বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫, ১৩ চৈত্র ১৪৩১
The Daily Ittefaq

বহিষ্কৃত প্রভাষককে গ্রেপ্তারের দাবিতে থানা ঘেরাও

আপডেট : ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:৩৬

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জের উত্তর বাংলা কলেজের বহিষ্কৃত প্রভাষককে গ্রেফতারের দাবিতে থানা ঘেরাও করেছে ছাত্র-জনতা সহ স্থানীয় জনগণ। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রিয়ারি) সন্ধ্যায় ঐ প্রভাষকের গ্রেফতার দাবিতে কালীগঞ্জ থানায় ঘেরাও করেন ছাত্র-জনতা সহ স্থানীয় জনগণ।

এসময় প্রভাষক তামান্নার বিরুদ্ধে পুলিশের গাড়ি ভাংচুর ও ওসিকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার রাত আটটায় কালীগঞ্জ থানার সামনে এ ঘটনা ঘটে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এর আগে উত্তর বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের বহিষ্কৃত ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক তাবাসসুম তামান্না মুস্তাজির ঐ কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রউফ সরকার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত আনোয়ার টুম্পার পদত্যাগ দাবিতে মঙ্গলবার সকাল দশটায় তুষভান্ডার বাজারে মানববন্ধনের আয়োজন করে। বিষয়টি স্থানীয় জনগণ ও ছাত্রদের নজরে এলে তাদের তোপের মুখে তার মানববন্ধন পণ্ড হয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থলে কালিগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেলিম মালিক উপস্থিত হয়ে ছাত্র জনতাকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান এবং প্রভাষক তামান্নাকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানান।

এদিকে স্থানীয় ছাত্র জনতা বিষয়টি মেনে নিলেও কলেজ শিক্ষক তামান্না ওসি সেলিম মালিক কে উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান করেন। এসময় ওসি সেলিম মালিক ঘটনাস্থল ত্যাগ করে থানায় চলে আসেন। পরে প্রভাষক তামান্না ঐ স্থান ত্যাগ করে কালিগঞ্জ থানার মূল ফটকে বুড়িমারী লালমনিরহাট মহাসড়কের মাঝখানে সকাল ১০ পর থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত আমরণ অনশন শুরু করে। এতে মহাসড়কের দুপাশে শত শত গাড়ি আটকা পড়ে। পরে কোন দুর্ভোগের চিন্তা করে স্থানীয় ছাত্র জনতা ও এলাকাবাসী তামান্নার প্রতিবাদ করলে স্থানীয় ছাত্র জনতার ধাওয়ায় তামান্না থানায় আশ্রয় নেয়। ছাত্র জনতার পিছু পিছু এসে থানা ঘেরাও করে রাখে এবং প্রশাসনের কর্মকর্তার কাছে তার গ্রেফতারের দাবী জানান।রাত নয়টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত প্রভাষক তামান্না কালিগঞ্জ থানায় অবরুদ্ধ রয়েছেন। পাশাপাশি কালিগঞ্জ থানা চত্বরে হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ জনতা তার গ্রেফতারের দাবী জানাচ্ছেন।

বিক্ষুব্ধ জনতা জানান,  দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন মানুষকে হয়রানিমূলক মামলা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হেনস্থা করেন। কিন্তু তার ভয়ে কিছু বলা সম্ভব হয়নি। আমরা তার বিচার চাই।

হাতীবান্ধা থানার ওসি মাহমুদুন্নবী বলেন, জেলা সদর দপ্তরের মিটিং শেষেই হাতীবান্ধা ফিরছিলাম। হঠাৎ যানজট দেখে কালিগঞ্জ থানার সামনে গাড়ি নিয়ে গেলে গাড়ি ভাঙচুর ও আমার ওপর আক্রমণ চালায়। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আমি আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত আনোয়ার টুম্পা বলেন, কাকিনা উত্তর বাংলা কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রউফ সরকারের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছেন তা প্রক্রিয়া দিন রয়েছেন। এ অবস্থায় আমাদের কিছুই করণীয় নেই। তবে তিনি কয়েকদিন থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা করেছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে। তারাই সিদ্ধান্ত নিবেন বলেও জানান তিনি।

এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার ওসি সেলিম মালিক বলেন, কলেজ শিক্ষক তামান্না,স্থানীয় ছাত্র জনতার ধাওয়া খেয়ে কালিগঞ্জ থানায় আশ্রয় নিয়েছে। বিক্ষুব্ধ ছাত্র জনতা যেন তার কোনো ক্ষতি করতে না পারে এ জন্য পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ইত্তেফাক/এএইচপি
 
unib