বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ৪ চৈত্র ১৪৩১
The Daily Ittefaq

আকারে বড় কৃষ্ণগহ্বর বিজ্ঞানীদের নজর এড়িয়ে যায় কেন

আপডেট : ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১৪:০১

সুপার ম্যাসিভ বা বড় আকারের কৃষ্ণগহ্বরের (ব্ল্যাকহোল) সন্ধানে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করছেন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসাসহ বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা। তবে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির শক্তিশালী টেলিস্কোপের মাধ্যমে আকারে বড় কৃষ্ণগহ্বরের সন্ধান পেতে বারবার ব্যর্থ হচ্ছেন তারা। 

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, একেকটি বড় আকারের কৃষ্ণগহ্বরের ভর সূর্যের থেকে কোটি কোটি গুণ বেশি হতে পারে। এসব মহাজাগতিক দৈত্য অনেক গভীর ও গাঢ় গ্যাস ও ধূলিকণার ঘন মেঘের আড়ালে লুকিয়ে থাকলে বর্তমান প্রযুক্তির টেলিস্কোপের মাধ্যমে শনাক্ত করা বেশ কঠিন।

অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল সাময়িকীতে লুকিয়ে থাকা বিভিন্ন কৃষ্ণগহ্বর নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, প্রায় প্রতিটি বড় গ্যালাক্সির কেন্দ্রে একটি বড় আকারের কৃষ্ণগহ্বর থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে প্রায় ৩৫ শতাংশ বড় আকারের কৃষ্ণগহ্বরই ঘন গ্যাস ও ধুলার কারণে অস্পষ্ট। এসব কৃষ্ণগহ্বর এক্স-রের আলোকেও অবরুদ্ধ করে থাকে।

নতুন গবেষণার তথ্যমতে, মহাকাশে দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান কৃষ্ণগহ্বরের অনুপাত ৫০/৫০। এসব বড় আকারের কৃষ্ণগহ্বর সম্পূর্ণ অন্ধকার হয় কারণ, কোনো ধরনের আলো সেখানকার শক্তিশালী মহাকর্ষীয় টান এড়াতে পারে না। তবে আশপাশের তথ্য পর্যালোচনা করে কৃষ্ণগহ্বরের উপস্থিতি কিছুটা হলেও টের পাওয়া যায়। শুধু তা–ই নয়, বড় আকারের কৃষ্ণগহ্বরে কাছাকাছি গ্যাস সর্পিল আকার ধারণ করে। তখন তা গ্যালাক্সির সব তারায় ছাড়িয়ে যেতে পারে।

গ্যাসের উজ্জ্বলতা থাকা সত্ত্বেও কৃষ্ণগহ্বর ঘন গ্যাস ও ধূলিকণা দ্বারা বেষ্টিত থাকলে কোনো আভা দেখা যায় না। এই বেষ্টনীকে টরাস নামে ডাকা হয়। 

বিজ্ঞানীদের ভাষ্যে, আমরা কৃষ্ণগহ্বর দেখতে পাব কি না, তা নির্ভর করে এই টরাসের কৌণিক অবস্থানের ওপরে। যদি আমরা সরাসরি ডোনাট আকৃতির গর্তের দিকে তাকাই, তাহলে গ্যাসের উজ্জ্বল নির্গমন দৃশ্যমান হয়। যদি একটু ওপর বা নিচ থেকে দেখি, তাহলে টরাস বেশির ভাগ আলোকে আটকে ফেলে। তখন কৃষ্ণগহ্বরকে লুকানো মনে হয়। এই লুকানো কৃষ্ণগহ্বর সম্পর্কে জানতে নাসা ইনফ্রারেড অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল স্যাটেলাইট ব্যবহার করে থাকে। 

এ ছাড়া ২০১২ সাল থেকে নিউ স্টার নামের একটি টেলিস্কোপের মাধ্যমে লুকানো কৃষ্ণগহ্বরের খোঁজ করছে নাসা। দুটি টেলিস্কোপ থেকে তথ্য একত্র করার ফলে বিজ্ঞানীরা বর্তমানে লুকানো কৃষ্ণগহ্বর সম্পর্কে অনেক বেশি নির্ভুল তথ্য জানতে পারছেন।

সূত্র: আর্থ ডটকম

ইত্তেফাক/কেএইচ
 
unib