বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১
The Daily Ittefaq

‘ফেডারেশনে বসেই জিমিকে বাদ দেওয়ার নীলনকশা হয়েছে’

আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৩:২১

নাকে ব্যান্ডেজ, ঠোঁটের ওপর ব্যান্ডেজ। কথাও বলতে পারছেন না রাসেল মাহমুদ জিমি। ঠোঁট উলটে দেখালেন আরও ভয়াবহ দৃশ্য। কেটে গেছে। হকি স্টিকের আঘাতে জিমির এমন করুণ দশা দেখে যে কারো মায়া হবে। আর এভাবেই জিমি দিনের পর দিন হকি খেলছেন। কিন্তু হকি ফেডারেশনের এসব নিয়ে মাথাব্যথা নেই। বল মারার অজুহাতে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়কে রক্তাক্ত করার অভিনব কৌশল প্রয়োগ হয়ে আসছে। এসব বন্ধে ফেডারেশন থেকে কোনো উদ্যোগ নেই। খেলাধুলার দুনিয়ায় ভালো খেলোয়াড়দের রক্ষা করার দায়িত্ব রেফারি, আম্পায়ারদের, এককথা ম্যাচ পরিচালনাকারীদের। এ দেশেই উলটো।

দেশের সেরা খেলোয়াড় জিমি। ২২ বছরের বেশি সময় ধরে টানা খেলে আসছেন, একই ধারায়, একই ছন্দে, দেশের হকি অনুরাগীদের বিনোদন দিয়ে আসছেন। কিন্তু রহস্যজনক কারণে বারবার জিমি হকি ফেডারেশনের কিছু কর্মকর্তার রোষানলে পড়ছেন। জিমির খেলাটা কেমন, তা নিয়ে আলোচনা উঠলে অন্যদের খেলা এমনিতেই ভেসে যায়। জিমি হয়ে ওঠেন অনন্য, অদ্বিতীয়। কিন্তু জিমির খেলার চেয়ে খেলার বাইরের বিষয়গুলো কিছু কর্মকর্তা আলোচনার টেবিলে তুলে আনেন। জিমিকে ঘায়েল করার প্রাণান্তকর চেষ্টা বুঝে ফেলেছেন হকির অনুরাগীরা। 

মাঠে জিমি প্রতিবাদ করেন, আম্পায়ারের কোনো সিদ্ধান্ত ভুল হলে সেটি নিয়ে কথা বলেন। জিমির শত্রুদের কথা হচ্ছে, সে কেন এগিয়ে যাবে আম্পায়ারের দিকে। জিমি মোহামেডানের অধিনায়ক। তাকেই কথা বলতে হবে। আর জিমি হকির আইনকানুন বেশ ভালো বোঝেন। স্বচ্ছ ধারণা রয়েছে তার। ফাঁকি দেওয়া যায় না। আর এসব কারণে অনেকের কাছে জিমি যেন পথের কাঁটা। জিমিকে সরাতে পারলে পুরো মোহামেডানকে কোণঠাসা করা যায়। লিগের শেষ দিনে মোহামেডান-আবাহনীর ম্যাচের জিমি হয়ে উঠলেন প্রধান টার্গেট। তিন হলুদ কার্ডের অপরাধে তাকে মাঠের বাইরে থাকতে হবে। দুই হলুদ কার্ড হলে ক্লাবকে জানানোর বিধান রয়েছে। 

কিন্তু সেই বিধানে বলা আছে অবগত করতে হবে। তাই চিঠি দিয়ে জানানোর প্রয়োজন মনে করেনি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোমিনুল হক সাঈদ। জানিয়েছেন ‘তিন হলুদ কার্ড হলে চিঠি দেওয়া যায়। দুই কার্ডে নয়।’ তাহলে অবগত করবে কীভাবে? সাঈদ বললেন, ‘আমরা জানিয়েছি ম্যানেজারকে’। একটা বড় ক্লাব মোহামেডান, সেই দলের অধিনায়ক এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে মাঠের বাইরে থাকার কথাটা জানিয়ে একটা চিঠি দিলে আজ এত কথা উঠত না। কিন্তু ফেডারেশন সে পথে যেতে রাজি না। অন্যদিকে ফেডারেশনের একাধিক কর্মকর্তার দাবি, ‘এটি একটি সেনসেটিভ বিষয়। একটা চিঠি দিলে গঠনতন্ত্রের আইন লঙ্ঘন হতো না।’ মোহামেডানের দাবি, ফেডারেশনে বসেই জিমিকে বাদ দেওয়ার নীলনকশা হয়েছে।’

ইত্তেফাক/জেডএইচ