বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ৬ চৈত্র ১৪৩১
The Daily Ittefaq

এইচএসসির সাড়ে ৪ হাজারের বেশি ফল পরিবর্তন

প্রথম মূল্যায়নের সময় পরীক্ষকদের ‘বেশ গাফিলতি’ ছিল বলে মনে করছেন শিক্ষাবিদরা

আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৫০

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে সন্তুষ্ট না হয়ে খাতা চ্যালেঞ্জ করা ৪ হাজার ৫৯৯ জন পরীক্ষার্থীর ফলে পরিবর্তন এসেছে। এর মধ্যে নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৮৬ জন শিক্ষার্থী, ফেল থেকে পাশ করেছে ১ হাজার ১১ জন শিক্ষার্থী আর ফেল থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে এক শিক্ষার্থী। গতকাল মঙ্গলবার এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার খাতা পুনর্নিরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড প্রকাশিত পুনর্নিরীক্ষণের ফল বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য জানা গেছে। বিপুলসংখ্যক পরীক্ষার্থীর ফলাফল পরিবর্তন হওয়া মানে প্রথম মূল্যায়নের সময় পরীক্ষকদের বেশ গাফিলতি ছিল বলে মনে করছেন শিক্ষাবিদরা।

শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ফল পুনর্নিরীক্ষণে এক জন শিক্ষার্থীর লেখা খাতা নতুন করে আবার মূল্যায়ন করা হয় না। চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করলে উত্তরপত্রের চারটি বিষয় দেখা হয়। সেগুলো হলো উত্তরপত্রে সব প্রশ্নের সঠিকভাবে নম্বর দেওয়া হয়েছে কি না, প্রাপ্ত নম্বর গণনা ঠিক হয়েছে কি না, প্রাপ্ত নম্বর ওএমআর শিটে তোলা হয়েছে কি না এবং প্রাপ্ত নম্বর অনুযায়ী ওএমআর শিটের বৃত্ত ভরাট করা হয়েছে কি না। এ চার জায়গায় কোনো ভুল হলে তা সংশোধন করে নতুন করে ফল প্রকাশ করা হয়। এবার এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলে ‘অসন্তুষ্ট’ হয়ে এবার ১ লাখ ৯৮ হাজার ১১৬ জন পরীক্ষার্থী ৫ লাখ ৮ হাজার ১১৬টি খাতা পুনর্নিরীক্ষণ বা রিভিউয়ের আবেদন করে। এর মধ্যে সাধারণ ধারার ৯টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১ লাখ ৮৯ হাজার ৭৬৬ জন শিক্ষার্থী ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৪৮০টি খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করেছে। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে আলিম পরীক্ষার ৭ হাজার ৮১৪টি খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করেছে ২ হাজার ৭১৪ জন। আর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ৫ হাজার ৯০৮ জন পরীক্ষার্থী এইচএসসি ভোকেশনাল, বিএম ও ডিপ্লোমা ইন কমার্স পরীক্ষার ৬ হাজার ৮২২টি খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করে। এবারের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় যে বিষয়গুলোর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে ঐ বিষয়গুলোর ফল পুনর্নিরীক্ষণের সুযোগ শিক্ষার্থীরা পেয়েছে। তবে, সাবজেক্ট ম্যাপিং হওয়া বিষয়গুলোর ফল পুনর্নিরীক্ষণের সুযোগ ছিল না। গত ১৬ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন নেওয়া হয়।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফলে অসন্তুষ্ট হয়ে উত্তরপত্র চ্যালেঞ্জ বা ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করেছিল প্রায় ৬০ হাজার শিক্ষার্থী। পুনর্নিরীক্ষণের সেই ফল বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা হয়েছে। এতে ১ হাজার ৩৩০ শিক্ষার্থীর জিপিএ পরিবর্তন হয়েছে। প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, ফেল থেকে পাশ করেছে ১৩৭ জন। নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২০০ জন। আর ফেল থেকে সর্বোচ্চ ফলাফল বলে বিবেচিত জিপিএ-৫ পেয়েছে এক জন শিক্ষার্থী। ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত ১৫ অক্টোবর এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। প্রথম প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী ঢাকা বোর্ডে পাশের হার ৮৩ দশমিক ৯২ শতাংশ। এ বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৪৯ হাজার ১৯০ জন। সবচেয়ে বেশি ফলাফল চ্যালেঞ্জের আবেদন পড়ে ঢাকা বোর্ডে। আর সবচেয়ে আবেদন কম পড়ে মাদ্রাসা বোর্ডে। ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের ১ লাখ ৮৯ হাজার ৭৬৬ শিক্ষার্থী ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৪৮০টি খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করে।

ইত্তেফাক/এনএন
 
unib