শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫, ৮ চৈত্র ১৪৩১
The Daily Ittefaq

গবেষণার দুই যুগ পর পাহাড়ে আশা জাগাচ্ছে আমেরিকার ফল তিশা

আপডেট : ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৭

আমেরিকার সুস্বাদু ফল তিশা চাষ হচ্ছে খাগড়াছড়ির রামগড় পাহাড় অঞ্চল কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বাগানে। গবেষণার প্রায় ২৪ বছর পর ফলটি দেশে চাষের জন্য উন্মুক্ত করার ব্যাপারে আশার কথা শুনিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০০২ সালে পরীক্ষামূলকভাবে রামগড়ে তিশার ৫টি চারা গাছ রোপন করা হয়। ২০০৯ সালে ২/১টি গাছে কিছু কিছু ফুল ও ফল আসে। এরপর থেকে গাছগুলো নিবিড় পর্যক্ষেণে রেখে পরিচর্যা করা হয়। পরবর্তীতে সবগুলো গাছেই আশানুরূপ ফুল ও ফল ধরতে শুরু করে। তারপর গ্রাফটিংয়ের মাধ্যমে চারা উৎপাদন করে গবেষণা কেন্দ্রের বিভিন্ন ব্লকে রোপন করা হয়। বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় সফলতা আসার পর বারি তিশা-১ নামে এ ফলের জাত অবমুক্তির জন্য বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের ফল বিভাগের মাধ্যমে কৃষি মন্ত্রণালয়ের জাতীয় বীজ বোর্ডে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই দেশে ফলটি চাষের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, রামগড় কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের টাওয়ার টিলার বাগানের গাছে প্রচুর ফল ধরেছে। গাছের এক ঢালে ফুল, অন্য ঢালে ঝুলছে তিশা ফল। সারা বছরই ফুল ও ফল ধরে। ঐ ব্লকে আরও অনেকগুলো চারা রোপন করা হয়েছে। টাওয়ার টিলা ছাড়াও আনসার ক্যাম্প টিলা ও আবাসিক ব্লকেও তিশার বাগান রয়েছে।

রামগড়ে দীর্ঘদিন প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বপালনকারী কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মর্কতা (অব:) ড. জুলফিকার আলী ফিরোজ বলেন, ২০০২ সালে পরীক্ষা মূলকভাবে এখানে তিশার চারা গাছ রোপন করা হয়। গবেষণা ও পরিচর্যায় বাংলাদেশের মধ্যে রামগড়েই সর্বপ্রথম এ তিশা উৎপাদনে সফলতা আসে। পাহাড়ের আবহাওয়া ও মাটি তিশা ফল চাষের জন্য যে উপযোগী তা গবেষণায় নিশ্চিত হয়েছি।

কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে একমাত্র রামগড় কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বাগানেই সর্ব প্রথম এ ভিনদেশী ফল তিশা চাষে সফলতা আসে। ডিমের মত দেখতে বলে তিশা ফলকে এগ ফ্রুট বা ডিম ফলও বলা হয়। শুধু দেখতে নয়, পাকা ফল খেতে অনেকটা চিনি মেশানো সিদ্ধ ডিমের কুসুমের স্বাদের। সফলতার পর রামগড় গবেষণা কেন্দ্র হতে চারা সংগ্রহ করে খাগড়াছড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র, হর্টিকালচার সেন্টার ও রাঙ্গামাটির রাইখালি গবেষণা কেন্দ্রে রোপন করা হয়। সেখানেও ইতোমধ্যে সফলতা এসেছে। 

রামগড় কৃষি গবেষণা কেন্দ্র হতে সদ্য বদলি হওয়া ঊর্ধ্বতন  কর্মকর্তা মো. সেলিম জানান, বারি তিশা-১ নামে এ ফলের জাত অবমুক্তির জন্য বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের ফল বিভাগের মাধ্যমে কৃষি মন্ত্রণালয়ের জাতীয় বীজ বোর্ডে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বীজ বোর্ডের অনুমোদন পেলে বারি তিশা-১ নামে দেশে এ ফল চাষের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।

রামগড় কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. এমদাদুল হক বলেন, তিশা ফল সফেদা পরিবারের। ফলটি মূলত দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকায় উৎপাদন হয়। গবেষণায় সফলতা এসেছে। এবার অনুমোদন পেলে দেশেও চাষ শুরু হবে।

ইত্তেফাক/এপি
 
unib