দেশে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার। রাজধানীতে বছরে মাথাপিছু প্রায় ২৩ কেজি প্লাস্টিক ব্যবহূত হয়, বাইরের শহরগুলোতে এর পরিমাণ মাথাপিছু ৩ কেজি। প্লাস্টিক বর্জ্য দেশের পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্নক ঝুঁকি তৈরি করছে। প্লাস্টিক বর্জ্য মাটিতে আটকে পানি ও প্রাকৃতিক পুষ্টি উপাদান চলাচলে বাধা দেয়। এতে মাটিতে থাকা অণুজীবগুলোর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটে না, মাটির উর্বরতা হ্রাস পায় এবং শস্যের ফলন কম হয়।
এসব বর্জ্য পোড়ালে কার্বন-মনোক্সাইড উত্পন্ন হয়ে বাতাস দূষিত করে। পুরানো প্লাস্টিক পুড়িয়ে আবার নতুন পণ্য তৈরি করা হচ্ছে, যা পরিবেশের জন্য মারাত্নক ক্ষতিকর। ডাস্টবিনে ফেলা প্লাস্টিক বর্জ্য বৃষ্টির পানির সঙ্গে ড্রেনে চলে যায়, যে কারণে অল্প বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এসব বর্জ্যের জন্য ধবংস হচ্ছে সমুদ্রের জীবনবৈচিত্র্যও। একবার ব্যবহার উপযোগী পণ্য বন্ধে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
প্লাস্টিক বর্জ্যের কারণে সৃষ্ট ভয়াবহ অবস্থা থেকে উত্তরণে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশে প্লাস্টিকের ব্যবহার অর্ধেকে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা তৈরি করেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এই সময়ের মধ্যে প্লাস্টিক পণ্যের উত্পাদন ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনা, প্লাস্টিক বর্জ্য ৩০ শতাংশ কমানো এবং ২০২৬ সালের মধ্যে প্লাস্টিকের পুনঃব্যবহার ৫০ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা করা হয়।
উচ্চ আদালতের নির্দেশনার পর পরিকল্পনা তৈরি করা ইতিবাচক। তবে পরিকল্পনা পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করা জরুরি। এর পাশাপাশি নিজ নিজ জায়গা থেকেও প্লাস্টিক ব্যবহারে সচেতন হওয়া উচিত।
আব্বাসউদ্দিন আহমদ, সিলেট