বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এটা ভালো কথা। তার মানে হলো, আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে। সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়ার মানে অন্যরা কাজ করছে না। আমি মনে করি, যেসব এলাকা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে, সেসব এলাকাতেই সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া দরকার। কিন্তু যেসব এলাকা শান্তিপূর্ণ আছে, যেখানে রাজনৈতিক নেতাকর্মীরাই বিষয়গুলোকে নিয়ন্ত্রণ করছেন; সেখানে সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে নতুন সমস্যা তৈরি করা সমীচীন হবে না, বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। আমি অন্তর্বর্তী সরকারকে অনুরোধ করব, তারা বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করবে। কখনোই এমন কোনো ব্যবস্থা নেবে না, যা সামগ্রিকভাবে তাদের জন্য বুমেরাং হবে, দেশের মানুষের জন্য বুমেরাং হবে।’
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে ঠাকুরগাঁও প্রেস ক্লাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হতাহতদের সঙ্গে মতবিনিময় ও আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা আশাবাদী অন্তর্বর্তী সরকার সব জঞ্জাল দূর করে দেশে এমন একটা পরিবেশ সৃষ্টি করবে, যেখানে সুষ্ঠু উপায়ে একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে জনগণের পার্লামেন্ট তৈরি হবে। রাজনীতিবিদদের রাজনৈতিক কাজ করতে দেওয়া, এটাই সমস্যার একমাত্র সমাধান।
তিনি আরো বলেন, ‘আমি জানি, আমার কথা অনেকের মন মতো না-ও হতে পারে। কিন্তু সত্য উচ্চারণ করা আমার দায়িত্ব। তাই আমি বলছি যে, আপনারা সে কাজগুলো করেন যাতে একটা সংঘাতহীন, সন্ত্রাসমুক্ত ও মানুষের অধিকার যুক্ত ভবিষ্যৎ আমরা দেখতে পারি।’
এদিকে দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল ডিগ্রি কলেজ মাঠে এক জনসভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা স্বাধীন হলেও পুরোপুরি না। কারণ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশ চালাচ্ছে। সে বিএনপির না। আমরা চাই এই সরকার দেশটাকে এমন একটা জায়গায় নিয়ে যাক, যেন ভোট দিতে পারি।
তিনি বলেন, ঘুষ চাইলেই তাকে আইনে দিতে হবে। অন্যায় আমরা করতে দেব না। আওয়ামী লীগ দেশটাকে খোবলা করে ফেলছে। হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা হয়নি। তবে উদ্দেশ্য ছিল ভারতের। আওয়ামী লীগ মানুষকে ভাগ করার চেষ্টা করেছে। আওয়ামী লীগের কোনো ক্ষমা নেই। শেখ হাসিনার ক্ষমা নেই। তার বিচার হবে। যারা দেশ পরিচালনা করছেন, সঠিকভাবে দেশ পরিচালনা করবেন। যেন আবারও খেসারত দিতে না হয়। তাই আমাদেরও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে। দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, পাড়ায় পাড়ায় পূজামণ্ডপগুলো পাহারা দিতে হবে। সনাতন ধর্মের মানুষজন যেন নির্বিঘ্নে তাদের পূজা পালন করতে পারে।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি আতাউর রহমানের সভাপতিত্বে এতে আরো বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য জেড মুর্তজা চৌধুরী তুলা, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিন, জেলা বিএনপির সহসভাপতি ওবায়দুল্লাহ মাসুদ প্রমুখ।