফাকে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। ইতিমধ্যে ৬৭টি কারখানার নাম ঐ নির্বাচনের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে নির্বাচনি আপিল বোর্ড। তবে বাকি কারখানাগুলোর নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের কাছে আবেদন দিয়েছে একটি পক্ষ। এফবিসিসিআই আরবিট্রেশন ট্রাইব্যুনালে গত ৩১ জানুয়ারি ভুয়া ভোটারের বিষয়ে আবেদন দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত তা শুনানির জন্য আসেনি। এ বিষয়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারি আরবিট্রেশন ট্রাইব্যুনালের মহাসচিব বরাবর একটি তাগাদাপত্র দেওয়া হয়। কিন্তু অভিযোগ দেওয়ার পরও এ বিষয়ে কোনো শুনানি হয়নি। এমনকি এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা আদৌ নেওয়া হবে কি না সে বিষয়েও অভিযোগকারীকে কিছু জানানো হয়নি।
রিটকারীর আইনজীবী ব্যারিস্টার মুস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, বিজিএমইএর সদস্য হতে হলে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কারখানার টিআইএন নম্বর থাকতে হবে। রিটার্নও হালনাগাদ থাকতে হবে। যেসব কারখানার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে, সেগুলোর কারো কারো হয়তো কারখানা ছিল। তাদের অনেকে নানা কারণে ব্যবসার বাইরে আছেন। তিনি জানান, যেসব কারখানার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে সেগুলো থেকে ৭০ থেকে ৮০ জনের নাম বিজিএমইএ নির্বাচনের জন্য গঠিত ট্রাইব্যুনাল বাদ দিয়েছে। এরপর সংক্ষুব্ধ হয়ে রিটকারী এফবিসিসিআইয়ের ট্রাইব্যুনালে আপিল করেছেন। কিন্তু সেখানে তারা আপিল নিষ্পত্তিতে দেরি করছেন। এজন্যই রিট করা হয়েছে। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত আজ এ রায় দিলেন। তিনি জানান, বিজিএমইএ বাংলাদেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক সংগঠন। এ সংগঠনের নির্বাহী কমিটিতে যারা যাবেন, তারা যাতে বৈধ ভোটার দিয়ে নেতা নির্বাচিত হতে পারেন, সেজন্য কোর্ট এ আদেশ দিয়েছেন।
আগামী ৯ মার্চ তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর নির্বাচন হওয়ার কথা। নির্বাচনের তপশিল অনুযায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে ভোটার তালিকা তৈরি হর হয়। সে তালিকায় থাকা কয়েক জনের বিষয়ে সন্দেহ হলে ঘটনা সবার সামনে আসে। এর আগে ৪২৯টি প্রতিষ্ঠানের নামে টিআইএন আছে কি না তা পরীক্ষা করে নির্বাচনে অংশ নেওয়া একটি পক্ষ। তাদের অভিযোগ, সদ্য প্রকাশিত প্রাথমিক ভোটার তালিকায় থাকা ৪২৯ জনের কর প্রদানের তথ্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়নি। সম্প্রতি সংগঠনের নির্বাচন আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর ঐ ভোটারদের নাম ও করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) সংবলিত একটি তালিকাসহ আপত্তিপত্র দেওয়া হয়।