সিরিয়ার বিরোধী যোদ্ধারা রাজধানী দামেস্ক দখলের পর ঘোষণা করেছেন যে দেশটি “মুক্ত”। তারা জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ রাজধানী ত্যাগ করে অজানা গন্তব্যে পালিয়েছেন।
দামেস্কসহ সিরিয়ার বিভিন্ন এলাকায় আনন্দের বন্যা বইছে। প্রতিবেশী লেবাননের সীমান্ত এলাকাগুলোতেও উৎসব শুরু হয়েছে। অনেক বাস্তুচ্যুত সিরিয়ান এখন বাড়ি ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এই ঐতিহাসিক পদক্ষেপ সিরিয়ার ১৩ বছরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের সমাপ্তি এবং আসাদ পরিবারের অর্ধ শতাব্দীর শাসনের অবসান ঘটিয়েছে। বিশ্ব সম্প্রদায়ের বিভিন্ন পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করেছে। খবর আলজাজিরার।
জাতিসংঘ
সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের বিশেষ দূত গিয়ার পেডারসেন বলেছেন, “এখন গুরুত্বপূর্ণ হলো এমন একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া শুরু করা, যা অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে এবং সিরিয়ার ঐক্য, স্থিতিশীলতা ও সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধারে সহায়ক হবে।”
চীন
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা সিরিয়ার পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং দেশটিতে দ্রুত স্থিতিশীলতা ফিরে আসার আশা করছে। চীনা নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সিরিয়ার সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা।
মিশর
মিশরীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সিরিয়ার জনগণের প্রতি সমর্থন জানিয়ে সব পক্ষকে জাতীয় প্রতিষ্ঠান ও ক্ষমতা সংরক্ষণের আহ্বান জানিয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন
ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ কূটনীতিক কায়া কাল্লাস বলেছেন, “আসাদের স্বৈরাচার পতন একটি ইতিবাচক ও বহু প্রতীক্ষিত ঘটনা।” তিনি সিরিয়ার পুনর্গঠনে অংশ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
ফ্রান্স
ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, “অবশেষে বর্বরতার অবসান হয়েছে। সিরিয়ার জনগণের সাহসিকতাকে শ্রদ্ধা জানাই।”
জার্মানি
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস বলেছেন, “আসাদের পতন সিরিয়ার জন্য ভালো খবর। দেশটি এখন রাজনৈতিক সমাধানের পথে এগিয়ে যেতে পারে।”
ইরান
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জাতীয় সংলাপের আহ্বান জানিয়ে সিরিয়ার জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও ঐক্যের প্রতি সম্মান জানিয়েছে।
ইসরায়েল
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আসাদের পতনকে “ঐতিহাসিক দিন” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন এবং বলেছেন, ইসরায়েল তার সীমান্তে শত্রু শক্তির অবস্থান সহ্য করবে না।
লেবানন
লেবাননের সেনাবাহিনী সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে এবং পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
কাতার
কাতার সতর্ক করে দিয়েছে যে আসাদের পতনের পর সিরিয়া যেন নৈরাজ্যের মধ্যে না পড়ে।
রাশিয়া
রাশিয়া জানিয়েছে, বাশার আল-আসাদ আলোচনা শেষে পদত্যাগ করেছেন এবং দেশ ছেড়েছেন। তবে তারা এ আলোচনায় অংশ নেয়নি।
তুরস্ক
তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেছেন, “সিরিয়ার পরিস্থিতি দ্রুত বদলাচ্ছে। নতুন সিরিয়াকে প্রতিবেশীদের জন্য হুমকি হয়ে উঠতে দেওয়া যাবে না।”
বিশ্বজুড়ে সিরিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে, যেখানে স্থিতিশীলতা এবং পুনর্গঠন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।