ময়মনসিংহে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ এবং শিক্ষা বোর্ড ঘেরাও করেছে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীরা।
রোববার (২০ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে নগরের কাঠগোলা এলাকায় শিক্ষা বোর্ডের কার্যালয়ের সামনে অকৃতকার্য শতাধিক শিক্ষার্থী অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। ফলাফল বাতিল চেয়ে নানারকম শ্লোগান দেন তারা।
এ সময় শিক্ষা বোর্ডের প্রধান ফটকে পুলিশ অবস্থান নেয়। পরে শিক্ষা বোর্ডের সামনের সড়কে ইট ফেলে ও রাস্তায় বসে অবরোধ করে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এতে ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দুপুর পৌনে ১টার দিকে জোরপূর্বক শিক্ষা বোর্ড ভবনের প্রধান ফটকের বাধা উপেক্ষা করে ভেতরে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীরা বোর্ড চেয়ারম্যান মো. আবু তাহেরের সঙ্গে আলোচনা করে। দীর্ঘ আলোচনা শেষে শিক্ষার্থীরা পুনরায় এইচএসসির ফলাফল প্রকাশের জন্য বেলা তিনটার দিকে বোর্ডে আবেদন জমা দিয়ে চলে যান।
আবেদনে বলা হয়, ১৫ অক্টোবর যে ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে, তা ত্রুটিপূর্ণ ও বৈষম্যযুক্ত। সেখানে তারা তিনটি দাবি জানিয়েছেন। এগুলো হলো, ১৫ অক্টোবর প্রকাশিত ত্রুটিপূর্ণ ও বৈষম্যযুক্ত ফলাফলকে বাতিল ঘোষণা করতে হবে। দেশের সব বোর্ডের সঙ্গে সমভাবে সাবজেক্ট ম্যাপিং করে পুনরায় বৈষম্যহীনভাবে ফলাফল প্রকাশ করতে হবে এবং মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ময়মনসিংহের সব বিষয়ে অধিকাংশ শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হওয়ায় সবাইকে উত্তীর্ণ হিসেবে বিবেচিত করতে হবে।
এর আগে বেলা ১১টায় নগরের টাউন হল মোড়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে এইচএসসিতে অকৃতকার্য শতাধিক শিক্ষার্থী এসে জড়ো হন। 'বৈষম্যহীন রেজাল্ট চাই’, এই দাবিতে শিক্ষার্থীরা তাদের কর্মসূচির ব্যানারে উল্লেখ করে, ‘আমরা রেজাল্টে কোনো রকম বৈষম্য চাই না। যাদেরকে বৈষম্য রেজাল্ট দেওয়া হয়েছে, তাদের মৃত্যুর বিনিময়ে আমরা এমন বৈষম্য রেজাল্ট মানব না।' টাউন হল মোড়ে তারা কিছুক্ষণ অবস্থান পদযাত্রা করে শিক্ষা বোর্ডের কার্যালয় ঘেরাও করে।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানায়, সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ে গরমিল করে ফলাফল তৈরি করা হয়েছে। এই ফলাফল সঠিক হয়নি। এসএসসির ফলাফল অনুযায়ী সব বিষয়ের ম্যাপিং করে বৈষম্যহীন ফলাফল প্রকাশ করার দাবি জানিয়ে গত বৃহস্পতিবার বোর্ড চেয়ারম্যানের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতে কোন কাজ হয়নি। তাই আবারও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে শিক্ষা বোর্ড ঘেরাও করা হয়েছে।
নগরের মুসলিম গার্লস কলেজের মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী হাসিবা আক্তার (হিয়া) বলেন, আমি ফেল করার মতো পরীক্ষা দিইনি। তবুও আইসিটিতে অকৃতকার্য হয়েছি। আমি মনে করি, আমাকে ফেল দেখানো হয়েছে।
ময়মনসিংহ মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের সচিব মো. সফিউদ্দিন সেখ বলেন, অকৃতকার্য শিক্ষার্থীরা তাদের ফলাফল মেনে নিতে পারছে না। তাই আন্দোলন করছে। তাদের স্মারকলিপি আমরা গ্রহণ করেছি।
এ বিষয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবু তাহের বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দেওয়া স্মারকলিপি আমরা আন্তবোর্ডে পাঠিয়ে দেব। শিক্ষার্থীরা যদি পরীক্ষকদের কারণে কোনো ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে, তা আমরা দেখব।