সোমবার, ২৪ মার্চ ২০২৫, ৯ চৈত্র ১৪৩১
The Daily Ittefaq

রাজশাহী কলেজে ‘তুচ্ছ ঘটনায়’ তুলকালাম

আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:০৬

রাজশাহী কলেজে ‘তুচ্ছ ঘটনায়’ তুলকালাম কান্ড ঘটেছে। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগে দুই ছাত্রীকে প্রায় দুই ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। দুপুর থেকে তাদের তাদের শাস্তির দাবিতে রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশ গিয়ে এক শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করেন।

ঘটনার সময় উপস্থিত শিক্ষার্থীরা জানান, পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর আরেকজনকে বাবার জিম্মায় ছেড়েদেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। এই দুই শিক্ষার্থী সম্পর্কে দুই বোন। এদের মধ্যে ছোট বোন রাজশাহী কলেজের দ্বাদশের ছাত্রী। বড় বোনকে পুলিশ উদ্ধারের সময় তার ওপর হামলার চেষ্টা হয়েছিল। তাকে রক্ষা করতে গিয়ে কয়েকজন শিক্ষক আঘাত পেয়েছেন বলে জানা গেছে।

রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ মো. যহুর আলী জানান, কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ঐ ছাত্রীর সঙ্গে একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রের বন্ধুত্ব আছে। সম্প্রতি একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের শিক্ষাসফর হয়। গাড়িতে ছেলেটি নাকি তার সহপাঠীদের সঙ্গে নাচানাচি করে। এতে ক্ষুব্ধ হয় দ্বাদশ শ্রেণির ঐ ছাত্রী। সে তার বড় বোন এবং বহিরাগত এক ছেলেকে নিয়ে একাদশ শ্রেণিতে যায় এবং শিক্ষার্থীদের অপমানজনক কথা বলে। এর ফলে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

অধ্যক্ষ আরও বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি কলেজ পুলিশ বক্সের পুলিশ সদস্যদের ওই দুই বোনকে আমার কার্যালয়ে আনতে বলি। তাদের আনা হলে বড় বোনটি আমার সঙ্গেই উচ্চবাচ্য করে। এতে কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং তাদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকে।’

তিনি বলেন, ‘একপর্যায়ে আমরা দুই বোনের মাকে ডেকে পাঠাই। তিনি এসে বলেন যে, তার বড় মেয়ের মানসিক সমস্যা আছে। এটা জানার পরই আমরা তাদের সঙ্গে মানবিক আচরণ শুরু করি। কয়েকবার শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করি যেন তারা তাদের নিরাপদে চলে যেতে দেয়। এভাবে চারবার বের করার চেষ্টা করেও আমরা প্রতিবার ব্যর্থ হয়েছি।’

‘পরে আমরা থানা-পুলিশকে ডাকি। পুলিশ এসে মা ও তার বড় মেয়েকে নিয়ে যায়। গাড়িতে তোলার সময় তাদের ওপর আক্রমণের চেষ্টা হয়। এ সময় ধাক্কাধাক্কিতে পড়ে আমাদের কয়েকজন শিক্ষক আঘাতপ্রাপ্ত হন। মা-মেয়েকে পুলিশের সঙ্গে পাঠানোর পর পরিস্থিতি যখন শান্ত হয়, তখন বাবাকে ডেকে আমরা আমাদের কলেজের শিক্ষার্থীকে হস্তান্তর করি। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক।’

অধ্যক্ষ বলেন, ‘বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি, এটাই স্বস্তির। আমাদের সিনিয়র শিক্ষার্থীরা এ ব্যাপারে খুব সহযোগিতা করেছে। আমরা মা ও বড় মেয়েটিকে পুলিশের কাছে তুলে দিলেও তাদের ব্যাপারে কোনো অভিযোগ করিনি। পুলিশ ছেড়ে দেবে।’

নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মেহেদী মাসুদ বলেন, ‘দুপুরের দিকে খবর পেয়ে আমরা মা-মেয়েকে থানায় নিয়ে আসি। আমরা যে মেয়েটাকে এনেছিলাম, তার নামে অনেক অভিযোগ। তাই তার একটা মুচলেকা নেওয়া হয়েছে। এরপর বিকেলে মা-মেয়েকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’

ইত্তেফাক/এএইচপি
 
unib