লক্ষ্মীপুরে সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও গুলি করেছে সন্ত্রাসীরা। এতে এক সাংবাদিক গুলিবিদ্ধসহ চার সাংবাদিক আহত হয়েছে। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সদর উপজেলার গনেশশ্যামপুর এলাকায় এই ঘটে।
আহত সাংবাদিকরা হচ্ছেন, দৈনিক খবরের কাগজের জেলা প্রতিনিধি মো. রফিকুল ইসলাম, চন্দ্রগঞ্জ থানা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও আমার সংবাদের প্রতিনিধি আলাউদ্দিন, প্রেসক্লাবের প্রচার সম্পাদক ও আলোকিত সকালের প্রতিনিধি ফয়সাল মাহমুদ, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ন্যাশনাল প্রেসের প্রতিনিধি আবদুল মালেক নীরব।
গুরুতর আহত সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম, মো. আলাউদ্দিন ও ফয়সাল মাহমুদকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে রফিকের অবস্থায় গুরুতর।
এঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাব, লক্ষ্মীপুর জেলা রিপোর্টাস ইউনিটি, লক্ষ্মীপুর সাংবাদিক ইউনিয়ন ও চন্দ্রগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ জেলায় কর্মরর্ত সাংবাদিকরা।
স্থানীয় সূত্রে হানা যায়, আহত সাংবাদিক ও পুলিশ জানায়, সদর উপজেলার গনেশ্যামপুর এলাকায় মারামারি ও জমি দখলের সংবাদ পেয়ে সংবাদ সংগ্রহের জন্য লক্ষ্মীপুর থেকে দুইটি মোটরসাইকেল যোগে ঘটনাস্থলের দিকে যাচ্ছিলেন সাংবাদিকরা। এ সময় দত্তপাড়া কলেজ থেকে কিছুদুর সামনে গেলে ৭ জনের একদল মুখোশধারী সন্ত্রাসী সাংবাদিকদের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে। এক পর্যায়ে সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম বিষয়টি জানার চেষ্টা করলে তাকে ধারালে অস্ত্র দিয়ে হামলা করলে মাথা ফেটে যায়। এরপর অন্য সাংবাদিকরা বাধা দিলে তাদের ওপর হামলা চালিয়ে কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। এতে ফয়সাল মাহমুদের গায়ে গুলি লাগে। এ সময় সাংবাদিকদের ক্যামেরা ও মোবাইলসহ নগদ টাকা পয়সা লুটে নেয় সন্ত্রাসীরা। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এঘটনার খবর শুনে সদর হাসপাতালে ছুটে যান সাংবাদিকরা। গত একমাস আগে সাংবাদিক রফিকুল ইসলামের বাড়িতে হামলা চালানো হয়।
এদিকে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান লক্ষ্মীপুর প্রেক্লাবের সভাপতি হোসাইন আহমদ হেলাল-সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম পাবেল, লক্ষ্মীপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি জহির উদ্দিন-সাধারণ সম্পাদক আব্বাছ হোসেন, লক্ষ্মীপুর জেলা রিপোর্টস ইউনিটির সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান সবুজ, জহিরুল ইসলাম শিবলু, সাধারণ সম্পাদক গাজী মমিনসহ জেলায় কর্মরত সাংবাদিক সমাজ। দ্রুত জড়িতদের গ্রেপ্তার করা না হলে কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারি দেন তারা।
সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. কমলাশীষ জানান, তিনজনকে আহত অবস্থায় সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজনের অবস্থায় গুরুতর। তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পাশাপাশি অন্য আহত ফয়সাল মাহমুদের পায়ে দুইটি আঘাত রয়েছে। সেটা গুলি কিনা বিষয়টি এক্স-রে করার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।
পুলিশ সুপার মো. আকতার হোসেন বলেন, সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনার খবর শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে। এই বিষয়ে কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা। ইতিমধ্যে পুলিশের কয়েকটি টিম কাজ করছে।