ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে ফরম্যাটে বাংলাদেশ ধারাবাহিক জয়ের মধ্যেই ছিল। তবে এবারের সফরে সেই টানা জয়ের ধারা ভেঙেছে। শুধু তা-ই নয়, দলটির বিপক্ষে ১০ ম্যাচ পর ধবলধোলাই হওয়ার তিক্ত স্বাদও গ্রহণ করেছে। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে বেশ আত্মবিশ্বাসী ছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
ঐ সিরিজের প্রথম ম্যাচ হারের পর অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ দায় চাপিয়েছিল বোলারদের কাঁধে। শেষ ম্যাচেও একই কাজ করেছিলেন তিনি। এবার ঐ সিরিজ নিয়ে মুখ খুললেন বিসিবি পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিম। জানালেন সিরিজ হারের পেছনে স্পিনারদের ব্যর্থতাই অন্যতম কারণ।
রবিবার সিলেটে চলমান এনসিএল টি-টোয়েন্টি ম্যাচের আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ফাহিম ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে মিরাজদের ওয়ানডেতে ধবলধোলাইয়ের প্রসঙ্গে বলেন, ‘ওয়ানডেতে অনন্ত দুটি ম্যাচে আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা উচিত ছিল। শেষ ম্যাচটায় আমরা যে রান করেছিলাম, তারপর তো জিতবই আশা ছিল। আমার মনে হয় যে, আমাদের পেস বোলাররা শুরুতে যে বোলিংটা করেছিল মাঝখানে, স্পিনাররা সেই ধারাবাহিকতাটা বজায় রাখতে পারেনি। আমরা যখনই ভালো। লো করেছি, দেখেছি যে... রান যতই করি... ৩০০ রানের মতো রান আমরা খুব কমই করেছি, ২৭০ বা ২৮০ রান করলেও মাঝখানে আমাদের স্পিনাররা ভালো বল করেছিল আর তাদের কারণেই কিছু ম্যাচ জিতেছিলাম কিন্তু। যেটা এই জায়গাতে আমরা পাইনি। যখন উইকেট দরকার ছিল, তখন আমাদের স্পিনাররা সেই উইকেটটা দিতে পারেনি বা তারা বেশ খরুচে হয়ে গিয়েছিল ওদের ব্যাটাররা চার্জ (আক্রমণাত্মক ব্যাটিং) করতে পেরেছে। ঐ জায়গাটায় আমরা কিছুটা ব্যর্থ হয়েছি। না হলে প্রথম ম্যাচে যে অবস্থা ছিল, আমাদের পেসাররা শুরুতে এত ভালো বোলিং করেছিল, স্পিনাররা যদি একটু সাহায্য করতে পারত তাহলে ঐটাই জিতে জেতে পারতাম এবং একই কথা শেষ ম্যাচের জন্যও প্রযোজ্য।’
যদিও দলের ফলাফল নিয়ে খুব বেশি হতাশ নন বিসিবির এই পরিচালক। তার মতে স্পিনারদের আরো একটু মনোযোগী এবং সৃজনশীল হলে ফলাফল ভিন্ন হতে পারত। পাশাপাশি এই ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতে উন্নতি করতে পারবে বোলাররা। বলেন, ‘খুব বেশি হতাশ নই (ফলাফল নিয়ে)। যেই কন্ডিশনে খেলা হয়েছে সেটা আমাদের স্পিনারদের জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং। ঠিক কোন লেন্থে বল করতে হবে সেটি বুঝতে বুঝতেই একটু সময় লেগেছে বা যেই লেন্থে বল করতে তারা অভ্যস্ত সেখানে, অনেক সময় সেটি ওরা করে ফেলেছে। সামনে বল করার প্রবণতাটা বেশি দেখেছি আর যেই বলই সামনে গিয়েছে সেটাই ছয় হয়েছে। তো ঐটা যদি আমরা একটু পাশ কাটিয়ে যেতে পারি, আমরা যদি আরো একটু মনোযোগী থাকি যে, ঐ কন্ডিশনে কী ধরনের গতিতে, কী ধরনের লেন্থে বল করতে হবে সেদিকে যদি আরো একটু উন্নতি করতে পারি, তাহলে আমার মনে হয় আমরা ভালো করতে পারব। বিশেষ করে বোলারদের মনোযোগী হতে হবে। ব্যাটাররা অনেক দিন পরে রান পাচ্ছে। উপরে রান হচ্ছে, জুটি হচ্ছে আমরা ভালো একটা সংগ্রহ দাঁড় করাতে পারছি যেটা কিছুটা স্বস্তির কিন্তু বোলারদের আরো একটু ভালো করতে হবে।’
এদিকে আজ থেকে শুরু হওয়া তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিয়েও বেশ আশাবাদী ফাহিম। অবশ্য তিনি এও জানেন যে, শক্তি, সামর্থ্য কিংবা অভিজ্ঞতায় লাল-সবুজের চেয়ে ঢের এগিয়ে রয়েছে স্বাগতিকরা। তবুও সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগালে সাফল্য পাওয়া যেতে পারেন বলে মনে করেন বিসিবির এই পরিচালক।
বলেন, ‘টি-টোয়েন্টিতে ওরা সামর্থ্যের দিক দিয়ে এগিয়ে থাকবেই। কারণ এই ফরম্যাটে ওদের বিশেষজ্ঞ খেলোয়াড় এত বেশি যে, ব্যাটিংয়ে বলি, বোলিংয়ে বলি বা খেলা বোঝার ব্যাপারে সবখানেই এগিয়ে থাকবে ওরা। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, মাঠে নামা মানেই জিতে যাবে ওরা। আমাদের টপঅর্ডার ব্যাটাররা ভালো করছে এবং আশার ব্যাপার এই যে, দুটো ম্যাচে (ওয়ানডেতে) অনেকগুলো ছয় মেরেছি আমরা। সাধারণত এটা দেখি না কিন্তু আমরা। তাতে বোঝা যায়, ছয় মারার ক্ষমতাটা আমাদের অনেক ব্যাটারের আছে। তো সেটা যদি আমরা কাজে লাগাতে পারি আর বোলাররা যদি একটু ভালো বল করতে পারে, ওয়ানডে সিরিজ থেকে যেই অভিজ্ঞতাটা হলো সেটা নিয়ে যদি বোলাররা নিজেদের একটা পরিকল্পনা তৈরি করতে পারে। তাহলে আমার মনে হয়, আমরা আরো একটু ভালো পারফর্ম করতে পারব।’