উসমানের কাছে পিএসএল থেকে বিপিএল এগিয়ে

গেল বছরের বিপিএলে সেঞ্চুরি করে নজর কেড়েছিলেন উসমান খান। পাকিস্তানের ফ্রাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট পিএসএলেও ভালো করেছিলেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতের নাগরিকত্ব ছিল তার। সেখানকার জাতীয় দলে খেলার কথা ছিল। কিন্তু করাচিতে জন্ম নেওয়া উসমান পাকিস্তানের ডাক উপেক্ষা করেননি। এখন তিনি পাকিস্তান জাতীয় দলের ক্রিকেটার। একাদশ বিপিএলের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান তিনি, খেলছেন চিটাগং কিংসের হয়ে। সিলেট পর্ব চলাকালীন এক সাক্ষাৎকারে পিএসএল ও বিপিএলের মধ্যে ভিন্নতার কথা বলেছেন তিনি। যেখানে সুবিধার জায়গা থেকে উসমানের কাছে বিপিএল এগিয়ে। সেই সাক্ষাৎকারে বলেছেন আরও অনেক কথা। দৈনিক ইত্তেফাকের পাঠকের জন্য সেটি তুলে ধরা হলো-

প্রশ্ন: বিপিএলে খেলে কেমন অভিজ্ঞতা হচ্ছে?

উসমান: গেল দুই বছর ধরে আমি খেলছি, খুবই ভালো লাগছে। সেজন্য শুকরিয়া আদায় করি। বাংলাদেশে খেলে বেশ মজাই পাচ্ছি। বিপিএলের মতো ভালো একটি টুর্নামেন্টে খেলতে পেরে ভালো অভিজ্ঞতা হচ্ছে, উপভোগ করছি। অনেক কিছু শিখতেও পারছি। 

প্রশ্ন: গেল বছর বিপিএলে সেঞ্চুরি করে পাকিস্তান জাতীয় দলের নজরে এসেছিলেন। কেমন ছিল সেই যাত্রা?

উসমান: বিপিএলে একটি সেঞ্চুরি পেয়েছিলাম। এর আগে পিএসএলে দুটি সেঞ্চুরি করেছিলাম। গেল বছরে একটি সেঞ্চুরি করেছি। আর পাকিস্তান দলে জায়গা পেতে হলে অবশ্যই পারফর্ম করতে হবে। সেই জায়গা থেকে বিপিএল খেলে অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। হ্যাঁ, বিপিএলে যারা খেলতে আসে তাদের সামনে সুযোগ আসে ভালো পারফরম্যান্স করে নিজেকে প্রমাণ করার। 

প্রশ্ন: বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের কন্ডিশনের মধ্যে পার্থক্য কেমন?

উসমান: ঢাকায় যেটা দেখেছি সেটা অনেকটা একই। প্রথম দুই তিন ওভার টিকে থাকা একটু কঠিন, প্রতিটি বল লক্ষ্য করে খেলতে হয়। পরে যখন উইকেট পরিচিত হয়ে যায় তখন বড় ওভার বের করে নেওয়া সম্ভব। পাকিস্তানের করাচিতে আমরা যেভাবে খেলি, সেখানে উইকেট যেভাবে পাই, তার সঙ্গে অনেক মিল পাই এখানকার কন্ডিশনের।

প্রশ্ন: পিএসএল ও বিপিএলের মধ্যে কোনো পার্থক্য দেখেন?

উসমান: পিএসএলে বিশ্রামের তেমন সুযোগ নেই। এই জায়গা থেকে বাংলাদেশের টুর্নামেন্টটি আলাদা। মাঝে বিরতি পাওয়া যায়। ঢাকা থেকে সিলেটে আসলাম, উইকেটের ধরণ কিছুটা বদলেছে। চিটাগংয়েও ভালো উইকেট পাওয়া যায়। আস্তে আস্তে বাংলাদেশে ভালো একটি জায়গা তৈরি করে নিয়েছে। সকলে খেলে এখানে মজা পাচ্ছেন। পিএসএলে ফাস্ট ট্রাক উইকেট দেখা যায়, যেখানে পেসাররা বাড়তি সুবিধা পান। এটুকুই পার্থক্য রয়েছে আমার চোখে।

প্রশ্ন: বাংলাদেশের পেসারদের কেমন দেখছেন?

উসমান: দলের সকলের সম্পর্কে বলাটা কঠিন। আমি কয়েকজনের কথা বলতে পারি। তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, নাহিদ রানা রয়েছেন, তারা খুব ভালো বল করেন। তাদের বিপক্ষে খেলাটা চ্যালেঞ্জিং, তারা খুব ভালো বল করেন। এর মধ্যে তাসকিন ও মোস্তাফিজের বল খেলেছি। দুজনই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার, দারুণ বল করেন তারা। তাদের বলে ভুগতে হয় ব্যাটারদের, সেটি স্বীকার করতেই হবে। তবে তাদের বল ঠিকভাবে ব্যাটে লাগাতে পারলে রান পাওয়া যায়। 

প্রশ্ন: চিটাগংয়ের হয়ে খেলার কথা ছিল সাকিব আল হাসানের। তাকে মিস করছেন?

উসমান: অবশ্যই। তাকে ভীষণ মিস করছি। তিনি আমাদের দলের খেলোয়াড়। কিন্তু এই মুহূর্তে তিনি দলের সঙ্গে নেই। তাতে কিছুটা ঘাটতি তো থাকছেই। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ক্রিকেটার। পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গায় খেলেছেন, তার অভিজ্ঞতা অনেক বেশি। তিনি আসলে আমাদের দলও অনেক ভালো পারফর্ম করতে পারত। 

প্রশ্ন: চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে পাকিস্তানকে কোন জায়গায় দেখতে চান?

উসমান: এবার পাকিস্তান চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজন করতে চলেছে। টুর্নামেন্টের আগে আমরা দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছি, জিম্বাবুয়ে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জিতেছি। তাতে বেশ ভালোই প্রস্তুতি হচ্ছে, আশা করি আমরা ট্রফি জিততে পারবো। 

প্রশ্ন: বিপিএল খেলতে এসে বাংলাদেশের কোনো খাবার খেয়েছেন?

উসমান: গ্রিল খেয়েছি, বিরিয়ানিও খাওয়া হয়েছে। সকলে একসঙ্গে মিলে বেশ মজা করেই খেয়েছি। তবে ফিটনেস ঠিক রাখার জন্য খাবার একটু বেছে খেতে হয়। 

প্রশ্ন: বাংলা ভাষায় কিছু শিখেছেন?

উসমান: না, এখানকার ভাষায় তেমন কিছু শেখা হয়নি। বিপিএল খেলতে এসে মনোযোগ কেবল ক্রিকেটের দিকেই রয়েছে। এভাবেই যাচ্ছে। শুধু ‘ভালোবাসা’ শব্দটা বুঝতে পারি, আর কিছুই বুঝি না। ভাষা আলাদা হওয়ার কারণে কিছুই বুঝতে পারি না।