সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫, ৯ চৈত্র ১৪৩১
The Daily Ittefaq

বিএসএমএমইউ গবেষণা

দেশে বছরে মোট মৃত্যুর ১২% ক্যান্সারের কারণে ঘটছে

আপডেট : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৬:০৮

ক্যান্সারের কারণে প্রতিবছর দেশে ১২ শতাংশ মৃত্যু ঘটছে। প্রতিবছর দেশে  প্রতি লাখে ৫৩ জন নতুন ক্যান্সার রোগী যুক্ত হচ্ছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের গবেষকদের জনসংখ্যাভিত্তিক ক্যানসার রেজিস্ট্রিতে এ তথ্য উঠে এসেছে। 

শনিবার (১ জানুয়ারি) সকালে বিএসএমএমইউর সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের অডিটরিয়ামে 'ক্যান্সার বার্ডেন ইন বাংলাদেশ: এভিডেন্স ফ্রম আ পপুলেশন-বেসড ক্যান্সার রেজিস্ট্রি' [বাংলাদেশে ক্যান্সারের বোঝা: জনসংখ্যাভিত্তিক ক্যান্সার রেজিস্ট্রি থেকে প্রমাণ] শীর্ষক অনুষ্ঠানে এ গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়।

২০২৩ সালের জুলাই মাসে কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর উপজেলায় গবেষণাটি পরিচালিত হয়। ওয়েব-ভিত্তিক জাতীয় ক্যান্সার রেজিস্ট্রি সফটওয়্যার ব্যবহার করে প্রতিটি পরিবারের সশরীরে সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে একই পরিবারের ফলো-আপ [পরবর্তী পর্যবেক্ষণ] শুরু হয় ।

গবেষণার প্রধান বিএসএমএমইউ-এর পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এমডি খালেকুজ্জামান ফলাফল উপস্থাপন করেন।

গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রতি লাখে ১০৬ জনের মধ্যে (পুরুষদের জন্য লাখে ১১৮ জন এবং নারীদের জন্য লাখে ৯৬ জন) ক্যান্সারের প্রাদুর্ভাব ছিল।

গবেষণায় ৪৬ হাজার ৬৩১টি পরিবারের ২ লাখ ১ হাজার ৬৬৮ জন অংশগ্রহণ করেছেন। তাদের মধ্যে ৪৮.৪ শতাংশ পুরুষ এবং ৫১.৬ শতাংশ নারী। গবেষণায় অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৮ ধরনের ক্যান্সার চিহ্নিত করা হয়েছে।

গবেষণায় দেখা যায়, ৯২.৫ শতাংশ ক্যান্সার রোগী ১৮ থেকে ৭৫ বছর বয়সী ছিলেন। ২.৪ শতাংশ রোগী ১৮ বছরের নিচে এবং ৫.১ শতাংশ রোগী ৭৫ বছরের ওপরে ছিলেন।

গবেষণা অনুযায়ী, শীর্ষ ৫টি ক্যান্সার ছিল– স্তন ক্যান্সার (১৬.৮ শতাংশ), ঠোঁট ও মুখগহ্বরের ক্যান্সার (৮.৪ শতাংশ), পাকস্থলীর ক্যান্সার (৭ শতাংশ), কণ্ঠনালীর ক্যান্সার (৭ শতাংশ) এবং জরায়ু ক্যান্সার (৫.১ শতাংশ)।

নারী ক্যান্সার রোগীদের মধ্যে ১৯ শতাংশ প্রজনন অঙ্গের ক্যান্সারে আক্রান্ত (জরায়ু ক্যান্সার ১১ শতাংশ, ডিম্বাশয় ৫ শতাংশ, এবং গর্ভাশয় ৩ শতাংশ)।

ক্যান্সার রোগীদের আরও কিছু রোগ ছিল– হাইপারটেনশন (১৭ শতাংশ), ডায়াবেটিস (১১ শতাংশ), হৃদরোগ (৬ শতাংশ), ক্রনিক কিডনি রোগ (৩ শতাংশ) এবং স্ট্রোক (২ শতাংশ)।

৭৫.৮ শতাংশ পুরুষ ক্যান্সার রোগী ছিলেন ধূমপায়ী। ৪৬ শতাংশ ক্যান্সার রোগী তামাক সেবন করেন না।

ক্যান্সার রোগীদের ৬০ শতাংশ একাধিক চিকিৎসা যেমন অস্ত্রোপচার, কেমোথেরাপি এবং রেডিওথেরাপি নিয়েছেন। ৭.৪ শতাংশ রোগী  রোগ নির্ণয়ের পর কোনো চিকিৎসা পাননি।

২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৫ সালের ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৩ হাজার ৪১১টি পরিবারের ৫৮ হাজার ৫৩৯ জন অংশগ্রহণকারীকে ফলো-আপ করা হয়েছে।

নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত শীর্ষ ৩টি ক্যান্সার ছিল– ফুসফুসের ক্যান্সার (১৬.১ শতাংশ), যকৃতের ক্যান্সার (১২.৯ শতাংশ) এবং কণ্ঠনালীর ক্যান্সার (১২.৯ শতাংশ)।

গবেষকরা বলেছেন, বর্তমান জনসংখ্যাভিত্তিক ক্যান্সার রেজিস্ট্রি টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা উচিত।

ইত্তেফাক/এনএ
unib