এমপি-মন্ত্রীদের আত্মীয়-স্বজনদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আনিছুর রহমান বলেছেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য কারো আত্মীয়-স্বজনের বিষয়ে আইনে কিছু বলা নেই। আইনে বলা আছে, যিনি প্রাপ্তবয়স্ক এবং যিনি ভোটে অংশগ্রহণের যোগ্যতা সম্পন্ন সে অংশগ্রহণ করতে পারবে।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে কুমিল্লা জেলা শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা ও আইন-শৃংখলা বাহিনীর সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা গোয়েন্দা মাধ্যমে যে তথ্য পাই তাতে তেমন সমস্যা দেখি না। দু-একটি জায়গায় বিচ্ছিন্ন সমস্যা রয়েছে। তা আমরা কঠোর নজদারিতে রেখেছি। যদি বড় ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করে, আমরা তা মেনে নেব না। আমরা নির্বাচন স্থগিত করা, প্রার্থীতা বাতিল করার ব্যবস্থাও নিতে পারি।
ইসি আনিছুর বলেন, জাতীয় নির্বাচনের থেকেও উপজেলা নির্বাচনে বেশি ভোটার থাকবে বলে আশা করছি। সে জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ সকল প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের কঠোর হতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অনিয়ম হলে ভোট বাতিল করার ক্ষমতা আছে নির্বাচন কমিশনের।
কমিশনার আরও বলেন, আগামী ৮ মে প্রথম ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। পর্যায়ক্রমে সকল ধাপেই সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারব। নির্বাচনে কোনো ধরণের অনিয়ম আমরা মেনে নিব না। যেকোনো অভিযোগ পাওয়া গেলেই সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মাঠপ্রশাসন ও আইন-শৃংখলা বাহিনীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ভোটগ্রহণে কারো ভয়ভীতি বা প্রভাবে কর্মকর্তারা কুণ্ঠিত না হয়ে যখন যা জানবে, তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ভোটগ্রহণ সংশ্লিষ্টদের যে কোনো প্রয়োজনে মাঠপর্যায়ে কর্মরত বিভাগীয় কমিশনার, ডিআইজি, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের কাছে তাৎক্ষণিক সহায়তা চাইবেন। সমস্যা সমাধানে তারা সমর্থ না হলে আমাকে জানাবেন। তাহলে সঙ্গে সঙ্গে কমিশন সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। আচরণবিধি লংঘনে যেখানে যা করা দরকার, সেখানে তাই করা হবে। যিনি যত প্রভাবশালী হোক না কেন, তাকে তো ভোটারের মাধ্যমে ভোট নিতে হবে। ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসতে বাধা প্রদান করার কোনো বিষয় নজরে আসলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সর্বোপরি ভোট বাতিল করার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের রয়েছে।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার বলেন, মতবিনিময় সভায় অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে বলেছি।
এর আগে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আনিছুর রহমান। এ সময় তিনি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।
সভায় আরও বক্তব্য দেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নূরে আলম মিনা, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান, পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. দুলাল তালুকদারসহ অনেকে।
অনুষ্ঠানে কুমিল্লা, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনী, নোয়াখালী ও ল²ীপুর জেলার সকল জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, নির্বাচন কর্মকর্তাসহ মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন এবং তারা নির্বাচনের বিষয়ে মতামত তুলে ধরেন।