বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫, ৬ চৈত্র ১৪৩১
The Daily Ittefaq

খেলার মাঠে ভারতের রাজনীতি বন্ধ করবে কে

আপডেট : ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬:২৯

বাংলা বাগধারায় রয়েছে 'ঠেলার নাম বাবাজি'। কিন্তু এই বাগধারার সঙ্গে হয়তো ভারতের পরিচয় নেই। মাঝেমধ্যে যে পরিচয় হয় না, সেটিও হলফ করে বলা যাবে না। সম্প্রতি দেশটির ক্রিকেট বোর্ড গোঁ ধরেছিল, তারা চ্যাম্পিয়ন ট্রফির জার্সিতে আয়োজক দেশ পাকিস্তানের নাম লিখবে না। এর আগে পাকিস্তানে না খেলার গোঁ ধরে তারা সফল হয়েছে। এবার আর বিসিসিআইকে সফল হতে দেয়নি বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি। 

জার্সিতে আয়োজক দেশের নাম রাখতে হবে, এমনটি সাফ জানিয়ে দেওয়ার পরে ভারতের নড়াচড়ার আর তেমন সুযোগ ছিল না। বিসিসিআইয়ের নতুন সচিব দেবজিৎ সাইকিয়া তিন দিন আগেই জানিয়েছেন, আইসিসি যেমনটা বলছে, তেমনটা মেনেই জার্সিতে তারা আয়োজক দেশের নাম রাখবে।

তবে আইসিসির এমন অবস্থান নিতে দেখা যায়নি যখন আয়োজক দেশে গিয়ে খেলার বিষয়ে আপত্তি তুলেছিল ভারত। তখন যেন 'শুনেও না শোনার ভান ধরেছিল' আইসিসি। বিষয়টি ছিল জেগে জেগে ঘুমানোর মতোই। ভারতও সুযোগ বুঝে আরও শক্ত করে গোঁ ধরেছিল। ফল হিসেবে চ্যাম্পিয়ন ট্রফিতে এসেছে হাইব্রিড মডেল। ভারতের বিপক্ষে যাদেরই খেলতে হবে তারা সংযুক্ত আরব আমিরাতে গিয়ে খেলবে। আর বাকি খেলা হবে পাকিস্তানে। 

এতে প্রতিপক্ষ দলগুলোকে একবার পাকিস্তান আরেক বার আমিরাতে উড়ার মধ্যে থাকতে হবে। আইসিসি এই বিষয়ে শক্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। সংস্থাটির বর্তমান সভাপতি জয় শাহ। তিনি ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর ছেলে। তাতে ভারতের হাতেই যেন সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ। অবশ্য জয় শাহর আগে আইসিসির সভাপতি ছিলেন গ্রেগ বার্কলে, সে সময়েও আধিপত্য বিস্তার করেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। আইসিসি বেশিরভাগ সময়ে জেগে জেগে ঘুমিয়েছে।

খেলার মাঠে যখনই পাকিস্তানের নাম আসে, তখনই ভারতের বেঁকে বসার ঘটনা নতুন নয়। এতে অন্য দলগুলোকেও ভুগতে হয়। তবু সেটি সমাধানের কোনো উদ্যোগ নেই। এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি দিয়ে ভারত-পাকিস্তানের খেলার মাঠের দ্বন্দ্ব আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে, ২২ গজের খেলায় এই দুই দল কোনো বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট কিংবা ম্যাচ খেলতে ভারত ও পাকিস্তানে ভ্রমণ করবে না। অর্থাৎ ভারতে কোনো ম্যাচ হলে পাকিস্তান সেখানে যাবে না এবং পাকিস্তানে কোনো ম্যাচ হলে ভারত সেখানে যাবে না। তাদের খেলা হবে তৃতীয় কোনো দেশে। যেমনটা এবার হচ্ছে, চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আয়োজক পাকিস্তান হলেও ভারত খেলবে আরব আমিরাতে। 

এর আগে এশিয়া কাপের বেলায়ও এমনটি দেখা গিয়েছিল। তখন ভারতের ম্যাচগুলো হয়েছিল শ্রীলঙ্কায়। দিনদিন খেলার মাঠে ভারতের রাজনীতি বেড়েই চলেছে, ক্রিকেটে সেটি বন্ধ করতে পারে আইসিসি। জয় শাহর হাত দিয়েই সেটি বন্ধ হলে অবিস্মরণীয় একটি উদাহরণ হিসেবে মনে রাখবে ক্রিকেট বিশ্ব।

ইত্তেফাক/জেডএইচ
 
unib