জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের ফলাফল বাংলাদেশের পক্ষে থাকলেও পারফরম্যান্স হতাশাজনক। দলের তিন ডিপার্টমেন্টের মধ্যে শুধু বোলিং ডিপার্টমেন্টই সিরিজ জয়ে কার্যত ভূমিকা রেখেছে। তবে হতশ্রী ব্যাটিং ও ঢিলে ফিল্ডিং সিরিজে বাড়িয়েছে শুধু অস্বস্তি। তবে এর মধ্যেও স্বস্তি খুঁজে পাচ্ছেন টাইগার অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তার মতে, বিশ্বকাপের আগে এই সিরিজে দলকে নিয়ে যত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পরিকল্পনা ছিল সবগুলোতেই প্রায় সফলতা পেয়েছে টাইগাররা।
গতকাল মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সিরিজের শেষ ম্যাচে বড় হারের স্বাদ নেয় স্বাগতিকরা। এতে করে ৪-১ ব্যবধানে শেষ হলো এই সিরিজ। পরে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এই সিরিজে নিজেদের প্রাপ্তি নিয়ে অধিনায়ক বলেন, ‘খুব ভালো একটা সিরিজ গিয়েছে। অবশ্যই সিরিজ জিতলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। এই সিরিজে তৃপ্তির জায়গা বলতে যেটা বলব, আমরা যে যে পরীক্ষা-নিরীক্ষাগুলো করেছিলাম, যে যে জিনিসগুলো আমাদের দেখার প্রয়োজন ছিল যে, আমরা ক্লোজ ম্যাচ জিতেছি। টপ অর্ডাররা একটা ম্যাচে ভালো শুরু দিয়েছে, আজকের ম্যাচ যদি দেখেন মিডল অর্ডারে একটু ব্যাটিং করার সুযোগ পেয়েছি তো এই রকম কয়েকটি জায়গা রয়েছে। তো যদি চিন্তা করা যায়, এই সিরিজে অবশ্যই অনেক পজিটিভ দিক আছে এবং আমরা যে জিনিসগুলো আশা করেছিলাম, সেগুলোর বেশ কাছাকাছি যেতে পেরেছি।’
এরপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও প্রাপ্তি জায়গা ব্যাখ্যা করে শান্ত আরও বলেন, ‘কাছাকাছি দিক বলতে স্পিনাররা খুব ভালো বল করেছে। বিশেষ করে রিশাদ পুরো সিরিজে ভালো বোলিং করেছে, শেখ মাহেদীও ভালো করেছে, মাঝখানে ওকে বিরতি দিয়ে তানভীরকে দুই ম্যাচ খেলানো হয়েছে—সেও ভালো করেছে। এই জিনিসগুলো ভালো ছিল। জাকেরের আজকের এবং মাঝখানের একটা ইনিংস সেখানে ও চেষ্টা করেছে নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী দলের জন্যে কিছু করার। তো ছোট ছোট বেশ কিছু জায়গা আছে যেখানে আমরা কাছাকাছি যেতে পেরেছি। কিন্তু এখানে অবশ্যই আরো উন্নতি করার জায়গা রয়েছে, তবে খেলোয়াড়রা সবাই বেশ আত্মবিশ্বাসী।’
এই সিরিজে ফলাফলে স্বস্তি পেলেও ঠিক তার উলটো চিত্র দেখা গিয়েছে টাইগারদের ব্যাটিংয়ে। পুরো সিরিজ? জুড়ে ছিল ব্যাটিংয়ে খানিকটা উন্নতি করার, তবে তা হয়নি। ধারাবাহিক ভাবেই ব্যর্থতার বৃত্তেই ঘুরপাক খাচ্ছিল স্বাগতিকরা। তবে অধিনায়ক জানিয়েছে তার কারণ। এ নিয়ে বলেন, ‘পুরো সিরিজেই উইকেটটা ব্যাটিং সহায়ক ছিল না। তো ব্যাটাররা তার মধ্যে দিয়েই চেষ্টা করেছেন ভালো করার এবং বিপত্তি কাটিয়ে চেষ্টা করেছেন ব্যাটিং করার।’
এছাড়া এই সিরিজে ব্যাটারদের ব্যর্থতার মিছিলে ছিলেন অধিনায়ক নিজেও। চট্টগ্রাম কিংবা মিরপুর কোথায় দেখা যায়নি শান্তর ব্যাটকে অশান্ত হতে। সব মিলিয়ে এ সিরিজের পাঁচ ম্যাচে তার ব্যাট থেকে এসেছে মোটে ৮১ রান। গড় মাত্র ১৬.২০ আর স্ট্রাইক রেট ১০০-র একটু বেশি (১০৩.৮৫)। নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রত্যাশা অনুযায়ী এই সিরিজে আমার পারফরম্যান্স হয়নি। তবে আমি আমার প্রক্রিয়া, ব্যাটিং, স্কিল উন্নতি নিয়ে কাজ করছি। প্রতি সিরিজই ভালো যাবে এমন কিছু না। এটা ইতিমধ্যে অতীত, সামনে চিন্তা করছি ভালো কিছু হবে।’
গেল বছর ভারতে ওয়ানডে বিশ্বকাপে বড় প্রত্যাশা নিয়ে গেলেও ব্যাটিং ব্যর্থতায় হতাশাজনক পারফরম্যান্স করে ফিরেছিল বাংলাদেশ। তবে সেটা এখন অতীত, আর পেছনে ফিরে তাকাতে চান না অধিনায়ক। শান্তর নজর এখন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দিকে। তিনি মনে করেন, যদি ব্যাটিং ব্যর্থতা কাটিয়ে টপ অর্ডারের ব্যাটাররা ভালো শুরু এনে দিতে পারেন, আর দল যদি সেই মোমেন্টটামটা ধরতে পারে তাহলে আসন্ন টুর্নামেন্টে অনেক দূর যাওয়া সম্ভব।
এ নিয়ে শান্ত বলেন, ‘টপ অর্ডারে আমরা যদি আরেকটু ভালো ব্যাটিং করতে পারি তাহলে আমার মনে হয় যে, দলের জন্য ভালো হবে। মোমেন্টটামটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তবে তার সঙ্গে এটাও বলব যে, যেই উইকেটে খেললাম এটা নিয়ে বেশি চিন্তা না করে সামনের দিকে মনোযোগী হওয়া। কিন্তু এই জায়গাটায় যদি ভালো শুরু দিতে পারি, তাহলে সামনের টুর্নামেন্টে দলটা অনেক দূর আগানো থাকবে।’