মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৫ ফাল্গুন ১৪৩১
The Daily Ittefaq

অবশেষে বাড়ি ফিরলো টেকনাফে অপহৃত ১০ ব্যক্তি

আপডেট : ২৮ মার্চ ২০২৪, ১২:২৬

কক্সবাজারের টেকনাফের পাহাড়ের পাশের জমিতে সবজি খেতের শ্রমিক সহ পৃথক ঘটনায় অপহৃত ১০ জনেই দু'লাখ টাকা মুক্তিপন দিয়ে বাড়িতে ফিরছেন। অপরদিকে পুলিশের দাবি অভিযানের চাপের মুখে দুর্বৃত্তরা তাদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন।

উদ্ধারকৃতরা হলেন-টেকনাফের হোয়াইক্যং ৫ নম্বর ওয়ার্ডের করাচিপাড়ার লেদু মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ শাকিল মিয়া (১৫), বেলালের ছেলে জুনাইদ (১৩), নুরুল আমিনের ছেলে সাইফুল (১৪), শহর আলীর ছেলে ফরিদ (৩৫), নাজির হোছনের ছেলে সোনা মিয়া (২৪), শহর মুল্লুকের ছেলে গুরা পুইত্যা (৩২) ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রইক্ষ্যং উত্তর পাড়ার আলী আকবরের ছেলে ছৈয়দ হোসেন ওরফে বাবুল (৩৩) একই গ্রামের কালা মিয়ার ছেলে ফজল কাদের (৪৭), ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কম্বনিয়া পাড়ার ফিরোজের ছেলে মোহাম্মদ নুর(১৬) ও হ্নীলা রোজারঘোনার আমির হোসনের ছেলে অলী আহমেদ(৩২)।

বুধবার (২৭ মার্চ) রাত ১০ টার দিকে তারা ফেরত আসেন। বিষয়টি জানিয়েছেন ভিকটিম মোহাম্মদ শাকিল মিয়ার পিতা. লেদু মিয়া। তিনি বলেন, মোহাম্মদ শাকিল মিয়া সহ ১০ জনকে গত মঙ্গল ও বুধবার সকালে পাহাড়ি এলাকায় থেকে একদল দুর্বৃত্তরা অপহরণ করেন। অপহরণের পরে দুর্বৃত্তরা তাদের ছাড়তে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করে আসছেন। এ ঘটনায় নিরুপায় হয়ে দু'লাখ টাকা মুক্তিপন দিলে তাদেরকে ছেড়ে দেয়। এর আগে ভিকটিমদের উদ্ধারে পুলিশের টিম একাধিকবার পাহাড়ে অভিযান পরিচালনা করেছিল।

হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ নুর আহমেদ আনোয়ারী বলেন,দিনের পর দিন পাহাড়ি দুর্বৃত্তরা যেহারে অপহরণ বাণিজ্য শুরু করেছেন।এ কারনে স্থানীয় কৃষক,কাঠুরিয়া সহ কোন ব্যক্তি গরু-ছাগল নিয়ে পাহাড়ে কাছে যেতে পারছেনা।নিরাপদে চলাচল করা ঝুঁকিপুর্ণ হয়ে গেছে। কারন দুবৃর্ত্তরা সুযোগ পেলে মানুষ ধরে নিয়ে যাচ্ছেন। মঙ্গল ও বুধবারে ১০ জনকে অপহরণ করেছিল।তাদের মধ্যে কিশোর- যুবক, রাখাল ছেলে ও কাঠুরিয়া ছিল।

এ ব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গনি বলেন, তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অপহরণকারী চক্রের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। এরপর বুধবার সন্ধ্যা থেকে টেকনাফ থানা, হোয়াইক্যং ও বাহারছড়া ফাঁড়ির পুলিশের পাশাপাশি অভিযানে যোগ দেয় র‍্যাব সদস্যরাও। এ অভিযানের এক পর্যায়ে অপহৃত ১০ ভিকটিমকে পাহাড়ে ছেড়ে পালিয়ে যায় অপহরণকারী চক্রটি। এরপর তাদেরকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, এ ঘটনার আগে বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) হ্নীলা ইউনিয়নের পানখালিতে খেত পাহারা দিতে গিয়ে ৫ শ্রমিক অপহরণের শিকার হয়েছিল। পরে তাদেরকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী উদ্ধার করেন। এর আগে শনিবার ৯ মার্চ মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে ৬ বছরের এক মাদ্রাসার ছাত্রকে অপহরণ করা হলেও তাকে এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। 

গত তিন বছরের টেকনাফ উপজেলায় দেড় শতাধিক লোক অপহরণের শিকার হয়েছিল।এবং অপহরণের পরে মুক্তিপন দিতে না পারায় টমটম (ইজিবাইক) ও সিএনজি চালক সহ কক্সবাজার থেকে টেকনাফে বেড়াতে আসা তিন যুবক সহ মোট পাঁচ জন অপহরণের কবলে পড়েছিল।পরে দুর্বৃত্তরা মুক্তিপন না পেয়ে তাদেরকে নির্মম ভাবে হত্যা করে পাহাড়ে রেখে পালিয়ে যায়।

ইত্তেফাক/এএইচপি