মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ১১ চৈত্র ১৪৩১
The Daily Ittefaq

ফিলিস্তিনি সংবাদ প্রচারে বাধা দিচ্ছে ফেসবুক

বিবিসি প্রতিবেদনে উঠে এল ‘ছায়া নিষেধাজ্ঞা’র অভিযোগ 

আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১:১১

ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ চলাকালে ফেসবুক ফিলিস্তিনি সংবাদমাধ্যমগুলোর কনটেন্ট দর্শক ও পাঠকদের কাছে পৌঁছাতে বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা ফিলিস্তিনি কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণে কঠোর ভূমিকা পালন করছে। তবে মেটা এ অভিযোগকে মিথ্যা বলে দাবি করেছে।  
 
ফিলিস্তিনি সাংবাদিকেরা বলছেন, তাদের কনটেন্টের ওপর ‘ছায়া নিষেধাজ্ঞা’ জারি করেছে মেটা। এই অভিযোগ অনুসন্ধানে ফিলিস্তিনের ২০টি গুরুত্বপূর্ণ সংবাদমাধ্যমের ফেসবুক পেজের তথ্য পর্যালোচনা করেছে বিবিসি। দেখা গেছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধ শুরুর পর ফেসবুকে ফিলিস্তিনি সংবাদমাধ্যমগুলোর পাঠক সম্পৃক্ততা ৭৭ শতাংশ কমে গেছে।  

উদাহরণস্বরূপ, প্যালেস্টাইন টিভির ৫৮ লাখ ফলোয়ার থাকলেও তাদের কনটেন্ট এখন আগের তুলনায় ৬০ শতাংশ কম মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে। প্যালেস্টাইন টিভির সাংবাদিক তারিক জিয়াদ জানিয়েছেন, তাঁদের পোস্টগুলোর মানুষের কাছে পৌঁছানো প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।  
 
একই সময়ে ২০টি ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমের ফেসবুক পেজের সম্পৃক্ততা পরীক্ষা করেছে বিবিসি। এতে দেখা গেছে, যুদ্ধ–সংক্রান্ত কনটেন্ট প্রকাশের পরও এসব পেজের পাঠক সম্পৃক্ততা প্রায় ৩৭ শতাংশ বেড়েছে।  

এর আগেও ফিলিস্তিনি নাগরিক ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো মেটার বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছিল। ২০২১ সালের এক স্বাধীন প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, মডারেটরদের আরবি ভাষাজ্ঞান সীমিত হওয়ায় নিরীহ শব্দ ও বাক্যাংশকে আক্রমণাত্মক হিসেবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।  

তবে ৩০টি অন্য আরবি সংবাদমাধ্যমের (যেমন স্কাই নিউজ অ্যারাবিয়া ও আল-জাজিরা) ফেসবুক পেজের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এসব পেজের পাঠক সম্পৃক্ততা গড়ে ১০০ শতাংশ বেড়েছে।  

বিবিসির হাতে আসা মেটার ফাঁস হওয়া নথি ও সাবেক কর্মীদের বক্তব্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবরের পর ইনস্টাগ্রামের অ্যালগরিদমে এমন পরিবর্তন আনা হয়, যা ফিলিস্তিনিদের কনটেন্ট মডারেশনে আরও কঠোরতা সৃষ্টি করে।  

মেটার এক প্রকৌশলী জানান, ফিলিস্তিনি কনটেন্টের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিয়ে ভেতরে উদ্বেগ তৈরি হয়। তবে মেটা দাবি করেছে, বিদ্বেষমূলক কনটেন্ট মোকাবিলায় এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি ছিল।  

মেটার এক মুখপাত্র বিবিসিকে বলেন, ‘আমরা কিছু ভুল স্বীকার করছি, তবে নির্দিষ্ট কণ্ঠস্বর দমন করার অভিযোগ মিথ্যা।’ মেটা আরও জানিয়েছে, ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের শুরুর সময় নীতিমালায় কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছিল, যা পরে সংশোধন করা হয়েছে। তবে সংশোধনের নির্দিষ্ট সময় উল্লেখ করেনি তারা।  

গাজায় যুদ্ধের কারণে বহিরাগত সাংবাদিকদের প্রবেশ সীমিত থাকায় ফিলিস্তিনের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের উৎস হয়ে উঠেছে। কিন্তু ফেসবুকের এই নিয়ন্ত্রণ তাঁদের কণ্ঠস্বর আরও স্তব্ধ করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন সাংবাদিকেরা।  

ইত্তেফাক/টিএইচ
 
unib