সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
The Daily Ittefaq

বিস্ময়কর তথ্য

নিউক্লিয়ার ফিউশন বিক্রিয়া গবেষণায় মেয়োনিজ

আপডেট : ১০ আগস্ট ২০২৪, ১৫:৪৪

নিউক্লিয়ার ফিউশন বিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণে মেয়োনিজের কার্যকারিতা নিয়ে গবেষণা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের পেনিসিলভেনিয়ার লেহাই বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন গবেষক। এক বিস্ময়কর তথ্য উঠে এসেছে এই গবেষণায়। খবর এনডিটিভির।

মেয়োনিজের গঠন এবং প্রায়োগিক দিক বিবেচনায় নিয়ে এটিকে নিউক্লিয়ার ফিউশন বিক্রিয়ায় প্লাজমার জটিল আচরণ বোঝার জন্য মডেল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে তারা জানিয়েছেন। 

যুক্তরাষ্ট্রের লেহাই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেকানিক্সের অধ্যাপক অরিন্দম ব্যানার্জি বলেন, আমরা এখনও ফিউশন ক্যাপসুলের গাঠনিক ইন্টেগ্রিটি ও ইনার্শিয়া কনফাইনমেন্ট ফিউশন নিয়ে কাজ করছি। এই গবেষণায় হেলম্যান’র রিয়াল মেয়োনিজ আমাদের সমাধান খুঁজে বের করতে সহায়তা করছে। 

গবেষক দলটি এরিমধ্যে জানিয়েছে, মেয়োনিজ সাধারণ অবস্থায় কঠিন পদার্থ হিসেবে বিবেচনা করা হলেও নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে এটি তরলধর্মী বৈশিষ্ট্যও দেখায়। মেয়োনিজের এই বৈশিষ্ট্যটি ফিউশন বিক্রিয়ার প্লাজমার বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, লেহাই বিশ্ববিদ্যালয় সহজ ভাষায় নিউক্লিয়ার ফিউশন বিক্রিয়ার ব্যাখ্যা দিয়েছে। নিউক্লিয়ার বিক্রিয়া প্রধানত নিউক্লিয়ার ফিশন এবং নিউক্লিয়ার ফিউশন বিক্রিয়াতে ভাগ করা যায়। মূলত সূর্যে যে বিক্রিয়াটি সংগঠিত হয়, সেটিই ফিউশন বিক্রিয়া। ফিউশন বিক্রিয়ায় প্রচুর শক্তি উৎপন্ন হয়। পৃথিবীতে যদি ফিউশন বিক্রিয়া কোনোভাবে ঘটানো যায়, তবে তা সীমাহীন শক্তির উৎস হিসেবে মানব সম্প্রদায়কে শক্তির যোগান দিয়ে যেতে পারে। তবে সূর্যের অবস্থার অনুরূপ পৃথিবীতে তৈরি করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। গবেষক দলটির প্রধান কাজ এই সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করা। এ লক্ষ্যে তারা নানা আঙ্গিকে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

লেহাই বিশ্ববিদ্যালয়ের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানায়, ইনার্শিয়া কনফাইনমেন্ট ফিউশন হচ্ছে এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে ক্যাপসুলগুলো জ্বালানি দ্বারা পূর্ণ থাকে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিউক্লিয়ার ফিউশন বিক্রিয়া দ্রুতগতিতে চালনা করা হয়। মূলত হাইড্রোজেন আইসোটোপ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। উচ্চ তাপমাত্রা ও চাপে এই ক্যাপসুলগুলো গলে প্লাজমাতে পরিণত হয়, পদার্থের সেই প্লাজমা অবস্থা সীমাহীন শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে।

এনডিটিভিকে অরিন্দম ব্যানার্জি আরও বলেন, পদার্থের সেই চরম অবস্থায় পৌছাতে অতি উচ্চ তাপমাত্রা (কয়েক মিলিয়ন কেলভিন) এবং অতি উচ্চ চাপ (গিগাপ্যাসকেল স্কেলে) প্রয়োজন। তবে এই বিক্রিয়ার মূল সমস্যাটি হচ্ছে, প্লাজমা অবস্থায় হাইড্রোজেন অস্থিতিশীল হয়ে যায়। তা শক্তি উৎপাদনের মাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে দেয়।

এর আগে, ২০১৯ সাল থেকে এই গবেষক দলটি মেয়োনিজকে নিউক্লিয়ার ফিউশন বিক্রিয়া বোঝার মডেল হিসেবে ব্যবহার করে কাজ করে আসছে। তাদের এই গবেষণা নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস সন্ধানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সে বছর তাদের একটি গবেষণাপত্রও প্রকাশিত হয়।

ইত্তেফাক/এএইচপি