চীনের সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর বেইজিংয়ের কথিত গণহত্যা এবং উইঘুরদের জোরপূর্বক শ্রমদানে বাধ্য করার অভিযোগ তুলে ২৬টি চীনা তুলা রপ্তানিকারী কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি) এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। —খবর আরটির।
মার্কিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলেজান্দ্রো মায়োরকাস বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র নীতিগতভাবে গণহত্যাবিরোধী; আর আমাদের জাতির সরবরাহ চেইনে বাধ্যতামূলক শ্রমের মাধ্যমে তৈরি পণ্য প্রবেশ করবে তা আমরা বরদাস্ত করতে পারি না। চীনের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ জিনজিয়াংয়ে বসবাসকারী সংখ্যালঘু মুসলিমদের ওপর বেইজিং নির্মম অত্যাচার করছে বলে গত কয়েক বছর ধরে অভিযোগ করে আসছে ওয়াশিংটন। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সময় এই ইস্যুতে ওয়াশিংটনের সঙ্গে বেইজিংয়ের সম্পর্কে ব্যাপকমাত্রায় টানাপড়েন চলেছে। চীনের কমিউনিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে উইঘুর গণহত্যা এবং সেখানকার কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে উইঘুরদের জোরপূর্বক শ্রমদানে বাধ্য করার অভিযোগ করে আসছে ওয়াশিংটন। তবে বেইজিং বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
কাপড়ের সুতা তৈরির উপযোগী তুলা উত্পাদনের জন্য জিনজিয়াং বিখ্যাত। যে ২৬ কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর সবই জিনজিয়াংভিত্তিক। এগুলোর মধ্যে পাঁচটি জিনজিয়াং থেকে তুলা কেনা এবং বাকি ২১টি সেই তুলা যুক্তরাষ্ট্রের পাইকারি বাজারে রপ্তানি করে।
বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে আলেজান্দ্রো মায়োরকাস আরো জানান, উইঘুর ফোর্সড লেবার প্রিভেনশন অ্যাক্ট (ইউএফএলপিএ) নামের একটি মার্কিন আইনের ভিত্তিতে নেওয়া হয়েছে এ পদক্ষেপ। এই আইনের আওতায় এর আগে ২০২১ সালে মার্কিন আমদানিকারকদের জিনজিয়াং থেকে তুলা আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
নিষেধাজ্ঞার আদেশ জারির পর তাকে স্বাগত জানিয়েছেন মার্কিন পার্লামেন্টের কয়েক জন জনপ্রতিনিধি। তাদের মধ্যে ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান উভয় দলের সদস্যরাই রয়েছেন।
অন্যদিকে ওয়াশিংটনে অবস্থিত চীনা দূতাবাস থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে এ প্রসঙ্গে অসন্তোষ জানিয়ে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের কতিপয় রাজনীতিবিদ দীর্ঘদিন ধরে জিনজিয়াংয়ের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার অপচেষ্টা করছেন। সাম্প্রতিক এই পদক্ষেপ সেই চেষ্টারই অংশ।